ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অভিমত নিষিদ্ধ ব্লাটারের, লড়াইয়ের ঘোষণা মিশেল প্লাতিনিরও

‘আমি দুঃখিত কিন্তু লজ্জিত নই’

প্রকাশিত: ০৬:১১, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৫

‘আমি দুঃখিত কিন্তু লজ্জিত নই’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জীবনে এত বড় লজ্জা বোধ হয় পাননি সেপ ব্লাটার ও মিশেল প্লাতিনি। ফুটবলের সর্বোচ্চ পদে আসীন থাকার পরও দুর্নীতির কারণে রেহাই পাননি তারা। ফিফা সভাপতি ব্লাটার ও উয়েফা সভাপতি প্লাতিনিকে আট বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে ফিফার এথিকস কমিটি। তবে দু’জনের কেউই তাদের বিরুদ্ধে দেয়া সাজা মেনে নিতে পারছেন না। দু’জনই বলছেন, তাদের ফাঁসানো হয়েছে। ব্লাটার সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, ‘আমি দুঃখিত তবে লজ্জিত নই’। ব্লাটারের মতোই আট বছরের নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি বড় অংকের জরিমানা গুনতে হচ্ছে প্লাতিনিকে। মঙ্গলবার প্লাতিনিও সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তার বিরুদ্ধে দেয়া সাজার। প্লাতিনি বলেছেন, তাকে অন্যায়ভাবে ফাঁসানো হয়েছে। এটা একটা ষড়যন্ত্র। আমার স্বচ্ছ ইমেজকে কলঙ্কিত করা হয়েছে। ব্লাটার দৃঢ়তার সঙ্গে দাবি করেছেন, আমি এখনও ফিফার সভাপতি। আমি দুঃখ প্রকাশ করছি, তবে এসবের জন্য লজ্জিত নই। ১৯৯৮ সাল থেকে ১৭ বছর ফিফা সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন ব্লাটার। বিশ্ব ফুটবলে ব্লাটারের ক্ষমতা ছিল বেশ। সেই ব্লাটার এখন দীর্ঘমেয়াদী নিষেধাজ্ঞার কবলে। যদিও জুরিখে সংবাদ সম্মেলনে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন সুইস এই ক্রীড়া সংগঠক। একই সঙ্গে তিনি ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব আর্বিট্রেশন ফর স্পোর্টসে (সিএএস) এবং সুইস কর্তৃপক্ষের কাছে আপীল করবেন। নিষেধাজ্ঞার শাস্তিকে তার প্রতি একটা ‘ঘুষি’ হিসেবেই অভিহিত করেন ব্লাটার। সংবাদ সম্মেলনে ব্লাটার বলেন, ‘আমি সত্যিকার অর্থেই খুব দুঃখিত। আমি দুঃখিত। কারণ, আক্ষরিক অর্থেই একটা ঘুষি খেয়েছি আমি। আমি আরও দুঃখিত যে, ফিফা সভাপতি থাকাস্থাতেই আমি এই ঘুষিটি খেলাম। ফুটবলের জন্যই আমি সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি।’ আবেগী ব্লাটার আরও বলেন, ‘আমি দুঃখ প্রকাশ করছি ফিফার ৪০০’র বেশি সদস্যের পক্ষ থেকে। আমি দুঃখিত, কারণ এই বিশ্বে একজন মানবিকতাবোধ সম্পন্ন ব্যক্তি হিসেবেই আমি বিবেচিত হয়ে থাকব সব সময়। ফিফার জন্যই আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। প্লাতিনিকে দেয়া অর্থের বিষয়ে ব্লাটার বলেন, ‘নয় বছর পর আমার জন্য সে একটা কাজ সম্পন্ন করেছিল। যেটা ছিল জেন্টলম্যান এগ্রিমেন্ট (ব্যক্তিগত চুক্তি)। মৌখিক এই চুক্তির বিনিময়ে যে কোন সময় আমরা একে অপরকে অর্থ পরিশোধের বিষয়টা উল্লেখ ছিল।’ ওই চুক্তির বিষয়ে কোন লিখিত প্রমাণ রাখেননি ব্লাটার ও প্লাতিনি। যে কারণে এথিকস কমিটি মনে করছে এটা লিখিত থাকা প্রয়োজন ছিল। যেহেতু লিখিত নেই, সে কারণে এখানে কোন অনিয়ম করা হয়েছে নিশ্চিত। এ কারণেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে ফিফার নৈতিক কমিটি। ব্লাটার বিষয়টা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ‘আমি একমত পোষণ করছি তাদের সঙ্গে। তবে এটা সম্পূর্ণ প্রশাসনিক এবং অর্থনৈতিক বিভাগের বিষয়। তারাই এ বিষয়টা দেখাশোনা করবেন। এথিকস কমিটির নাক গলানোর এখানে কিছুই ছিল না।’ এই নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে লড়াই করা প্রসঙ্গে ব্লাটার বলেন, ‘আমি লড়াই করব। নিজের জন্য এবং ফিফার জন্য। কেন আমি আট বছর বহিষ্কার হব? এটা তো কোনভাবেই সম্ভব না। আমার আইনজীবী ইতোমধ্যে এথিকস কমিটির কাছে জানতে চেয়েছে, কোনটা সঠিক এবং কোনটা ভুল সেটা বলার জন্য।’ প্লাতিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, তার দাঁতে কিক করা হয়েছে। বিদ্রোহের সুরে ফরাসী কিংবদন্তি বলেন, আমি লড়াই করব। আমার দায়িত্ব আছে সবাইকে সত্যিটা জানানোর। তিনি আরও বলেন, আমি কি অন্যায় করেছি? যা হয়েছে তাতে কোন অস্বচ্ছতা নেই। আট বছরের এই নিষেধাজ্ঞা অন্যায়ভাবে দেয়া হয়েছে।
×