ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রিমান্ডে তিন ছাত্রের তথ্য

চবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীর পাশাপাশি উচ্চ শিক্ষা নিচ্ছে জঙ্গীরাও

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ৩ জানুয়ারি ২০১৬

চবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীর পাশাপাশি উচ্চ শিক্ষা নিচ্ছে জঙ্গীরাও

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীর পাশাপাশি জঙ্গী সদস্যরাও পড়ালেখা করছে। হিযবুত তাহরীরসহ বিভিন্ন জঙ্গী সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ব্যানার ফেস্টুন লাগানোসহ ঝটিকা মিছিলও করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চট্টগ্রামে গত ২৬ ডিসেম্বর গ্রেফতার হওয়া তিন জঙ্গীর কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে জঙ্গী তৎপরতার বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্মকর্তা। ৩ জঙ্গীকে ৫ দিনের রিমান্ড শেষে শনিবার চট্টগ্রাম আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালতের মহানগর হাকিম রহমত আলীর নির্দেশে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে, ৫ দিনের রিমান্ডে থাকাকালীন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের এই ৩ শিক্ষার্থী পড়ালেখার পাশাপাশি বিস্ফোরক ও জঙ্গীপনার নীলনক্সা তৈরিতে প্রচুর সময় ব্যয় করে বলে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ কর্মকর্তাদের জানিয়েছে। তবে তাদের কাছ থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বর্তমান জেএমবি প্রধান ফারদিনের বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। অপরদিকে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গত ২৮ ডিসেম্বর এ ৩ শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিল করলেও অভিযোগ রয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশে রয়েছে জঙ্গীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে জঙ্গীরা তৎপর রয়েছে ক্যাম্পাসেই। এ ব্যাপারে চবির একটি হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রভোস্ট বলেছেন, হলের ভেতরে শিক্ষার্থী হিসেবেই থাকছে অনেকেই। কিন্তু কারা কোন দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত তা শনাক্ত করা গেলেও রাষ্ট্রবিরোধী ও ধর্মবিরোধী কর্মকা- এমনকি মানুষ নিধনের কাজে জড়িতদের শনাক্ত করা খুবই কঠিন। কারণ, জঙ্গীপনা সম্পূর্ণ আন্ডারওয়ার্ল্ডের নির্দেশনায় হচ্ছে। ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি জঙ্গীপনায় ধাবিত হওয়ারা আমাদের চোখে ধরা পড়ছে না। জানা গেছে, গত ২৬ ডিসেম্বর দুপুরে নগরীর কাজির দেউড়ি এলাকা থেকে জঙ্গী সদস্য নাঈমুর রহমান প্রকাশ নয়নকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। নয়নের তথ্যের ভিত্তিতে বিকেলে উত্তর নালাপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় ফয়সল মাহমুদ প্রকাশ ফয়সলকে। এরপর একইদিন সন্ধ্যায় কসমো পলিটন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় ফারদিনের শিষ্য শওকত রাসেলকে। মূলত রাসেল ফারদিনের কাছ থেকেই বোমা তৈরির কৌশল শিখেছে। শুধু তাই নয়, ফারদিন সম্পর্কে বেশকিছু তথ্যও পুলিশকে দিয়েছে সে। রিমান্ডে থাকা ৩ জঙ্গী পদার্থ বিজ্ঞানের ছাত্র হওয়ায় বিস্ফোরক দ্রব্যের মিশ্রণ থেকে শুরু করে বোমা তৈরি পর্যন্ত সবকিছুই আয়ত্ব করে নিয়েছিল ফারদিনের কাছ থেকে। এরমধ্যে রাসেলই ছিল সবচেয়ে বেশি কৌঁসুলি। ফলে ফারদিন রাসেলকে সব সময় তার কাছাকাছি রাখত। একমাত্র রাসেলই ফারদিনের অবস্থান সম্পর্কে জ্ঞাত ছিল। তাও আবার কোন এক কারণ বশত ফারদিন ঢাকায় যাওয়ার সময় রাসেলকে তার বাসাটি চিনিয়ে দেয়। এতে পুলিশ ফারদিনের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়।
×