ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

৫ জানুয়ারি ঘিরে আবার বিএনপি-আওয়ামী লীগ মুখোমুখি

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ৩ জানুয়ারি ২০১৬

৫ জানুয়ারি ঘিরে আবার বিএনপি-আওয়ামী লীগ মুখোমুখি

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ পৌর নির্বাচনের পর এবার রাজপথে মুখোমুখি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। আগামী ৫ জানুয়ারি সামনে রেখে উভয় দলই পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচী দিয়েছে। দুটি দলই ৫ জানুয়ারিতে ঐতিহাসিক সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার অনুমতি চেয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাছে আবেদন করেছে। তবে শনিবার রাত পর্যন্ত বিএনপি কিংবা আওয়ামী লীগ কাউকেই ওইদিন সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার অনুমতি দেয়নি ডিএমপি। শেষ পর্যন্ত অনুমতি না পেলে ৫ জানুয়ারি এ দু’দলই তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার প্রস্তুতি রেখেছে বলে জানা গেছে। ৫ জানুয়ারি সামনে রেখে ফের দু’দলের এমন পাল্টাপাল্টি কর্মসূচীকে ঘিরে জনমনে নতুন করে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করেছে। দশম জাতীয় নির্বাচনের দ্বিতীয় বছর পূর্তির দিন ৫ জানুয়ারিকে ‘গণতন্ত্র রক্ষার দিন’ হিসেবে পালনে নিয়েছে ব্যাপক কর্মসূচী। ওইদিন ঢাকাসহ সারাদেশের প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় বিজয় মিছিল, সমাবেশ, আলোচনা সভা এবং ঢাকার ঐতিহাসিক সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিশাল সমাবেশের কর্মসূচী হাতে নিয়েছে দলটি। ঢাকায় লাখো মানুষের সমাগম ঘটিয়ে বড় ধরœের শোডাউন করবে তারা। ইতোমধ্যেই ডিএমপির কাছে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে আবেদনও করেছেন দলটি। ঢাকা মহানগরীর ১৮টি পয়েন্টে কেন্দ্রীয় নেতারা ১৮টি টিমে বিভক্ত হয়ে দুপুর আড়াইটায় একযোগে আনন্দ মিছিল বের করবে এবং সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানসহ পুরো মহানগরীতেই সমাবেশ করবে। ঢাকাসহ সারাদেশের তৃণমূল নেতাদের ওইদিন বিশাল বিশাল শোডাউনের মাধ্যমে কর্মসূচী পালনের জন্য কেন্দ্র থেকে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে বলেও জানা গেছে। অন্যদিকে সম্প্রতি পৌর নির্বাচনে ব্যাপক ভরাডুবি হওয়া বিএনপি ৫ জানুয়ারি সামনে রেখে সারাদেশে মনোবল ভেঙ্গে যাওয়া নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করার কৌশল নিয়েছে। ৫ জানুয়ারির দিনটিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালনে বিএনপিও ঘোষণা করেছে পাল্টা কর্মসূচী। তারাও ৫ জানুয়ারি ঢাকার সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার জন্য অনুমতি চেয়ে ডিএমপিতে আবেদন করেছে। ঢাকার বাইরে ওইদিন প্রত্যেক জেলা সদরেও সমাবেশ করার কর্মসূচী ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ জনকণ্ঠকে জানান, ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ ঢাকাসহ সারাদেশে গণতন্ত্র রক্ষা দিবস হিসেবে পালন করবে। ওইদিন ঢাকাসহ সারাদেশের প্রত্যেক জেলা ও উপজেলা সদরে আনন্দ মিছিল, সমাবেশ এবং কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকার ঐতিহাসিক সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করা হবে। জনসভার অনুমতি চেয়ে গত ৩১ ডিসেম্বর আমরা ডিএমপিতে আবেদন করেছি। এখনও অনুমতি না পেলেও আমরা দৃঢ়ভাবে আশাবাদী, আমরা জনসভার অনুমতি পাব। অন্যদিকে বিএনপির যৌথসভা শেষে দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ৫ জানুয়ারিতে আমরা ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করব। ওইদিন রাজধানীর সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতির জন্য ডিএমপিতে আবেদন জানানো হয়েছে। আশা করছি, সরকার আমাদের ওইদিন শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচী পালন করতে দেবে। ঢাকায় সমাবেশ ছাড়াও সারাদেশের দলীয় জেলা কার্যালয়গুলোতে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, তারাও ৩১ ডিসেম্বর ডিএমপিতে অনুমতির জন্য আবেদন করেছে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ডিএমপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মারুফ হোসেন সরদার সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পক্ষ থেকে আবেদন আসার কথা স্বীকার করে জনকণ্ঠকে বলেন, দুটি আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই ও সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে এ বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে ডিএমপির আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপি কাউকেই ৫ জানুয়ারি সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি না দিতে পারে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। সেক্ষেত্রে উভয় দলকেই বিকল্প কোনস্থানে কর্মসূচী পালনের অনুমতি দেয়া হতে পারে। উল্লেখ্য, এই ৫ জানুয়ারি সামনে রেখেই বিদায়ী বছরের শুরুতেই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচীকে সামনে রেখে বিএনপি-জামায়াত জোট লাগাতার হরতাল-অবরোধের নামে ৯৩ দিন ধরে ভয়াল নাশকতা-সহিংসতা ও মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার মহোৎসবে মেতে উঠেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোন কিছু অর্জন ছাড়াই সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়ে বিএনপিকে ঘরে ফিরে যেতে হয়েছিল। এরপর বাকি ৯ মাসে দেশের কোথাও মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি বিএনপি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের অভিজ্ঞতাকে সামনে রেখে এবার ৫ জানুয়ারিকে সামনে রেখে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামছে আওয়ামী লীগ। শুধু প্রশাসনিক প্রস্তুতিই নয়, সাংগঠনিকভাবেও শক্ত অবস্থান নিয়ে ওইদিন মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। ঢাকার পাশাপাশি সারাদেশেই ওইদিন ব্যাপক শোডাউন করতে চায় তারা। পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াত জোটের সন্ত্রাসীরা গত বছরের মতো দেশের কোথাও ন্যূনতম নাশকতা-সন্ত্রাস কিংবা জ্বালাও-পোড়াও করতে না পারে সেজন্য দেশের প্রতিটি স্থানে ওইদিন সকাল থেকেই সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, গত শুক্রবার থেকেই সারাদেশের তৃণমূল নেতাদের কাছে ৫ জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগের গৃহীত কর্মসূচী এবং করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে দলের সকল সংসদ সদস্য, উপজেলা ও পৌর মেয়রদের সঙ্গে নিয়ে ব্যাপকভাবে ওইদিন সর্বত্র আনন্দ র‌্যালি, সমাবেশসহ গণতন্ত্র রক্ষা দিবস উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ওইদিন বিএনপি-জামায়াত জোট শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীর বদলে কোথাও সহিংসতা কিংবা নাশকতার চেষ্টা করলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তা মোকাবেলারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে এক অনুষ্ঠানে মাহবুব-উল আলম হানিফ বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, তথাকথিত কর্মসূচীর নামে আপনি যদি আবার ৫ জানুয়ারি নাশকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকা- করার স্বপ্ন দেখেন, তাহলে বাংলার জনগণ আগে যেভাবে আপনার স্বপ্নকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে, ভবিষ্যতেও আপনাকে সেভাবে সমুচিত শিক্ষা দিয়ে দেবে। কোন ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের সুযোগ বাংলার জনগণ আপনাকে দেবে না। এটা মাথায় রেখে কর্মসূচী দেবেন। তিনি বলেন, পৌর নির্বাচনের মাধ্যমে এটাও জনগণ আপনাকে (খালেদা) বুঝিয়ে দিয়েছে যে, তারা নৈরাজ্য, সন্ত্রাস চায় না। জনগণ শান্তি ও উন্নয়ন চায়। এদিকে আওয়ামী লীগের ধানম-ির কার্যালয় থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়, ৫ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ১৮টি টিমে বিভক্ত হয়ে মহানগরীর ১৮টি পয়েন্ট থেকে আনন্দ মিছিল বের করবে। এর মধ্যে ড. আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে মিরপুর পল্লবী, আহমদ হোসেনের নেতৃত্বে শ্যামপুর-জুরাইন, মতিয়া চৌধুরীর নেতৃত্বে ডেমরা-যাত্রাবাড়ী, ক্যাপ্টেন (অব) এবি তাজুল ইসলামের নেতৃত্বে বাড্ডা-রামপুরা, মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে ধানম-ির ৩২ নম্বর, আমির হোসেন আমুর নেতৃত্বে মিরপুর-১ গোলচত্বর, তোফায়েল আহমদের নেতৃত্বে লালবাগে, শেখ ফজলুল করিম সেলিমের নেতৃত্বে গুলশান, খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে সূত্রাপুর, কাজী জাফর উল্লাহ’র নেতৃত্বে তেজগাঁও, নূহ-উল-আলম লেনিনের নেতৃত্বে সবুজবাগ-খিলগাঁও, এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের নেতৃত্বে উত্তরায়, সতীশ চন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে কামরাঙ্গীরচর, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নেতৃত্বে মোহাম্মদপুর, ডাঃ দীপু মনির নেতৃত্বে কাফরুল, মেয়র সাঈদ খোকনের নেতৃত্বে গুলিস্তান বঙ্গবন্ধু স্কোয়ার, মেয়র আনিসুল হকের নেতৃত্বে বনানী-মহাখালী এবং ওবায়দুল কাদের ও মাহবুব-উল আলম হানিফের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ করবে। বিএনপির প্রস্তুতি ॥ এদিকে ৫ জানুয়ারির কর্মসূচীকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভা করেছে বিএনপি। বৈঠকে থাকা একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে ধারণা পাওয়া গেছে, ৫ জানুয়ারি সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি না পেলেও বিএনপি গতবছরের মতো আর সংঘাত ও সহিংসতার পথে যাবে না। কোন কারণে সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি না পেলে তারা নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি চাইবে। সেখানেও অনুমতি না দেয়া হলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট বা অন্য কোন বড় হল রুমে সমাবেশ করার চেষ্টা করবে। কিন্তু হল রুমেও সমাবেশ করার অনুমতি না পেলে দেশব্যাপী এক দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচী ঘোষণা দেয়া হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে কোন অবস্থাতেই এবার আর হরতাল বা অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচী দেবে না। জানা গেছে, সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি চাইতে শনিবার বিকেলে ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদারের নেতৃত্বে বিএনপির ৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কার্যালয়ে যান। সেখান থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মাসুদ আহমেদ তালুকদার অনুমতি পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা বলছে অনুমতি পাব। ডিএমপির একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, রাজধানীর সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসভার অনুমতির বিষয়ে যা করণীয় ঢাকা মহানগর পুলিশ তাই করছে। অনুমতি না মিললে বিএনপির করণীয় কী হবে সে বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন কিছু বলতে পারছি না। তবে আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী অব্যাহত রাখব। যৌথসভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে। আশা করছি এ কর্মসূচীতে সরকার কোন বাধা দেবে না। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের প্রহসনের নির্বাচনের দিনকে আমরা গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে চিহ্নিত করেছিলাম। এ দিবসটিকে স্মরণ করতে এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে পাওয়ার আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা ৫ জানুয়ারি ঢাকার সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওইদিন সারাদেশে জেলা কার্যালয়গুলোতেও আলোচনা সভা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে যৌথসভায়। এছাড়া সভায় ১৯ জানুয়ারি দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮০তম জন্মবার্ষিকী পালনের কর্মসূচীও চূড়ান্ত হয়েছে। জিয়ার জন্মদিনে কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে ১৯ জানুয়ারি ভোরে ঢাকাসহ সারাদেশের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় দৈনিকে দিবসটি উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ, সকাল ১০টায় শেরেবাংলা নগরে জিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বিকেলে আলোচনা সভা। মির্জা ফখরুল আরও জানান, আমরা প্রত্যাশা করব, সরকার ও যথাযথ কর্তৃপক্ষ সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশকে সফল করে দেশের গণতন্ত্র নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলতে দেয়ার জন্য অবদান রাখবেন। পৌর নির্বাচন পরবর্তী নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে ফখরুল বলেন, এমন দমন পীড়ন বেশ কয়েক বছর ধরে চলছে। সরকারকে এ থেকে বের হয়ে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। সরকারকে বলব, অবিলম্বে দেশ ও জনগণের স্বার্থে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। অন্যথায় যে ভয়াবহ আশঙ্কা করা হচ্ছে সেই উগ্রতা ও জঙ্গীবাদ দমন করা কঠিন হয়ে পড়বে। ফখরুল বলেন, দুই বছর আগে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে গণতন্ত্র হত্যা করা হয়েছে। জনগণের ভোট ছাড়াই নির্বাচন করা হয়েছে। প্রায় সবকটি রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ ছাড়াই যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল সে নির্বাচনের পরে একটা প্রহসনমূলক নাটকের মধ্য দিয়ে সরকার গঠন করা হয়েছিল। সেই সরকার এখনও আছে। গণতন্ত্রকে সেদিন হত্যা করা হয়েছিল। জনগণ ভোটের মাধ্যমে রায় দিতে পারেনি। তাই এটাকে আমরা গণতন্ত্র হত্যা দিবস বলে চিহ্নিত করেছিলাম। ওইদিনকে স্মরণ করতে এবং গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী ৫ জানুয়ারি সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চাই। আশা করি আমাদের সমাবেশ করার জন্য অনুমতি দিবে। সেই সঙ্গে মাইক ব্যবহার করার অনুমতিও দেবে। মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে যৌথসভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনু, রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুক, যুববিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক কাজী আসাদ, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার হারুনুর রশীদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন জীবন, আবদুস সালাম আজাদ, সহ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করীম শাহিন, সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ আবদুল মালেক, মহাসচিব শাহ নেসারুল হক, তাতী দলের সভাপতি হুমায়ুন ইসলাম খান, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম, মৎস্যজীবী দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মাহতাব প্রমুখ।
×