ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তথ্য দিয়েছে এনআইএ

মিরপুর ও যাত্রাবাড়ীতে দুই জেএমবি ঘাঁটির সন্ধানে গোয়েন্দারা

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৩ জানুয়ারি ২০১৬

মিরপুর ও যাত্রাবাড়ীতে দুই জেএমবি ঘাঁটির সন্ধানে গোয়েন্দারা

শংকর কুমার দে ॥ রাজধানীর মিরপুর ও যাত্রাবাড়ীতে জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) দুটি ঘাঁটির সন্ধানে হন্যে হয়ে খোঁজ করছেন গোয়েন্দারা। ঢাকাকে এ দুটি জঙ্গী ঘাঁটির কথা জানিয়েছে ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ। এই দুই জঙ্গী ঘাঁটি থেকেই দেশে ও দেশের বাইরে জঙ্গী তৎপরতা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান খাগড়াগড় বোমা বিস্ফোরণ মামলার চার্জশীটেও রাজধানীর মিরপুর ও যাত্রাবাড়ীর জঙ্গী ঘাঁটির কথা উল্লেখ করেছে এনআইএ। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে এ খবর জানা গেছে। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, গত ডিসেম্বর মাসে গোয়েন্দা রিপোর্ট দেয় ভারতীয় জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ। ঈদ-ই-মিলাদুন্নবীর দুই দিন আগে রাজধানীর মিরপুরের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে জঙ্গী সংগঠন জেএমবির ঘাঁটির সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল- সেটাই ভারতীয় জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ’র দেয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী ঘাঁটি কিনা, তা নিশ্চিত হতে পারছেন না গোয়েন্দারা। রাজধানীর মিরপুরে যে অভিযান পরিচালনা করা হয় সেখান থেকে জেএমবির তিন সদস্যকে গ্রেফতার, বিশেষ হ্যান্ড গ্রেনেডসহ বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়, যেটি ছিল গ্রেনেড তৈরির কারখানা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। অভিযান পরিচালনাকারীদের ধারণা, ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ মিরপুরে যে জেএমবির ঘাঁটি থাকার কথা বলেছে- এটাই সম্ভবত সেটা। তবে যাত্রাবাড়ীর জেএমবির জঙ্গী ঘাঁটিটি কোথায় তা এখনও সন্ধান খুঁজে পাচ্ছেন না গোয়েন্দারা। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, পশ্চিমবঙ্গের খাগড়াগড়ে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ যে সম্পূরক চার্জশীট দাখিল করেছে তাতেও মিরপুর ও যাত্রাবাড়ীতে দুই আস্তানার কথা উল্লেখ করা ছাড়াও এ ধরনের আরও একাধিক জঙ্গী আস্তানা থাকার কথা উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে ঢাকা ও ঢাকার উপকণ্ঠ সাভার, নারায়ণগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ এবং গাজীপুরকেন্দ্রিক রয়েছে বলে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ’র রিপোর্টে উল্লেখ করা তথ্যানুযায়ী- দেশের সীমান্তবর্তী এলাকগুলোসহ বিভিন্নস্থানে অবস্থান, বিস্ফোরক মজুদ, হামলা ও নাশকতার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এরপর রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গীবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে মিরপুর, গাজীপুর ও চট্টগ্রামে জঙ্গী ঘাঁটির সন্ধান লাভ, জঙ্গী সদস্য গ্রেফতার ও অস্ত্র, গ্রেনেড-বোমা, বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করে। গোয়েন্দা সূত্র জানান, গত ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ’র দেয়া গোয়েন্দা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, জেএমবির জঙ্গীরা পশ্চিমবঙ্গে আর্থিকভাবে তেমন কোন সুবিধা করতে পারেনি বলে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত কয়েকজন জেএমবি নেতা বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করছে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও জেলার সীমান্ত এলাকায়। তারা সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করে ভারতের মোবাইল ফোনের সিমকার্ডও ব্যবহার করে। ভারতের জঙ্গীদের (সন্ত্রাসী) সঙ্গে কথা বলে। আবার ভারতের সীমান্ত থেকে তাদের দেশের জঙ্গীরা বাংলাদেশের মোবাইল ফোনের সিমকার্ড ব্যবহার করে কথা বলছে। ফলে প্রযুক্তিগত দিক থেকে তাদের শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।
×