ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জ্বালানি তেলের দাম কমানোর ইঙ্গিত অর্থমন্ত্রীর

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ৪ জানুয়ারি ২০১৬

জ্বালানি তেলের দাম কমানোর ইঙ্গিত অর্থমন্ত্রীর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর আভাস দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেছেন, এ নিয়ে একটি নীতিমালা করার পরই সরকার জ্বালানি তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করবে। তবে কবে নাগাদ দাম কমতে পারে- সে বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি অর্থমন্ত্রী। রবিবার মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। এমসিসিআই সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বৈঠকে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জবাবে অর্থমন্ত্রী এ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করার কথা জানান। পরবর্তীতে বৈঠকের পর সাংবাদিকরা এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বিষয়ে আমাদের সুস্পষ্ট কোন পলিসি নেই। অন্তত সেটা করার চেষ্টা আমরা করছি। সেটা হলে পরে আমরা আশা করছি, কিছু রিভিশন হবে। এজন্য কত সময় লাগবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সময় বলতে পারব না। কেননা এর সঙ্গে সর্বোচ্চ পর্যায় যুক্ত রয়েছে। তেলের দাম কত কমতে পারে আর কমালে কী প্রভাব পড়বে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা দাম নির্ধারণ করি দুটি পদ্ধতিতে। তাই নিজেরাই রেশনাইজ করতে চাইÑ আমরা কোথায় যাব। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমার পরও দেশের বাজারে না কমানোয় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন ইতোমধ্যে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পেরেছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমি একটা স্টেটমেন্ট নিয়েছি, তাতে কম-বেশি লস কাভার করেছে। আমাদের এটি দরকার আছে, তবে দাম কমানোর জন্য আরও সময় লাগবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) একটা ধারণা দিতে হবে। তাদের যেটা পাওয়া আমরা সেটি থেকে বরাদ্দ হিসেবে দেব। এদিকে, সর্বশেষ ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে ব্যারেলে ১২২ ডলারে ওঠার পর বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়। তখন পেট্রোল-অকটেন লিটার প্রতি ৫ টাকা এবং ডিজেল কেরোসিনের দাম ৭ টাকা করে বাড়ানো হয়েছিল। সেই হারে বর্তমানে প্রতিলিটার অকটেন ৯৯ টাকা, পেট্রোল ৯৬ টাকা, কেরোসিন ও ডিজেল ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এরপর গত দুই বছর ধরে জ্বালানি তেলের দাম কমতে কমতে ব্যারেল প্রতি ৪০ ডলারের নিচে নেমে এলেও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের পুরনো লোকসান কাটাতে দাম অপরিবর্তিত রাখে। গত ২৬ আগস্ট-বুধবার সিএনজির দাম প্রতিঘনফুটে পাঁচ টাকা বাড়িয়ে ৩৫ টাকা করার ঘোষণা দেয়া হয়। যা ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে। এর আগে সরকার ২০১৩ সালের ৩ জানুয়ারি জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করলে ওই বছরের ২০ জানুয়ারি দূরপাল্লার বাসের ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ১০ পয়সা বৃদ্ধি করে ১ টাকা ৪৫ পয়সা করা হয়। তবে সব রুটেই সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি নিতে থাকেন মালিকরা। ওই সময় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছিলেন, জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের পরিকল্পনা সরকারের আছে। কিন্তু এর পরপরই পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এক অনুষ্ঠানে তেলের দাম না কমানোর পক্ষে মত দেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথায় তেলের দাম না কমার বিষয়টি সে সময় আরও স্পষ্ট হয়ে যায়। গত সেপ্টেম্বরে ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, আপনারা তো এই দামে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। কারও তো অসুবিধা হওয়ার কথা না। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন এমসিসিআইর নবনির্বাচিত সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, সহ-সভাপতি আক্তার মতিন চৌধুরী, সদস্য এসকেএফ বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিমিন হোসেন, পিকার্ড বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম, আইসিই টেকনোলজির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবায়েত জামিল, ব্যবসায়ী নেতা ব্যারিস্টার নিহাদ কবির প্রমুখ।
×