ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে আজ কাতালানদের প্রতিপক্ষ রিভার প্লেট, খেলতে পারেন নেইমার, সংশয়ে মেসি

ইতিহাসের সামনে বার্সিলোনা

প্রকাশিত: ০৪:২১, ২০ ডিসেম্বর ২০১৫

ইতিহাসের সামনে বার্সিলোনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইতিহাসের সামনে স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সিলোনা। ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে আজ রিভার প্লেটকে হারাতে পারলেই ইতিহাসের প্রথম ক্লাব হিসেবে সর্বোচ্চ তিনবার টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করবে লুইস এনরিকের দল। তবে রিভার প্লেটের বিপক্ষে ফাইনাল জিতে বার্সা কী পারবে সেই অবিস্মরণীয় কীর্তি গড়তে? ভক্ত-অনুরাগীদের এটাই এখন দেখার অপেক্ষা। তবে এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে, ফাইনালের আগে প্রতিপক্ষের চেয়ে কাতালানদের বেশি ভোগিয়েছে চোট-শঙ্কা। কেননা দলের সেরা তারকা মেসি নেইমার কেউই যে খেলেননি সেমিতে! যদিওবা শেষ চারে একাই লড়েছেন ত্রিমূর্তির বাকি তারকা সুয়ারেজ। তবে বার্সাভক্তদের জন্য সুখবর হলো প্লেটের বিপক্ষে খেলতে পারেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা নেইমার। বার্সার ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার নেইমার ইনজুরি থেকে মুক্ত। শুক্রবার অবশ্য ইয়াকোহামায় দলের সঙ্গে অনুশীলনও করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার গুয়াংঝু এভারগ্রান্ডের বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়ী ম্যাচে কুঁচকির ইনজুরির কারণে বিশ্রামে ছিলেন ২৩ বছর বয়সী নেইমার। তবে কিছুটা সুস্থ অনুভব করায় শুক্রবার অনুশীলনে ফিরেন তিনি। যদিও হালকা স্প্রিন্ট ও ড্রিলেই নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন ব্রাজিলিয়ান সেনসেশন। আর কিডনির সমস্যার কারণে সেমিফাইনালে মাঠের বাইরে ছিলেন লিওনেল মেসিও। কিন্তু আজকের ফাইনালে মেসির ফেরা নিয়ে বার্সিলোনার কোচ লুইস এনরিকে নিশ্চিত করে কিছু বলতে রাজি হননি। এ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘আমি এখনও জানি না নেইমার ও মেসি ফাইনালে খেলবে কিনা। এ সম্পর্কে তারা নিজেরাও নিশ্চিত করে কিছুই জানে না। তাদের জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে আমাদের। দেখা যাক এখন কি হয়।’ মেসি-নেইনামবিহীন বার্সাকে ফাইনালে তুলতে এককভাবেই ভূমিকা রাখেন লুইস সুয়ারেজ। গুয়াংঝুর বিপক্ষে শেষ চারের লড়াইয়ে দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিক করেন তিনি। যা টুর্নামেন্টের ইতিহাসেরই প্রথম। সাবেক লিভারপুলের এই তারকা ফুটবলারের এমন পারফর্মেন্সে মুগ্ধ-বিমোহিত বার্সিলোনার কোচও। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘লুইস অসাধারণ একজন খেলোয়াড়। বক্সের ভিতরে সে প্রতিপক্ষের জন্য হুমকিস্বরপ, আমাদের দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় সে। যখন গোলের প্রয়োজন হয় সব সময়ই সে আমাদের সহযোগিতা করে।’ উরুগুইয়ান তারকার প্রশংসায় পঞ্চমুখ ক্লাব সতীর্থ জর্দি আলবাও। তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর ধরেই লুইস অসাধারণ খেলোয়াড়।’ ২০০০ সাল থেকে শুরু এই টুর্নামেন্টে বার্সিলোনা প্রথম শিরোপা জিতে নয় বছর পর। দ্বিতীয়টি তার দুই বছর পর। এই নিয়ে প্রথম দল হিসেবে তৃতীয়বারের মত ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামবে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। এর আগে ২০০৯ সালে আর্জেন্টিনার এস্তদিয়ানটেসকে ২-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল কাতালান ক্লাবটি। দুই বছর পর ব্রাজিলের সান্তোসকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে শিরোপা জিতেছিল বার্সিলোনা। এদিকে সেমিতে বার্সার কাছে হারা গুয়াংঝুর কোচ খোঁচা দিয়ে গেছেন রিয়াল মাদ্রিদকে। ক্লাবটির কোচ লুইস ফিলিপ সোলারি বলেন, ‘অন্তত রিয়াল মাদ্রিদের মতো তো চার গোল খাইনি আমরা।’ বার্সার কাছে হেরে সেমি থেকে বিদায় নিলেও হতাশ সোলারি। কারণ যোগ্য দলের বিপক্ষেই হেরেছে তার শিষ্যরা, এমনটি মনে করেন তিনি। গত জুনে তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর ২৫ ম্যাচে এটিই গুয়াংঝু এভারগ্রান্ডের প্রথম পরাজয় ছিল। তার মতে, বার্সার এই দলটা দুর্দান্ত। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বার্সার বর্তমান স্কোয়াডের দিকে তাকালে ২০-২৫ জন দুর্দান্ত ফুটবলার চোখে পড়ে। তাদের নেইমার না থাকলে মেসি দলকে একাই টেনে নিয়ে চলে। মেসি না থাকলে নেইমার দলকে উড়িয়ে নেয়। আর সবশেষ ম্যাচেই দেখা গেল আমাদের বিপক্ষে মেসি-নেইমার নেই, তারপরও দল বিপাকে পড়েনি। লুইস সুয়ারেজ হ্যাটট্রিক করে দলকে ফাইনালে তোলেছে।’ বর্তমানে মেসি-সুয়ারেজ-নেইমারকে বলা হয় বিশ্বসেরা আক্রমণভাগ। ‘এমএসএন’ নামে পরিচিত এ ত্রয়ী প্রসঙ্গে সোলারি বলেন, ‘তারা তিনজন বর্তমান সেরা আক্রমণভাগ তৈরি করলেও ফুটবলের ইতিহাসে এমন আক্রমণভাগ আরও একটি ছিল। ২০০২ সালে ব্রাজিলের আক্রমণভাগের নেতৃত্ব দিতো রোনাল্ডো-রিভালদো-রোনালদিনহো। তারা ব্রাজিলকে যেভাবে টেনে নিয়ে যাচ্ছে তা অসাধারণ।‘ তবে কোন্ ত্রয়ীকে এগিয়ে রাখবেন তিনি? এমন প্রশ্নের জবাবে সোলারি সরাসরি বলেন দেন, ‘আমি জানি না মেসি-সুয়ারেজ-নেইমারকে নিয়ে সাজানো আক্রমণভাগ বেশি ভাল নাকি রোনাল্ডো-রিভালদো-রোনাল্ডিনহোকে নিয়ে সাজানো আক্রমণভাগ বেশি ভাল ছিল। কারণ, তারা প্রত্যেকেই দারুণ সব ফুটবলার। কাদের গুণগত মান ভাল ছিল এটা বলা সত্যিই অনেক কঠিন।’
×