ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভুল ঘোষণা

এবারের ‘মিস ইউনিভার্স’ ফিলিপিনো সুন্দরী

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ২২ ডিসেম্বর ২০১৫

এবারের ‘মিস ইউনিভার্স’ ফিলিপিনো সুন্দরী

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ‘মিস ইউনিভার্স ২০১৫’ হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন ফিলিপিন্সের পিয়া আলোনজো উরজবাচ। তবে ভুলক্রমে ‘মিস ইউনিভার্স’ হিসেবে প্রথমে ঘোষণা করা হয়েছিল ‘মিস কলম্বিয়া আরিয়াদনা গুতিয়েরেজের নাম। এ ঘটনা রীতিমতো নাটকের জন্ম দিয়েছে এবং অনলাইনে ব্যাপক হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। খবর এএফপি ও বিবিসির। যুক্তরাষ্ট্রের লাসভেগাসে রবিবার ওই অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন কৌতুক অভিনেতা স্টিভ হার্ভে। তিনি কিউ কার্ড পড়তে গিয়ে ভুল করেন এবং বিজয়ী হিসেবে আরিয়াদনা গুতিয়েরেজের নাম ঘোষণা করেন। এবারের ‘মিস ইউনিভার্স’ হিসেবে নিজের নাম শুনে আরিয়াদনা উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশে হাত নেড়ে অভিবাদনের জবাব দেন। তার মাথায় পরিয়ে দেয়া হয় বিজয়ীর মুকুট। তবে তখনই হার্ভে তার ওই ঘোষণার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা চাই। প্রথম রানারআপ হয়েছেন মিস কলম্বিয়া, আর মিস ইউনিভার্স হয়েছেন মিস ফিলিপিন্স। এ ঘোষণা শোনার পর হতভম্ব হয়ে পড়েন পিয়া ও আরিয়াদনা দু’জনই। হার্ভে বলেন, এটি আমার ভুল। আমি এই ভুলের সব দায়িত্ব নিচ্ছি। কার্ডে আসলে এ নামটিই ছিল। এরপর আরিয়াদনার মাথা থেকে মুকুট খুলে নিয়ে পিয়ার মাথায় পরিয়ে দেয়া হয়। প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় রানারআপ হন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওলিভিয়া জর্ডান। অনুষ্ঠান শেষে পিয়া ‘মিস কলম্বিয়ার জন্য শুভকামনা জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনার জন্য আমার খুব খারাপ লাগছে। আমি তার কাছ থেকে মুকুট ফেরত নিতে চাইনি। তিনি ভবিষ্যতে যা কিছু করুন, এজন্য আমার শুভকামনা থাকবে। এদিকে আরিয়াদনাও তার ভক্তদের উদ্দেশে বলেন, সবকিছুই একটি কারণের জন্যই ঘটে। তাই আমি যা কিছু করতে পেরেছি তার জন্য আমি খুশি। এদিকে রাতভর ছিল টুইটারের সবচেয়ে জনপ্রিয় হ্যাশট্যাগ এবং হাজার হাজার টুইটার ব্যবহারকারী ঠাট্টা এবং মজার ছবির মাধ্যমে এ ঘটনা যে তাদের বিশ্বাস হচ্ছে না তা প্রকাশ করেছেন। শুধু মিস ইউনিভার্স অনুষ্ঠানেই নয়, স্টিভ হার্ভে ভুল করেন টুইট করতে গিয়েও। ব্যক্তিগত টুইটে তিনি কলম্বিয়া এবং ফিলিপিন্স বানান ভুল করেন। পরে সেটি তিনি মুছে ফেলেন। দ্বিতীয়বার তিনি টুইট করেন আর তাতে তিনি লেখেন, “আমার এই বিশাল ভুলের জন্য আমি ‘মিস কলম্বিয়া’ এবং ‘মিস ফিলিপিন্সের’ কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমি ভীষণ মর্মাহত।” তার এই টুইটটির ৭০ হাজারেরও বেশি রিটুইট হয়েছে। মিস ইউনিভার্স ঘোষণার ভুল নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে অবিশ্বাস ও হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে। কানাডার টুইটার ব্যবহারকারী মার্ক ক্লিচ বলেন, ‘বিজয় হয়েছেÑ মিস ইনফরমেশন।’ ’মিস ইউনিভার্স’ কর্তৃপক্ষের অফিসিয়াল পেজের ওয়ালে শেয়ার করা একটি পোস্টে ফেসবুক ব্যবহারকারী তাদের মতামত প্রকাশ করেছেন। এই পোস্টটি শেয়ার করা হয়েছে ৬২ হাজার বারেরও বেশি। আর ১৭ হাজার বার কমেন্টস করা হয়েছে ওই পোস্টটিতে। লেমি ক্লিফ তার প্রতিক্রিয়া জানান এভাবে, ‘অনুষ্ঠানটি খুব হাল্কাভাবে নেয়া হয়েছে। ভুক্তভোগী দুই অসাধারণ নারীর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। কারণ তাদের দু’জনের কাছেই এটি বিব্রতকর। আমি তাদের উভয়েরই দুঃখ বুঝতে অনুভব করছি।’ আন্দ্রেজ ফেলিপে আরবিলেজ কমেন্ট করেন, ‘এ যাবতকালের সবচেয়ে বাজে মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতা এটি। উপস্থাপনা ছিল ভয়াবহ রকমের খারাপ আর মিস কলম্বিয়াকেই বিজয়ী ঘোষণা করা উচিত। এ ঘটনার পর মিস ফিলিপিন্সের ভক্তরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এক ভক্ত ফেসবুকে লেখেন, আমাদের মিস ফিলিপিন্স তার স্মরণীয় মুহূর্তটি উপভোগ করতে পারলো না। আমার মনে হচ্ছে, আমার দেশ এবং তার কাছ থেকে জয়ের মুহূর্তটি ডাকাতি করা হয়েছে। এটা লজ্জাকর। এদিকে পিয়া মিস ইউনিভার্স বিজয়ী হওয়ায় ফিলিপিন্সে শুরু হয় আনন্দ উৎসব। ফিলিপিন্সের প্রেসিডেনসিয়াল প্যালেস এ আনন্দ উৎসবে নেতৃত্ব দেয়। কথিত আছে যে, ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট বেনিগনো একুইনোর সঙ্গে পিয়া উরজবাচের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। প্রেসিডেন্ট একুইনোর মুখপাত্র এডউইন লেসিয়েরদা এক বিবৃতিতে বলেন, ফিলিপিন্সের তৃতীয় মিস ইউনিভার্স হওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। এতে বলা হয়, এ খেতাব জিতে উরজবাচ শুধু আমাদের জনগণের জন্য গৌরবই বয়ে আনেননি, একই সঙ্গে একজন সত্যিকার প্রতিনিধি হিসেবে তিনি দেশ এবং আমাদের নারীদের মর্যাদা তুলে ধরেছেন। মিস ইউনিভার্স ঘোষণা নিয়ে উপস্থাপকের অনাকাক্সিক্ষত ভুলের পর পরিস্থিতি খুব ভালভাবে সামাল দেয়ায় লেসিয়েরদা উরজবাচের ভুয়সী প্রশংসা করেন।
×