ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

জাদুঘরে চিত্রকর্ম প্রদর্শনী জীবনের জন্য শিল্প

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৫

জাদুঘরে চিত্রকর্ম প্রদর্শনী জীবনের জন্য শিল্প

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিল্পের শুদ্ধতা শুধু মনকেই প্রশান্ত করে না, শিল্প দর্শনের স্বস্তি ছড়িয়ে পড়ে শরীরেও। সেই সূত্রে কিছু ছবি আঁকা হয়েছিল রোগীদের জন্য। এই চিত্রকর্মগুলো সৃজনে জোটবদ্ধ হয়েছিলেন দেশের প্রবীণ ও নবীন শিল্পীরা। ল্যাবএইড ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে তারা অংশ নেন তিনটি চিত্রশিবিরে। তাঁদের রং-তুলির আঁচড়ে বিষয়ের বৈভবে উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠে আড়াইশটি সাদা ক্যানভাস। যা এখন স্থান পাচ্ছে ল্যাবএইড হাসপাতালের বিভিন্ন কক্ষে। রোগীদের সামান্যতম প্রশান্তি দেয়ার উদ্দেশ্যেই এ কর্মযজ্ঞ। রোগীদের জন্য চিত্রিত ওই চিত্রকর্মগুলোর মধ্য থেকে ২০০টি চিত্রকর্ম নিয়ে শুক্রবার থেকে ল্যাবএইড ফাউন্ডেশনের আয়োজনে শুরু হলো বিশেষ চিত্রকর্ম প্রদর্শনী ‘জীবনের জন্য শিল্প’। জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী গ্যালারি ও তৃতীয় তলার প্রধান মিলনায়তনের উঠানের দেয়ালে শোভা পাচ্ছে চিত্রকর্মগুলো। শুক্রবার বিকেলে মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বলন করে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতায় অতিথি হিসেবে ছিলেন শিক্ষাবিদ ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক সমরজিৎ রায় চৌধুরী ও প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। ল্যাবএইড ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডাঃ এ এম শামীম এতে সভাপতিত্ব করেন। এর আগে ‘আন্দলোকে মঙ্গলালোকে’ গানের সঙ্গে সাধনার নৃত্যশিল্পীদের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে আয়োজন শুরু হয়। উদ্বোধনকালে অর্থমন্ত্রী বলেন, একটি জাতিকে উচ্চমার্গীয় পর্যায়ে পৌঁছাতে হলে শুধুমাত্র ধর্ম, অস্ত্র থাকলেই হয় না। তার ভেতরকার সুন্দরবৃত্তির বিকাশ ঘটলে জাতির উন্নয়ন হয়। শিল্পকলা, সাহিত্য, সঙ্গীত রুচির বিকাশে সাহায্য করে। তিনি মনে করেন, বই পড়লে, ছবি দেখলে কোন মানুষ খারাপ হতে পারেন না। সেই সঙ্গে একজন মানুষ উচ্চমানে পৌঁছতেও পারেন। আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ছবি দেখলে মনের মধ্যে আনন্দ, প্রশান্তি, স্থির-শান্তভাবের সৃষ্টি হয়। অস্থির মন শান্ত হয়। যা বর্তমান অস্থির সময়ে খুবই জরুরী। মনকে স্থির রাখতে নিজের চারপাশে ছবি রাখতে হবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, তিনি যখন ছোট ছিলেন, তখন গরিব ছিলেন; এতটাই গরিব ছিলেন যে, বড়লোকরাও গরিব ছিলেন! কিন্তু সেখান থেকে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও মননের দিক থেকে এখন উচ্চতর স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি আশা করেন, বাংলাদেশ স্বপ্নের সমান বড় হবে। অনুষ্ঠানে ডাঃ এ এম শামীম তার বক্তব্যে একটি নতুন চিত্রশালা নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানান। যাতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেন শিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী। প্রদর্শনীতে ৫৭ জন শিল্পীর চিত্রকর্ম স্থান পাচ্ছে। যাদের মধ্যে রয়েছেন- সমরজিৎ রায় চৌধুরী, কালিদাস কর্মকার, হামিদুজ্জামান খান, বীরেন সোম, আবদুস শাকুর শাহ্্, অলোকেশ ঘোষ, মোহাম্মদ ইউনূস, রনজিৎ রায় প্রমুখ। রোগীদের একটু স্বস্তি দেয়ার লক্ষ্যে প্রত্যেক শিল্পীই প্রকৃতি, নিসর্গ আর বর্ণবৈচিত্র্যতায় চিত্রকর্মগুলো এঁকেছেন। যাতে রূপসী বাংলার সার্বিক একটি প্রতিচ্ছবি প্রতিফলিত হয়েছে। যা রোগীদের ও তাদের সঙ্গে আসা স্বজনদের মাঝে প্রশান্তির ¯িœগ্ধতা ছড়াচ্ছে বলে আয়োজকরা জানান। আগামী ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এই প্রদর্শনী। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ছায়ানটের শুদ্ধসঙ্গীত উৎসবের সমাপ্তি ॥ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় ছায়ানট আয়োজিত শুদ্ধসঙ্গীত উৎসব। তিনটি অধিবেশনে সাজানো এ উৎসবের সমাপনী দিন ছিল শুক্রবার। এদিন দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয় সকাল নয়টায়। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের রাগ-রাগিনীর খেলা চলে বেলা ১টা পর্যন্ত। দ্বিতীয় অধিবেশনের প্রথমেই পরিবেশিত হয় ছায়ানটের শিল্পীদের সম্মেলক কণ্ঠসঙ্গীত। অসিত দের পরিচালনায় শিক্ষার্থী শিল্পীরা উপস্থাপন করে রাগ গুণকেলি। এছাড়াও এ অধিবেশনে কণ্ঠসঙ্গীত পরিবেশন করেন রাজশাহীর শিল্পী আলমগীর পারভেজ সুমন। তিনি উপস্থাপন করেন রাগ ভাটিয়ার। কণ্ঠসঙ্গীতে রাগ টৌরী পরিবেশন করেন ঢাকার শিল্পী শ্রাবন্তী ধর। কণ্ঠসঙ্গীতে রাজধানীর আরেক শিল্পী সতীন্দ্রনাথ হালদার পরিবেশন করেন রামকেলি রাগ। এ অধিবেশনে বেহালায় সুর ছড়ান ঢাকার বেহালাবাদক শিউলী ভট্টাচার্য। বেহালায় স্নিগ্ধ সুরের মূর্ছনা তুলে উপস্থাপন করেন রাগ আলাহিয়া বিলাবল। তৃতীয় অধিবেশন শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়। চলে রাত গড়িয়ে ভোর অবধি। প্রথম দিনের মতোই এদিনও শুদ্ধ সঙ্গীতের অনুরাগী শ্রোতায় পরিপূর্ণ ছিল ছায়ানট মিলনায়তন। এ পর্বের শুরুতেও ছিল ছায়ানটের শিল্পীদের কণ্ঠসঙ্গীত। পরিবেশিত হয় রাগ ইমন। গৌতম সরকারের পরিচালনায় বৃন্দ তবলাবাদনেও অংশ নেন ছায়ানটের শিল্পীরা। সমাপনী রাতে কণ্ঠসঙ্গীত পরিবেশন করেন ঢাকার সাত শিল্পী লতিফুন জুলিও, সুপ্রিয়া দাশ, সঞ্জীবন স্যানাল, সুস্মিতা দেবনাথ শুচি, খায়রুল আনাম শাকিল, রেজোয়ান আলী, অসিত কুমার দে, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী ও রাজশাহীর শিল্পী অমরেশ রায়চৌধুরী এবং চট্টগ্রামের শিল্পী তাপস দত্ত। রাগ মারু বেহাগের আশ্রয়ে সুর ছড়ান লতিফুন জুলিও। সুপ্রিয়া দাশের কণ্ঠে উচ্চারিত হয় রাগ ছায়ানট। রাগ গৌর কল্যাণের আশ্রয়ে কণ্ঠসঙ্গীত পরিবেশন করেন সঞ্জীবন সান্যাল। রাগ শুধ্্কল্যাণ পরিবেশন করেন সুস্মিতা দেবনাথ। রাগ রাগেশ্রী উপস্থাপন করেন তাপস দত্ত। বিজন চন্দ্রের কণ্ঠসঙ্গীতে পরিবেশিত হয় রাগ রাগেশ্রী। পাখোয়াজ বাজিয়ে শোনান ঢাকার শিল্পী শুষেণ কুমার রায়। কলকাতার শিল্পী দেবস্মিতা ভট্টাচার্য সরোদের সুরে মগ্ন হয় শ্রোতাকুল। এছাড়া কৌশীকানাড়া রাগের আশ্রয়ে সেতার বাজিয়ে শোনান ঢাকার শিল্পী এবাদুল হক সৈকত। উদীচীর সাংস্কৃতিক সম্মেলনের সেমিনার ॥ সাম্রাজ্যবাদ ও ধর্মীয় মৌলবাদÑএই দুইয়ের বিরুদ্ধে একসঙ্গে নিরবচ্ছিন্নভাবে সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজিত তিন দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার সকালে ‘দক্ষিণ এশিয়ায় সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সাংস্কৃতিক সংগ্রাম’ বিষয়ক সেমিনারে এ মত তুলে ধরেন তারা। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে আয়োজিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উদীচীর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান। উদীচীর কেন্দ্রীয় সভাপতি কামাল লোহানীর সভাপতিত্বে সেমিনারে আলোচনা অংশ নেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. শফিউদ্দিন আহমেদ, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য হায়দার আকবর খান রনো, প্রগতি লেখক সংঘের কার্যকরী সভাপতি কবি গোলাম কিবরিয়া পিনু, উদীচীর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডাঃ চন্দন দাস এবং উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য ডাঃ রফিকুল হাসান জিন্নাহ। সেমিনার সঞ্চালনা করেন উদীচীর সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সরদার। সেমিনারে বক্তারা বলেন, সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদ উভয়ই বিশ্ব মানবতার শত্রু। বিশ্বের প্রায় সর্বত্রই সাম্প্রদায়িকতার বীভৎস রূপ পরিলক্ষিত হচ্ছে। জনগণের মধ্যে সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব কখনই মৌলিক দ্বন্দ্ব হতে পারে না। শ্রেণী দ্বন্দ্বই সমাজের মৌলিক দ্বন্দ্ব। সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব, ভাষাগত, জাতিগত, আঞ্চলিক ইত্যাদি দ্বন্দ্ব হলো অবৈরী দ্বন্দ্ব। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেশীয় শাসকেরা এবং ঔপনিবেশিক তথা সাম্রাজ্যবাদীরা এগুলোকে বৈরী দ্বন্দ্বে পরিণত করে মানুষের বিকাশের ক্ষেত্রে বাধার প্রাচীর তৈরি করেছে। বাংলাদেশের মৌলবাদীদের সঙ্গে পাকিস্তানের মৌলবাদীদের আত্মিক ও বৈষয়িক সম্পর্ক দৃঢ় হচ্ছে মন্তব্য করে তারা আরও বলেন, ভারতের হিন্দু মৌলবাদের নানা তা-ব বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মুসলিম মৌলবাদকে নানাভাবে শক্তি জোগান দিচ্ছে। তেমনি মিয়ানমারের বৌদ্ধ মৌলবাদীদের উগ্র সাম্প্রদায়িক কর্মকা-ে শক্তি পাচ্ছে বাংলাদেশের মুসলিম মৌলবাদীরা। বক্তারা আরও বলেন, সংস্কৃতির দুর্দিন রাজনীতির দুর্দিনের চেয়েও ভয়াবহ। সভাপতির বক্তব্যে উদীচীর কেন্দ্রীয় সভাপতি কামাল লোহানী বলেন, বর্তমানে শ্রেণী দ্বন্দ্বের বিষয়টি সবার সামনে চলে এসেছে। মুক্তিযুদ্ধের আগে ধর্মীয়ভাবে সংখ্যালঘুর অনুপাত শতকরা ৩৪ ভাগ হলেও বতর্মানে তা ৮ শতাংশে নেমে এসেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সংস্কৃতির বিনিময় এবং সাম্রাজ্যবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও শ্রেণী দ্বন্দ্বের বিরুদ্ধে লড়াই করার লক্ষ্যে উদীচী দক্ষিণ এশিয়ায় একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে চায়। সেমিনার শেষে মধ্যাহ্ন বিরতির পর বিকেল থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এ পর্বে গান, নাচ, আবৃত্তি, নাটক, নৃত্যনাট্যসহ নানা বৈচিত্র্যময় পরিবেশনা উপস্থাপন করেন দেশব্যাপী উদীচীর বিভিন্ন জেলা ও শাখা থেকে আগত শিল্পী-কর্মীরা। ফরিদপুর জেলা সংসদের গণসঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠানমালা। হাওড় অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী ধামাইল গান পরিবেশন করেন সুনামগঞ্জ জেলার শিল্পীরা। বাউলসাধক শাহ আব্দুল করিম, বৈষ্ণব সাধক রাধারমণ দত্তসহ বিভিন্ন লোকশিল্পীদের গান দিয়ে উৎসব প্রাঙ্গণ মাতিয়ে রাখেন তারা। গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়া শাখার শিল্পীরা। গীতিনাট্য পরিবেশন করেন বরিশাল উদীচীর শিল্পীরা। এছাড়াও ছিল চট্টগ্রাম, যশোর, ঝিনাইদহ, ফেনী, নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জ এবং মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শাখার উদীচীর শিল্পী-কর্মীদের পরিবেশিত গান, নাটক, নৃত্যনাট্যসহ রকমারি পরিবেশনা। উদীচীর সাংস্কৃতিক সম্মেলনের তৃতীয় ও শেষ দিন আজ শনিবার। এদিন বিকেল থেকেও থাকবে গান, নাচ, আবৃত্তি, নাটক, নৃত্যনাট্যসহ নানা বৈচিত্র্যময় পরিবেশনা। শিশুতোষ সংগঠন দুরন্তর বিজয় উৎসব ॥ আগামী দিনের ভবিষ্যৎ শিশুদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে চলেছে শিশুতোষ সংগঠন দুরন্ত। দেখতে দেখতে পথচলার এক দশকে পা দিয়েছে সংগঠনটি। শুক্রবার সংগঠনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে দিনব্যাপী বিজয় উৎসব উদ্্যাপন করে। আলোচনা, শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে উদ্্যাপন করা হয় বিজয়ের ৪৪ বছর। শিশুদের কলরবের মধ্যে সকালে উৎসব উদ্বোধন করেন বরেণ্য কবি নির্মলেন্দু গুণ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী হাসান আরিফ ও আয়োজনের পৃষ্ঠপোষক হক গ্রুপের বিপণন প্রধান দেবাশীষ সিকদার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন দুরন্ত সম্পাদক কাজী মনজরুল আজিজ। উদ্বোধনী আলোচনা শেষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলের তিন শতাধিক শিশু। সাদা ক্যানভাসে শিশুরা মেলে ধরে মনের গহীনে লুকিয়ে থাকা ভাবনা। চিত্রপটে উঠে আসে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি জাগানিয়া দৃশ্যকল্পসহ বাংলার প্রকৃতির রূপময়তা। বিকেলে চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগ এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ওয়াজির সাত্তার, ছড়াকার সিরাজুল ফরিদ ও দুরন্ত সোসাইটির চেয়ারম্যান মীর রওশন সালেহা। পুরস্কার প্রদান শেষে ‘দুরন্ত’র বিশেষ সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করেন সমাপনী অনুষ্ঠানের অতিথিরা। সবশেষে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নানা পরিবেশনায় অংশ নেয় আবিদা রহমান সেতু, উর্মী হালদার, সালাহউদ্দিন সোহাগ অমিতেষ দাস অমি ও উমামা। মাহিদুল ইসলামের আবৃত্তিসন্ধ্যা ॥ চলছে বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। বিজয় দিবস উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হলো বাকশিল্পী মাহিদুল ইসলামের আবৃত্তিসন্ধ্যা। সুবর্ণ সেই আলোর রেখা শীর্ষক অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে। মাহবুবুল আলম রচিত কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি শীর্ষক কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে শুরু হয় আয়োজন। এরপর শিল্পী একে একে পাঠ করেন নির্মলেন্দু গুণের কবিতা ‘আমি আজ কারও রক্ত চাইতে আসিনি’, আসাদ চৌধুরীর ‘শহীদদের প্রতি’, জীবনানন্দ দাশের ‘বনলতা সেন’, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বাঁশি’, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘আয়রে আবার আমার চির তিক্ত প্রাণ’, সুবোধ সরকারের ‘শাড়ী’, ভাস্কর চৌধুরীর ‘আমার বন্ধু নিরঞ্জন’, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘কবির মৃত্যু’, নাজিম হিকমতের ‘জেলখানার চিঠি’, সৈয়দ শামসুল হকের ‘নিজেকে ঠিক তোমার জন্য’, হেলাল হাফিজের ‘প্রস্থান’, দাউদ হায়দারের ‘সেই কথা বলা হলো না’, শামসুর রাহমানের ‘তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা’, সলিল চৌধুরীর ‘শপথ’, রুদ্র মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর ‘বাতাসে লাশের গন্ধ’, সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘প্রিয়তমাসু’ ও হুমায়ুন আজাদের ‘শুভেচ্ছা’সহ মোট ৩৮টি কবিতা। খেলাঘরের শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক উৎসব ॥ খেলাঘর ঢাকা মহানগর কমিটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক উৎসব। শুক্রবার আরামবাগ হাইস্কুল ও কলেজ প্রাঙ্গণে এই সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এর উদ্বোধন করেন খেলাঘরের সভাপতিম-লীর সদস্য নাসিরুল ইসলাম মল্লিক পিন্টু। সভাপতিত্ব করেন খেলাঘরের ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি সাংবাদিক শ্যামল দত্ত। উদ্বোধনী আয়োজন শেষেই শুরু হয় সাংস্কৃতিক আয়োজন। এর শুরুতেই ছিল সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় ১৮টি বিষয়ে ২০-টি শাখার প্রায় তিনশ প্রতিযোগী অংশ নেয়। প্রতিযোগিতা শেষে বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক আসাদ মান্নান। প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারী শিশু-কিশোররা আগামী ২৪ থেকে ২৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে। সবশেষে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। অনুরাগ শিল্পীগোষ্ঠীর বিজয় উৎসব ॥ বিজয় দিবস উপলক্ষে শুক্রবার আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে অনুরাগ শিল্পী গোষ্ঠী। বিকেলে রাজধানীর টিকাটুলির সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত সচিব স্বপন কুমার রায়। সংগঠনের সভাপতি তপন কুমার গুহর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য, এ্যাডভোকেট সুনীল কুমার বিশ্বাস, বাবু তপন কান্তি সরকার, লায়ন গীতা সরকার প্রমুক। স্বাগত বক্তব্য রাকেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুমন ম-ল।
×