ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী ওঠালেই লাল সঙ্কেত, ইঞ্জিন বন্ধ

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৫

লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী ওঠালেই লাল সঙ্কেত, ইঞ্জিন বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন প্রতিরোধে ‘শিপ সেভিং ডিভাইস’ তথা জাহাজ রক্ষাকারী প্রযুক্তি তৈরি করেছে রংপুর পলিটেকনিকের ইলেক্ট্রো মেডিক্যাল বিভাগের ছাত্র সুলতানুর রহমান। নৌযানে নতুন প্রযুক্তি সংযোজনে লোড স্বাভাবিক হলে গ্রিন সিগন্যাল দিয়ে ইঞ্জিন চালু করতে দেবে। ডিভাইসের মাধ্যমে জাহাজের লোডের পরিমাণও প্রদর্শিত হবে। রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ভবনে ‘স্কিলস কম্পিটিশন-২০১৫’র চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় সুলতানুর রহমান শনিবার ডিভাইটি উপস্থাপন করেন। সুলতান ডিভাইসটির নাম দিয়েছেন পিনাক-৬। গেল বছর লঞ্চটি ডুবে অনেকে মারা যান। মন্ত্রী রাজধানীতে ‘স্কিলস কম্পিটিশন ২০১৫’-এর চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি জীবনের বিভিন্ন কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সমস্যা সমাধানে উদ্ভাবনমূলক প্রকল্প নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য দেশের প্রযুক্তিবিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। দেশের নৌ দুর্ঘটনাগুলোর ৩৮ শতাংশই অতিরিক্ত পরিবহেনর কারণে ঘটে উল্লেখ করে সুলতানুর জানান, লঞ্চ বা জাহাজ কর্তৃপক্ষ ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত বহন করার চেষ্টা করলে ডিভাইসটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে রেড সিগন্যাল দেবে ও ইঞ্জিন চালু করতে দেবে না। ‘শিপ সেভিং ডিভাইস’ তথা জাহাজ রক্ষাকারী ডিভাইসটি নৌযানে যুক্ত করলে, লোড স্বাভাবিক হলে গ্রিন সিগন্যাল দিয়ে ইঞ্জিন চালু করতে দেবে। ডিভাইসের মাধ্যমে জাহাজের লোডের পরিমাণও প্রদর্শিত হবে। ডিভাইসটির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, যদি কেউ ডিভাইসটি ডি-এ্যাক্টিভ করেন বা করার চেষ্টা করেন, তবে সঙ্গে সঙ্গে তার অজান্তে জাহাজ পরিচালনা কর্তৃপক্ষের কাছে মোবাইলের মাধ্যমে একটি এসএমএস যাবে। এতে কর্তৃপক্ষ জানতে পারবে, ডিভাইসটি ডি-এ্যাক্টিভ করা হচ্ছে বা হয়েছে। সারাদেশের সরকারী-বেসরকারী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসমূহের শিক্ষার্থীদের সেরা ৫০টি উদ্ভাবনমূলক প্রযুক্তি প্রদর্শনীর উদ্বোধন উপলক্ষে কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন শিক্ষা সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন, কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অশোক কুমার বিশ্বাস এবং স্কিলস এ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্টের (স্টেপ) প্রকল্প পরিচালক মোঃ এমরান। নাহিদ বলেন, অতিরিক্ত জনসংখ্যার কারণে আমাদের সমস্যা উন্নত দেশসমূহের চেয়ে আলাদা। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তির দ্রুত প্রসারের ফলে নতুন নতুন সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এসব সমস্যার সমাধানে দেশীয় প্রযুক্তিবিদদের কারিগরি শিক্ষাকে দেশের উন্নতির মূল চাবিকাঠি হিসেবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, অতীতে স্বাধীনতাবিরোধী সরকার কখনও চায়নি দেশ স্বনির্ভর হোক। তাই তারা কারিগরি শিক্ষাকে অবহেলা করেছে। তিনি বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার মাধ্যমে এ স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি দেশের ইতিহাসকে পেছনের দিকে ঘুরিয়ে দিতে ষড়যন্ত্র করেছিল। তারাই আজ মহান মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। স্বাধীনতাবিরোধী এ অপশক্তিকে প্রতিহত করার জন্য জনাব নাহিদ সকলের প্রতি আহ্বান জানান। এর আগে মন্ত্রী প্রযুক্তি প্রদর্শনীর বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন। কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে আজ সকালে শাহবাগ থেকে শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে এক বর্র্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।
×