ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

তাপস মজুমদার

অন্তরালে

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫

অন্তরালে

ইমরানের হৃদয় ভেঙ্গে খান খান ইমরান খানের হৃদয় ভেঙ্গে নাকি খান খান হয়ে গেছে। চতুর পাঠক নিশ্চয়ই এক বাক্যেই বুঝে গেছেন যে, এই ইমরান খান পাকিস্তানের কিংবদন্তি ক্রিকেটার। ব্র্যান্ড নেম বলে কথা! এই সেই ইমরান খান, যিনি পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। বিরানব্বইয়ের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের শিরোপাধারী পাকিস্তান দলের অধিনায়ক। সর্বোপরি বিশ্বখ্যাত অলরাউন্ডার, তদুপরি জেমিমা খান এবং রেহাম খানের স্বামী। থুরি সাবেক খসম! এতদিনে সবাই বিলক্ষণ জেনে গেছেন যে, সম্প্রতি রেহামের সঙ্গেও বিচ্ছেদ হয়ে গেছে ইমরানের। এ সম্পর্কে পাকিস্তানের বিখ্যাত ডন পত্রিকার সংবাদটি একটু পড়ুন। দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গেও ইমরান খানের বিচ্ছেদ পাকিস্তানের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ও বর্তমানে রাজনীতিবিদ ইমরান খান ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী রেহাম খান পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে তালাকের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে বিবিসির সাবেক প্রেজেন্টার রেহামকে বিয়ে করেন পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান। ৬৩ বছরের ইমরান পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-ইনসাফের প্রধান। আর ৪২ বছরের রেহামের পেশা ছিল সাংবাদিকতা। এটি ছিল রেহামের দ্বিতীয় বিয়ে। ইমরানেরও দ্বিতীয় বিয়ে ছিল এটি। রেহামের আগের পক্ষে ছিল তিন সন্তান। ইমরান বিয়ে করেছিলেন ব্রিটিশ নাগরিক জেমিমা গোল্ডস্মিথকে। ১৯৯৫ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত সংসার করেছেন তারা। এরপর তালাক হয়। ওই সংসারে ২ ছেলে ইমরান ও জেমিমার। জেমিমা এখন রাসেল ব্র্যান্ডের সঙ্গে ডেট করছেন। রেহাম ১৫ বছর সংসার করেছেন ইজাজ রহমানের সঙ্গে। ২০০৫ সালে তাদের তালাক হয়। ইমরান-রেহামের ডিভোর্সের খবর তেহরিক-ই-ইনসাফের মুখপাত্র নাইম-উল হক একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান ও রেহাম খান পারস্পরিক সম্মতিতে তালাকের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই যন্ত্রণাদায়ক ঘটনার গুরুত্ব ও স্পর্শকাতরতা বিবেচনা করে মিডিয়াকে কোন অনুমানে ভর না করতে অনুরোধ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আর কিছু জানানো হবে না। গত সেপ্টেম্বর পাকিস্তান মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয় যে, ইমরান ও রেহামের মধ্যে সম্পর্কটা ভাল যাচ্ছে না। ঘটনার গুরুত্ব ও স্পর্শকাতরতা বিবেচনায় আর কিছু জানানো হবে না বলা হলেও মিডিয়া কি চুপ করে বসে থাকে? কেননা, খেলোয়াড়ি জীবনে দীর্ঘদিন অতিবাহিত করে ইমরান ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছিলেন বিশ্বব্যাপী একজন লেডি কিলার বা প্লেবয় হিসেবে। বলা হয়, ইমরান খান যে দেশে বা যেখানেই খেলতে যেতেন এক বা একাধিক মেয়ে বন্ধু জুটিয়ে নিতেন এবং খেলা চলাকালেও প্রতিদিন অনেক রাত করে ফিরতেন হোটেলে। এ ব্যাপারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আরেক বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটার ও অলরাউন্ডার স্যার গ্যারি সোবার্সের সঙ্গে তার অনেক মিল। স্যার গ্যারির তো দেশে বিদেশে অনেক সন্তানও আছে লিভটুগেদারের ফসল হিসেবে, যাদের অবশ্য তিনি স্বীকৃতিও দিয়েছেন পরে। ইমরান খানের অমন আছে কিনা, জানা না গেলেও অনেকটা হঠাৎ করেই ইহুদী কন্যা জেমিমাকে বিয়ে করে দেশ-বিদেশের অনেক সুন্দরী রমণীর তিনি যে হৃদয় ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছেন, সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। সুতরাং ইমরান খানের বিয়ে এবং বিচ্ছেদ নিয়েও নানা কিসসা-কাহিনী পল্লবিত হয়ে উঠবে এবং জন্ম নেবে নতুন নতুন কেচ্ছা কেলেঙ্কারি, তাতে আর বিচিত্র কি? সম্প্রতি এক আকস্মিক সফরে ইমরান খান গিয়েছিলেন ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে। সেখানে আনন্দবাজার পত্রিকার বিশিষ্ট সাংবাদিক গৌতম ভট্টাচার্য তার এক দীর্ঘ সাক্ষাতকার নেন। তাতেই উঠে আসে ইমরানের সাম্প্রতিক বিবাহ বিচ্ছেদজনিত সুখ-দুঃখ, ক্ষোভ-হতাশা, বেদনা, রাজনৈতিক তৎপরতা ও ব্যর্থতার চালচিত্র, সর্বোপরি ভবিষ্যত পরিকল্পনা। গৌতম ভট্টাচার্য শুরুই করেছেন এভাবে (১৬ ডিসেম্বর, ২০১৫) : শোনা গিয়েছিল বিয়ে ভাঙ্গার পর চরম মুষড়ে পড়েছেন। কিন্তু গত রবিবার দিল্লীর হোটেলে যখন কাঁচের দরজা খুলে ঢুকলেন, তখন তিনি সেই অরিজিনাল ‘কিং খান’। কাছ থেকে দেখা গেল তেষট্টি বছরের ইমরান খানের মস্তানি। ২০১৫ সালটা কেমন গেল- এ প্রশ্নের উত্তরে শুরুই করেছেন এভাবে- ‘জীবনের সবচেয়ে খারাপ বছরগুলোর মধ্যে একটা।... খুব খারাপগুলোর ওপরের দিকে। এই যে সৎ প্রগতিশীল মানুষ হিসেবে ইমরানের ভাবমূর্তি, সেটাই তো আক্রান্ত হয়ে গেছে রেহাম খানের এপিসোডে। বিবাহবিচ্ছিন্ন দ্বিতীয় স্ত্রী অনেক কথা বলেছেন আপনার সম্পর্কে। কী বলব আমি! এ ব্যাপারটা এত দুঃখজনক। দিল্লীর জনপ্রিয় ইংরেজী চ্যানেলের মুখ্য সম্পাদক বলছিলেন, রেহামের কোন লোক নাকি ওদের ফোন করে বলেছে ইংল্যান্ডে প্রতিনিধি পাঠাতে। রেহাম আপনার সম্পর্কে বিস্ফোরক ইন্টারভিউ দেবেন। তবে মোটা টাকা পেমেন্ট করতে হবে। ইন্ডিয়ান চ্যানেলকে বলেছে? হ্যাঁ... ইট ইজ ভেরি স্যাড। আমি এটা নিয়ে কথাই বলতে চাই না। এত যন্ত্রণাকাতর আমার কাছে এই বিচ্ছেদ অভিজ্ঞতা। ভেরি পেইনফুল। কিছু মনে করবেন না। ধারণা ছিল, আপনাকে বিধ্বস্ত দেখব। কিন্তু দেখার পর মনে হয় সব কিছুই নর্মাল রয়েছে। বাইরে থেকে হয়ত মনে হচ্ছে। ডিভোর্স এমন গভীর যন্ত্রণা যে, ভেতরটা কেটে এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেয়। আমি খুবই কাবু হয়ে পড়েছিলাম। আই ওয়াজ রিয়েলি ডিপ্রেসড। তারপর আত্মরক্ষা করলেন কী করে? আমি আসলে এমন একজন মানুষ যার জীবন প্রতিনিয়ত ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে চলেছে। কখনও সে ওপরে গেছে, কখনও নিচে পড়েছে। আমি জানি জীবনে এই রকম দুর্যোগের মধ্যে কী করে ফাইটব্যাক করতে হয়। সেভাবেই সামলে ওঠার চেষ্টা করেছি। এরপর সাক্ষাতকারের এই পর্বে রয়েছে কিভাবে লড়াই করতে হয় এমন দুর্যোগের সঙ্গে সে সম্পর্কে ইমরান খানের পেশোয়ারি দাওয়াই। সে ভিন্ন প্রসঙ্গ। অতঃপর পাঠক চলুন জেনে নেই রেহামের অভিযোগ ইমরান সম্পর্কে। ভারতীয় টিভি চ্যানেলে অর্থের বিনিময়ে টকশোতে দেয়া ইমরান সম্পর্কে রেহাম কী বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তা এই মুহূর্তে জানা না গেলেও আপাতত কিছু তথ্য জানা গেছে বিভিন্ন সূত্রে। জি নিউজের বরাত দিয়ে জানা যায়, ইমরান ও তার পরিবার রেহামকে প্রায়ই রান্না করতে বাধ্য করতেন। এমনকি তারা চাইতেন, রেহাম সব সময় বাড়িতে থাকুক এবং ঘর-সংসার সামলাক। এমন মন্তব্য স্বয়ং রেহামের। বিবিসির একজন সাবেক সাংবাদিক স্বামীর ঘরে এমন গৃহবন্দিত্ব মেনে নেবেন কেন? সর্বোপরি অসাধারণ রূপবতী, আধুনিক, স্মার্ট, ফ্যাশনসচেতন, ধোপদুরস্ত ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মহিলা রেহাম। ভারতীয় টিভির সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে ইমরান অবশ্য যথারীতি এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি কখনই রেহামকে সারাক্ষণ বাড়িতে থাকতে অথবা রুটি বানাতে বলেননি। তবে ইমরানের এই অস্বীকার বাস্তবে ধোপে টেকে না। কেননা ইমরান সম্পর্কে একই রকম অভিযোগ উত্থাপন করেছিলেন তার সাবেক স্ত্রী ও দুই সন্তানের মা জেমিমা খান বিবাহ বিচ্ছেদের পর। ইমরান একজন পেশাদার আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ক্রিকেটার, ধোপদুরস্ত, সর্বোপরি অক্সফোর্ডের শিক্ষার্থী হলে হবে কি, মূলত তিনি মন মানসিকতায় একজন ফিউডাল বা সামন্তবাদী। তার রাজনীতিও প্রগতিশীল তথা আধুনিক নয় বরং রক্ষণশীল তথা প্রতিক্রিয়াশীল। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত জেনারেল নিয়াজী ইমরানের চাচা এবং তিনিও একই ঘরানার অনুসারী। বাংলাদেশ সম্পর্কে ইমরানের ধারণা খুবই নেতিবাচক। একপর্যায়ে রেহামের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, ইমরানের রাজনৈতিক ব্যাপারে তিনি নাকি নাক গলাতে শুরু করেছিলেন। আর এরপরই রেহাম তার স্বামী ও পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। সত্য-মিথ্যা যা-ই হোক না কেন, ইমরানের চরিত্র যে ফুলের মতো পবিত্র নয়, ধোয়া তুলসী পাতা তো নয়ই, এ কথা সর্বজনবিদিত। সুতরাং বিবাহবিচ্ছেদ ছিল অনিবার্য ও অবশ্যম্ভাবী। নিজের খেলোয়াড়ি জীবনে সফল হলেও ইমরান খান তার বিশ বছরের রাজনৈতিক জীবনে যেমন ব্যর্থ, ততোধিক ব্যর্থ দাম্পত্য জীবনে। যে কারণে জেমিমা তার নাম থেকে ‘খান’ পদবি ঘৃণাভরে ছেঁটে ফেলে দিয়েছেন বিচ্ছেদের পরই। এখন দিলেন রেহাম। এখন দেখা যাক, ইমরান খান তৃতীয়বারের মতো কারও পাণিগ্রহণ করেন কিনা! এ সম্পর্কিত একটি গুজব ইতোমধ্যে ভেসে বেড়াচ্ছে বাতাসে। পিছু হটলেন কিং খান এবার আরেক কিং খানের গল্প। তিনি বলিউডের বাদশা বলে খ্যাত শাহরুখ খান। মুম্বাইয়ে অবশ্য গত কয়েক বছর ধরে দাপটে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তিন খানÑ শাহরুখ খান, সালমান খান ও আমির খান। বাকি দুই খানের কথা বারান্তরে বলব। আজ বলি কিং খানের কথা। অর্থের প্রবল প্রলোভনে অবশেষে একরকম আত্মসমর্পণ করলেন শাহরুখ খান। নির্জলা বিসর্জন দিলেন শিল্পীর সাহস ও স্বাধীনতা। সাধে কি আর বিজ্ঞজনেরা বলেন, এই পৃথিবীতে অর্থই সকল অনর্থের মূল! ফোর্বস ম্যাগাজিনে প্রদর্শিত ২০১৫ সালের তালিকায় দেখা যাচ্ছে আয়ের শীর্ষে রয়েছেন শাহরুখ খান। অমিতাভ বচ্চন ও সালমান খানকে টপকে গিয়ে তিনি ফিরে পেলেন শীর্ষ স্থানটি। গত বছর তিনি ছিলেন তিন নম্বরে। এবার শাহরুখের বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে ২৫৭ দশমিক ৫ কোটি টাকা। তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ২৮১৯ কোটি টাকা। যা নাকি তালিকাভুক্ত বাকি ৯৯ জনের মোট আয়ের ৯ শতাংশ। তালিকায় আমির খান আছেন ৫ নম্বরে। যা হোক, প্রশ্ন হলো, শাহরুখ নিজের বক্তব্য থেকে, যা তিনি ২ নবেম্বর নিজের ৫০তম জন্মদিনে বলেছিলেন, পিছু হটলেন কেন? এর সহজ সমাধান ও উত্তর হলো, আয়ের অবস্থানে নিজের শীর্ষ সিংহাসনটি ধরে রাখতে। সবাই ইতোমধ্যে জেনে গেছেন যে, নতুন ছবি ‘দিলওয়ালে’ মুক্তি পেয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ পাঁচ বছর পর বড় পর্দায় হাজির হয়েছেন শাহরুখ-কাজল জুটি। রোহিত শেঠির তুলকালাম পরিচালনায় ধুন্ধুমার মুম্বাই মশালার কা-কারখানা নিশ্চয়ই দেখা যাবে ছবিটিতে। শাহরুখের যাবতীয় লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য একটাই, যে কোন মূল্যে যে কোন উপায়ে ছবিটিকে সুপার-ডুপার হিট করানো। অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে দেয়া। এ অবস্থায় কাউকে বা কোন মহলকে চটানো চলবে না। সরকার বা সরকারী দলকে তো নয়ই। অবশ্য ইতোমধ্যে খবর মিলেছে বিজেপি যুব মোর্চার বিক্ষোভের মুখে মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরে সমদরিয়া মালেতে প্রদর্শনী বন্ধ হয়ে গেছে দিলওয়ালের। এর আগে ইলাহাবাদেও বন্ধ করে দেয়া হয় ছবিটির প্রদর্শনী। এতে অবশ্য বেজায় চটেছেন শাহরুখপ্রেমীরা। সুতরাং শাহরুখ আদৌ কোন ঝুঁকি নিতে চান না। এবার চলুন দেখে নেই নিজের ৫০তম জন্মদিনে মিডিয়ার কাছে ঠিক কী বলেছিলেন শাহরুখ খান? সোমবার ২ নবেম্বর এনডিটিভিতে ভারতের প্রভাবশালী সাংবাদিক বরখা দত্তের সঙ্গে সাক্ষাতকারে স্বভাবতই ফিল্মের খবরাখবর, জীবনযাপন, ক্যারিয়ার ইত্যাদি বাৎচিতের ফাঁকে ফাঁকে মুখ খুলেছিলেন শাহরুখ খান। গো-মাংস খাওয়ার ইস্যুতে যতসামান্য দাঙ্গা-হাঙ্গামার প্রতিবাদে ভারতজুড়ে তীব্র ক্ষোভ, সমাজ বিভক্তি সর্বোপরি অস্থিতিশীলতা ও ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে মুখ খুলেছিলেন শাহরুখ খান। তিনি বলেছিলেন, এভাবে যদি আমাদের দেশে দিনের পর দিন ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা নিয়ে কথা বলতে হয়, তাহলে এটা আমাদের অন্ধকার যুগে ঠেলে নিয়ে যাবে। এই বিষয়টি আমাকে একেবারে স্তম্ভিত করে দিয়েছে।... এসব ঘটনা খুবই হতাশাজনক। এসবের যদি পরিবর্তন না হয়, তাহলে আমাদের জন্য বড় দুর্ভাগ্যই অপেক্ষা করছে। এ প্রসঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষ মানসিকতা নিয়ে দেশকে ভালবাসার কথাই বলেন কিং খান। ব্যস, আর যায় কোথায়? আগুনে যেন ঘৃতাহুতি হলো। বিজেপির কতিপয় নেতা তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলেন। শাহরুখের মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রথম মুখ খোলেন বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গী। তিনি বলেন, শাহরুখের শরীর ভারতে পড়ে থাকলেও মন পড়ে থাকে পাকিস্তানে। আরও একহাত নিলেন উত্তর প্রদেশের গোরখপুরের লোকসভা সাংসদ যোগী আদিত্যনাথ। তিনি বলেন, শাহরুখের সঙ্গে মুম্বাই হামলার খলনায়ক হাফিজ সাঈদের কোন ফারাক নেই। তার মতো শাহরুখও দেশদ্রোহী? তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তিনিও সরকার বিরোধিতায় নেমেছেন। তিনি আরও বলেন, শাহরুখের মনে রাখা দরকার দেশের সংখ্যাগুরুরা তার সিনেমা না দেখলে তাকে দাঁড়াতে হতো রাস্তায়। শাহরুখ বুঝি শেষ পর্যন্ত এই কথাটি মনে রেখেছেন! ১১ ডিসেম্বর এবিপিনিউজের এক অনুষ্ঠানে তিনি বেশ পরিষ্কারভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা নিয়ে কথা বলতে রীতিমতো অস্বস্তি বোধ করছেন তিনি। তোতলানো মুখে যা বললেন, তার সারসংক্ষেপ হলো, ভারতে এখন কোন অসহিষ্ণুতা নেই ভাই। এ দেশে অসহিষ্ণুতা আছে, এমন কথা আমি বলছিই না।... সব ভাল চলছে ভাই। সব ভাল, ঈশ্বর ভারতবাসীর মঙ্গল করুন। ভারতবাসী দীর্ঘজীবী হোক, কোথাও কোন সমস্যা নেই। শাবাশ শাহরুখ খান। কিং খান দীর্ঘজীবী হোন। যারা মাই নেম ইজ খান ছবিটি দেখেছেন, তারা বিলক্ষণ জানেন, সেখানে শাহরুখের চরিত্রটি অটিস্টিক। আর অটিস্টিকরা আদৌ প্রতিবন্ধী নয়, বরং খুবই বুদ্ধিমান।
×