ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মঞ্চের চেয়ে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াকেই বেশি প্রাধান্য দেয়া হয় ॥ সেলিম রেজা সেন্টু

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ২২ ডিসেম্বর ২০১৫

মঞ্চের চেয়ে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াকেই বেশি প্রাধান্য দেয়া হয় ॥ সেলিম রেজা সেন্টু

অভিনেতা ও নির্দেশক সেলিম রেজা সেন্টু। দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে নাট্য নির্দেশনা ও অভিনয়ের পাশাপাশি নাট্য পত্রিকার সম্পাদনার কাজও করছেন। গড়ে তুলেছেন দুটি নাটকের দল। প্রাকৃতজন নাট্যদলের প্রথম প্রযোজনায় তাঁর নির্দেশিত ‘প্রেম পত্র’ নাটকের পঞ্চম প্রদর্শনী হবে আগামীকাল সন্ধ্যা ৭ টায় শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে। এছাড়া দেশে ও বিদেশে নাটকটির একাধিক মঞ্চায়ন রয়েছে। নাটকে তিনি একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয়ও করছেন। নাটক ও মঞ্চ নিয়ে তার সঙ্গে কথা হয়। ‘প্রেমপত্র’ নাটক সম্পর্কে বলুন সেলিম রেজা সেন্টু: প্রেম কোন জাতি বা ধর্মের বেড়াজালে আবদ্ধ নয়, এটাই নাটকের মূল ম্যসেজ। দুজন ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের আত্মীক সম্পর্ককে তুলেধরা হয়েছে এ নাটকে। রিচার্ড একজন খিষ্ট্রান ধর্মাবলম্বী তরুণ, ভাড়া থাকে সনাতন ধর্মাবলম্বী তরুণী তটিনীদের বাড়িতে। ধর্ম বিষয়ের জায়গাটা এখানে মুক্ত থাকে। মানবিক মূলবোধ থেকে তাদের মধ্যে সম্পর্কে গড়ে ওঠে। এভাবেই এগিয়ে যায় নাটকের কাহিনী। নাটকটি রচনা করেছেন ভারতের ভৈকম মুহম্মদ বশির এবং নাট্যরূপ দিয়েছেন আমাদের দেশের প্রবীণ নাট্যজন শ্যামল ভট্টাচার্য। এতে আমি রিচার্ড চরিত্রটিতে অভিনয় করেছি এবং তটিনীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফারজানা করিম। নাটকটিতে অভিনয় সম্পর্কে আপনার অনুভূতি কি? সেলিম রেজা সেন্টু: নাটকটির সর্বশেষ প্রদর্শনী হয় এ মাসের ১১ তারিখ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে। বড় কোরিওগ্রাফ ও মঞ্চ দিয়েই যে নাটকের মূল্যায়ন হবে এটা নয়। আমরা ভাল নাটক ও অভিনয় দর্শককে উপহার দিতে পারছি কিনা এটাই বিচার্য বিষয়। সে দিক দিয়ে বলা যায় আমরা এতে অভিনয়ে প্রাধ্যান্য দিচ্ছি। গত শেষ মঞ্চায়নেও আমরা দর্শকের জন্য অতিরিক্ত চেয়ার এনে বসতে দিতে বাধ্য হয়েছি এবং তাদের বলতে শুনেছি, একটি অভিনয় সমৃদ্ধ নাটক দেখলাম। এটাই আমার জন্য বড় এক অভিজ্ঞতা। চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমিতে উৎস আয়োজিত নাট্যোৎসবে আগামী ২৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় নাটকটি মঞ্চায়ন হবে। এছাড়া আগামী ২১ থেকে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত কলকাতার শিশির মঞ্চ, মিনারভা থিয়েটার, শান্তি নিকেতন ও গোবর ডাঙ্গায় নাটকের চারটি প্রদর্শনী রয়েছে। আপনার থিয়েটার জীবন সম্পর্কে বলুন সেলিম রেজা সেন্টু: বগুড়া থেকে ১৯৮৯ সালে আমার থিয়েটার জীবন শুরু। এরপর কলকাতায় রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটক পরিচালনার ওপর ৭ বছরের কোর্স করেছি। বড়দের জন্য ‘প্রাকৃতজন’ এবং ছোটদের জন্য ‘অআকখ’ নামে দুটি নাটকের দল প্রতিষ্ঠা করেছি। নিয়মিত নতুন প্রযোজনার পাশাপাশি দেশে ও বিদেশে নাটক মঞ্চায়ন করে চলেছি। আপনার সম্পাদিত ‘দুই বাংলার থিয়েটার’ পত্রিকা সম্পর্কে বলুন। সেলিম রেজা সেন্টু: আমি ১৯৯৩ সালে প্রথম যখন রবীন্দ্রভারতীতে ভর্তি হই, তখন আমাদের দেশে নাটকের পত্রিকা বলতে ছিল রামেন্দু দা’র ‘থিয়েটার পত্রিকা’। কিন্তু ভারতে গিয়ে দেখলাম অসংখ্য নাটকের পত্রিকা আছে। আমার তখন একটা পরিকল্পনা মাথায় এল, দুই দেশের যারা প্রতিথযশা নাট্যজন আছেন, তাদের লেখা নিয়ে পত্রিকা বের করার। এর প্রায় ১৪ মাস পর ১৯৯৭ সালে ২ মার্চ ‘দুই বাংলার থিয়েটার’ নামে অন্য ধারার নাট্য পত্রিকা প্রথম প্রকাশিত হয়। এছাড়া শিশু কিশোরদের নাটকের কাগজ ‘নাট্য’ ও রঙ্গমঞ্চের সংবাদ বিষয়ক কাগজ ‘প্রাক কথন’ ও আমার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়। আপনার টিভি নাটক সম্পর্কে বলুন সেলিম রেজা সেন্টু: নাসরিন জাহানের লেখা ‘বাঁশি’ নাটক দিয়ে টিভি নাটকে আমার যাত্রা শুরু। নাটকটি ২০০৪ সালে এনটিভিতে প্রচার হয়। রবীন্দ্রনাথের ও রবীন্দ্র বিষয়ক এবং সাহিত্য নির্ভর কিছু এক ঘন্টার নাটক করেছি। এ পর্যন্ত ১৫ টির মতো টিভি নাটক তৈরি করেছি। ঢাকা ও বগুড়ার নাট্যচর্চা সম্পর্কে কিছু বলুন সেলিম রেজা সেন্টু: কথাটা কঠিন হলেও বলতে বাধ্য হচ্ছি। ঢাকা এবং ঢাকার বাইরের নাট্যচর্চার ধরণ আলাদা। দেশের প্রত্যেক জেলা শহরে মানুষ নাট্যচর্চা করে মঞ্চকে ভালবেসে, তাদের মঞ্চের প্রতি দ্বায়বদ্ধতা বেশি। আর ঢাকায় মঞ্চের চেয়ে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াকেই বেশি প্রাধান্য দেয়। -গৌতম পাণ্ডে
×