ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অনলাইনে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৫

অনলাইনে মুক্তিযুদ্ধের  ইতিহাস

বাংলার দামাল মুক্তিযোদ্ধা আর মুক্তিপাগল মানুষের প্রবল প্রতিরোধ আর লড়াইয়ের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশ থেকে পরাজিত হয়ে বিজয়ের এই দিনে আত্মসমর্পণ করেছিল পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। সেদিনের সেই সূর্যের আলোয় ছিল নতুন দিনের স্বপ্ন। আর এ স্বপ্নের জন্য অকাতরে প্রাণ দিয়েছিলেন ৩০ লাখ মানুষ। তাঁদের প্রাণের বিনিময়ে আমাদের এ বিজয়, এ স্বাধীনতা। প্রতিবছরেই দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষ এক হয়ে উদযাপন করে দিনটিকে, স্মরণ করে সেই ৩০ লাখ শহীদকে, যাঁদের রক্তের দামে পাওয়া এই স্বাধীনতা। এই দিনটি নিয়ে তরুণদের মাতামাতিও কিন্তু একদম কম নয়। এদিনটাকে সাজায় নানাভাবে। তাদের সবচেয়ে পরিচিত সাইট ফেসবুক ঘাঁটলেই বোঝা যায় এই বিজয় দিবস নিয়ে রয়েছে তাদের কত পরিকল্পনা। বিজয়ের মাসের শুরু হতেই ছেয়ে গেছে ফেসবুক, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা আর দেশাত্মবোধক সব পোস্ট দিয়ে। সবাই এক হয়ে তাদের প্রোফাইলের ছবি সরিয়ে যুক্ত করে দেশের পতাকা। অনেকের টাইম লাইনে শোভা পাচ্ছে সেই পতাকা। এ সময় যেন ফেসবুকজুড়ে থাকে লাল-সবুজের খেলা। শুধু যে প্রফাইলের ছবি বদলে যায় তাও কিন্তু নয়, বদলে যায় তাদের প্রোফাইলের কভার পেজ। বিজয় দিবস আসতেই সবাই ফেসবুক টুইটারে মাধ্যমে বন্ধুদের জানায় বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা। অনেকে আবার বানিয়ে নেয় ভিজ্যুয়াল বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা কার্ড, সেগুলো অনলাইনে মেইল বা চ্যাটের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেয় বন্ধু, আত্মীয়স্বজন, কলিগদের কাছে। কম করে হলেও বিশটির বেশি ইভেন্ট তৈরি হয়েছে ফেসবুকে এবারের বিজয় দিবসকে ঘিরে। বিজয় দিবসের নামে রয়েছে ৪টা ফেসবুক পেজ যারা সারাবছর দেশের বীরত্বগাথা সবার কাছে জানিয়ে আসছে। তরুণ প্রজন্মের ব্লগাররাও কিন্তু পিছিয়ে নেই সেদিক থেকে। হাজারো ব্লগ পাওয়া যাবে ইন্টারনেট ঘাঁটলে যেখানে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঘটে যাওয়া না কাহিনী ফুটে উঠেছে, প্রকাশ করেছে তারা তাদের দেশকে নিয়ে চিন্তাভাবনা, ভালবাসা, আবেগের কথা। স্বাধীনতার বিপক্ষে কেউ কথা বললেই সোচ্চার হয়েছে তাদের কণ্ঠ, প্রতিবাদী সুরে রুখে দিয়েছে সব অপশক্তিকে। বিশ্ব যখন এগিয়ে চলেছে প্রযুক্তির তালে তালে তখন সবখানেই ছোঁয়া লেগেছে প্রযুক্তির, লেগেছে উৎসব উদযাপনেও। দেশে রয়েছে অনেকগুলো সাইট। লাখ লাখ প্রবাসী বাঙালী রয়েছে বিশ্বের নানা দেশে। দেশের মাটি থেকে দূরে থাকলেও তারা ভুলে যায় না এই দিনটির কথা, তাদের প্রাণের প্রিয় মাতৃভূমির কথা। অনলাইনের নানা সাইটের মাধ্যমে লাইভ স্ট্রিম সুবিধার মাধ্যমে সরাসরি দেশকে দেখতে পান বিশ্বের যে কোন প্রান্তে বসেই, দেখতে পারেন নানা ধরনের কমেন্ট। বাংলাদেশে রয়েছে হাজার হাজার ওয়েব সাইট, নিউজ পোর্টাল, ব্লগ। অধিকাংশ ব্লগ বা নিউজ পোর্টালে এরই মাঝে প্রচার করা শুরু হয়ে গেছে বিজয় দিবস নিয়ে নানা আর্টিকেল, ব্লগ, রিপোর্ট, কবিতা, গান বা গল্প। কিছু কিছু ওয়েবসাইট ব্লগ তো এরই মাঝে শুরু করেছে গল্প, কবিতা বা দেশাত্মবোধক গানের প্রতিযোগিতা। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রাণালয়ের রয়েছে নিজস্ব একটি ওয়েব সাইট। সেই ওয়েব সাইটের আর্কাইভে স্থান পেয়েছে দেশের সঠিক ইতিহাস, দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের একটা তালিকা, দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনের নানা কাহিনী, তাদের যুদ্ধের কাহিনী। সেখানে স্থান পেয়েছে এক বিশাল ফটো গ্যালারি। ফুটে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ও পরবর্তী সময়ের নানা ছবি। এছাড়া রয়েছে সেসময়ের নানা পত্রিকার পেপার কাটিংয়ের অংশ। এখন যে কেউ দেশের বা বিশ্বে যে কোন প্রান্তে বসেই জেনে নিতে পারেন, দেখে নিতে পারেন দেশে মুক্তিযুদ্ধকে। যেখানে উদযাপিত হচ্ছে তারুণ্যের বিজয় উৎসব। অনেকে এরই মধ্যে বিভিন্ন থিম নিয়ে কাজ করছে আর মুক্তি দিচ্ছে ফেসবুকে। এছাড়াও প্রতি বছরই সরকারসহ নানা বেসরকারী প্রতিষ্ঠান নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকে এই দিনটিকে কেন্দ্র করে। আর এই উৎসবের নতুন একমাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে আমাদের ইন্টারনেটের বিভিন্ন সাইটে।
×