ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সেমিতে খেলার স্বপ্নের সমাধি বাংলাদেশের!

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৫

সেমিতে খেলার স্বপ্নের সমাধি বাংলাদেশের!

রুমেল খান, ত্রিবান্দ্রাম, কেরল (ভারত) থেকে ॥ শনিবার কেরলের ত্রিবান্দ্রাম আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মালদ্বীপের কাছে ৩-১ গোলে হেরে সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে যাবার সুনীল স্বপ্নের সলিল সমাধি হলো বাংলাদেশের। আর সেমিতে খেলা নিশ্চিত করলো ২০০৮ সাফের চ্যাম্পিয়ন মালদ্বীপ। এ নিয়ে টানা তিন আসরেই (২০১১, ২০১৩, ২০১৫) গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিল বাংলাদেশ। ২০১১ সাফ ফুটবলেও মালদ্বীপের কাছে একই ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। এবারও ঘটলো সেই একই ফলের পুনরাবৃত্তি। বাংলাদেশের তৃতীয় ও গ্রুপের শেষ ম্যাচ ভুটানের বিরুদ্ধে আগামী সোমবার। আর মালদ্বীপের তৃতীয় ও শেষ গ্রুপ ম্যাচ বর্তমান শিরোপাধারী আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে একই দিনে। বাংলাদেশের ছন্নœছাড়া-অগোছালো-পরিকল্পনাহীন ফুটবল হতাশ করেছে বাংলাদেশীদের। ফিটনেসে, বল নিয়ন্ত্রণে, আক্রমণে, সুযোগকে কাজে লাগানোয়, কৌশলে ... সবকিছুতেই বাংলাদেশের চেয়ে যোজন ব্যবধানে এগিয়ে ছিল মালদ্বীপ। খেলার শুরুতে বাংলাদেশ দল মাঠে নামে ৪-৫-১ ফর্মেশনে। উদ্দেশ্য- ডিফেন্স ঠিক রেখে আক্রমণে যাওয়া। কিন্তু সেটাতে আসেনি কোন সফলতা। দলনায়ক মামুনুলের খেলা ছিল হতাশাজনক এবং ভুলে ভরা। ক্রমাগত ভুল পাস দেয়া, কর্নার ও ফ্রি কিকের বলগুলোর বেশিরভাগই তুলতে না পারা ... দৃষ্টিকটুই লেগেছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে দেশীয় ফুটবলারদের মধ্যে সর্বাধিক পারিশ্রমিকধারী এই ফুটবলারের খেলা। হেড টু হেডে ১১ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ১৬০ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী মালদ্বীপ এ নিয়ে তৃতীয়বার হারালো ১৮২ র‌্যাঙ্কিংধারী বাংলাদেশকে। বাংলাদেশও অবশ্য সমসংখ্যকবার হারিয়েছে মালদ্বীপকে। বাকি ৫ ম্যাচে ড্র হয়। ৪১ মিনিটে পেনাল্টি বক্সে মালদ্বীপের ইমাজের শট ফেরাতে গিয়ে হ্যান্ডবল করে ফেলেন লেফট ব্যাক ওয়ালী ফয়সাল। এ জন্য ভিয়েতনামের রেফারি ওয়ালীকে হলুদ কার্ড দেখানোর পাশাপাশি পেনাল্টিরও নির্দেশ দেন। অধিনায়ক-ফরোয়ার্ড আলী আশফাকের বাঁ পায়ের সামান্য উঁচু শট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে নিজের হাতে লাগিয়েও শেষরক্ষা করতে পারেননি গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেল। বল জড়ায় জালে (১-০)। বর্ষীয়ান-অভিজ্ঞ ফুটবলার আশফাকের এটা ব্যক্তিগত ২০তম সাফ গোল। ৮৭ মিনিটে মামুনুলের কর্নারে মালদ্বীপের এক ফুটবলার হেড করে ফেরালে বক্সের বাইরে পেয়ে যান সোহেল রানা। এই মিডফিল্ডারের দ্রুত ভলি মালদ্বীপের এক ফুটবলারের মাথা ছুঁয়ে জালে জড়ায় (১-১)। ৮৯ মিনিটে সতীর্থের বাড়ানো বলে নিখুঁত ব্যাক ফ্লিকে বাংলাদেশ গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন বদলি ফরোয়ার্ড নিয়াজ হাসান (২-১)। ইনজুরি টাইমে (৯০+৩) আর এক গোল করে গ্রুপের টানা দ্বিতীয় জয় ও সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে নেয় ২০০৮ সালের সাফ ফুটবলের চ্যাম্পিয়ন মালদ্বীপ (প্রথম ম্যাচে তারা ৩-১ গোলে হারিয়েছিল ভুটানকে, আর বাংলাদেশ হেরেছিল ০-৪ গোলে আফগানিস্তানের কাছে)। রায়হানের ভুল পাস থেকে বল পেয়ে কাউন্টার এ্যাটাক থেকে বদলি ফরোয়ার্ড নাশিদ আহমেদ গোল করে বাংলাদেশের পরাজয়ের কফিনে ঠুকে দেন শেষ পেরেকটি (৩-১)। এখন দেখার বিষয় শেষ ম্যাচে ভুটানকে হারিয়ে সান্ত¡নার ‘সবেধন নীলমণি’ জয় কুড়িয়ে দেশে ফিরতে পারে কি না মারুফুল হকের শিষ্যরা।
×