ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অলৌকিকভাবে বেঁচে গেলেন নির্যাতিত প্রফুল্ল সরকার

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ২ জানুয়ারি ২০১৬

অলৌকিকভাবে বেঁচে  গেলেন নির্যাতিত প্রফুল্ল সরকার

একাত্তরের পাকি বাহিনীর গণহত্যার দুঃসহ স্মৃতি আজও তাঁকে কাঁদায়। স্মৃতির পর্দায় আজও জ্বল জ্বল করে ভাসে তাঁর চোখের সামনে ঝাঁঝরা কওে দেয়া চেনা মুখগুলো। শহীদের বুকের রক্তে লাল মগড়া নদীর সেই স্রোতধারা প্রায়ই তাঁর চোখের জলের সঙ্গে একাকার হয়ে যায়। প্রসঙ্গ এলেই বুকফাটা আবেগে বাকরুদ্ধ হয়ে যান তিনি। পাকিস্তানী হানাদারদের নারকীয় হত্যাযজ্ঞ আর অত্যাচার-নির্যাতনের প্রত্যক্ষ সাক্ষী প্রফুল্ল সরকারের কথা। অলৌকিকভাবে সেদিন শত্রুর গুলি থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু চোখের সামনে মরতে দেখেছেন বহু নিরীহ বাঙালীকে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ সমর্থনের কারণে একাত্তরের এপ্রিল মাসে নেত্রকোনা শহরের নিখিল নাথ সড়ক থেকে নাম না জানা রাজাকাররা তাকে আটক করে থানায় সোপর্দ করে। থানা থেকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দিয়ে পাঠানো হয় জেলহাজতে। দীর্ঘদিন হাজতবাসের পর জামিন হয়। কিন্তু পরবর্তীতে হাজিরা দিতে গেলে আবারও আটক করা হয় তাকে। ২২ সেপ্টেম্বর তিনিসহ তার মতো একই ভাবে আটক আরও ২৬ জনকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের বেকসুর খালাস দেয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য! আদালত খালাস দিলেও পাকি হানাদারদের হাত থেকে মুক্তি মেলেনি কারও। আদালতের সামনে থেকে এক এক করে ২৬ জনকে আবারও বন্দী করে পাকি বাহিনী। দিনভর অত্যাচার-নির্যাতনের পর রাতে জিপে তুলে নিয়ে যায় নেত্রকোনা-পূর্বধলা সড়কের মাঝামাঝি মগড়া নদীর ওপর ত্রিমোহনী সেতুতে। এরপর রাতের আঁধারে সেতুর ওপর দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে তাদের। অন্ধকার রাতে গুলির সময় গুলিবিদ্ধ মানুষের মতো ভান করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে বেঁচে যান প্রফুল্ল সরকার। বাকি সবাই শহীদ হন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চিঠি পাঠান প্রফুল্ল সরকারকে। একই সঙ্গে মহকুমা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে পাঁচশ টাকার চেক পাঠান তার নামে। বঙ্গবন্ধু স্বাক্ষরিত ওই চিঠিটিই আজ তার সবচেয়ে বড় সান্ত¡না। Ñসঞ্জয় সরকার নেত্রকোনা থেকে
×