ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণ করে শুল্কায়ন

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৫

দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণ করে শুল্কায়ন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশীয় শিল্পের স্বার্থ রক্ষা করে শুল্ক নির্ধারণ করা হবে। এ লক্ষ্যে তিনটি বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে সরকার। এগুলো হলো- এন্টি-ডাম্পিং, কাউন্টারভেইলিং এবং সেফগার্ড মেজার্স। বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে দেশীয় শিল্পের স্বার্থরক্ষার্থে বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন আয়োজিত ‘এন্টি-ডাম্পিং, কাউন্টারভেইলিং এবং সেফগার্ড মেজার্স’ বিষয়ক দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় এই তিন বিষয়ে আলোচনা করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, দেশীয় শিল্পের স্বার্থ ক্ষুণœ হতে পারে এমন কোন সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহণ করবে না। বর্তমান সরকার ব্যবসাবান্ধব। বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় বাণিজ্য বাধাসমূহ হ্রাস পাচ্ছে এবং শুল্কহারও কমেছে। ফলে আমদানি শুল্কারোপের মাধ্যমে দেশীয় শিল্প সংরক্ষণের সুযোগ কমে যাচ্ছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতির ফলে সৃষ্ট প্রতিযোগিতামূলক বাজার ব্যবস্থা একদিকে যেমন রাষ্ট্রগুলোকে বিশ^ বাণিজ্যে টিকে থাকার সুযোগ করে দিয়েছে, তেমনি অনেক সময় এ প্রতিযোগিতার কারণে স্বল্প বাণিজ্য ক্ষমতাসম্পন্ন দেশগুলোর দেশীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিযোগিতার এসব ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দেশীয় উৎপাদনকারীদের রক্ষা করার জন্য বিশ^ বাণিজ্য সংস্থার বাণিজ্য প্রতিবিধান আইনের আওতায় এন্টি-ডাম্পিং, কাউন্টারভেইলিং এবং সেফগার্ড ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। তোফায়েল আহমেদ বলেন, ডব্লিউটিওর সদস্যভুক্ত দেশগুলো প্রয়োজনে এ ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সদস্যভুক্ত অনেক দেশ ৩০৫৮টি এন্টি-ডাম্পিং মেজার্স, ২০২টি কাউন্টারভেইলিং মেজার্স এবং ১৪৭টি সেফগার্ড মেজার্স আরোপ করেছে। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের এ বিষয়ে একটি স্বচ্ছ ধারণা থাকা দরকার। দেশীয় শিল্পের জন্য বিদেশ থেকে ডাম্পিং বা সাবসিডাইজড বা অতিরিক্ত আমদানির অভিযোগ যাতে মোকাবেলা করা যায়, সে বিষয়ে স্থানীয় শিল্পের প্রস্তুতি থাকা একান্ত প্রয়োজন। সরকার দেশীয় শিল্প রক্ষায় প্রয়োজনীয় আইন ও বিধিবিধান প্রণয়ন করেছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার দেশকে বিশ্ব দরবারে একটি মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একদিন শূন্যহাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। আজ বিশে^র বড় বড় অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও দ্রুত অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে দেশের সিমেন্টশিল্প, টিনশিল্প, কাগজশিল্প বিকশিত হয়েছে। এ সকল শিল্প এখন দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রফতানি করছে। এক সময় এগুলো পণ্য আমদানির ওপর নির্ভর ছিল। বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত সচিব) এটিএম মুর্তজা রেজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, এফবিসিসিআই সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ এবং বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের সদস্য আফরোজা বেগম।
×