ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিপিএল একাদশের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৫

বিপিএল একাদশের অধিনায়ক  মাহমুদুল্লাহ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জমজমাট বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ তৃতীয় আসর সমাপ্ত হয়েছে। শুরু থেকেই দল গঠনের দিক থেকে বিচার করে তেমন শক্তিশালী দল ধরা না হলেও মাশরাফি বিন মর্তুজার দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স চ্যাম্পিয়ন আর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বরিশাল বুলস রানার্সআপ হয়েছে। ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে তেমন আলো ছড়াতে না পারলেও দুর্দান্ত নেতৃত্ব মাশরাফিকে অন্যতম সেরা এক ক্রিকেটার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে এবারের বিপিএল। তবু বিপিএল একাদশের অধিনায়ক মনোনীত হয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। কারণ দলকে দারুণ নেতৃত্ব দিয়ে ফাইনালে তোলার পাশাপাশি ব্যক্তিগত নৈপুণ্যেও তিনি ছিলেন দারুণ। এবারের আসরটিতে বাংলাদেশী ক্রিকেটাররাই ছিলেন পারফর্মেন্সে জয়-পরাজয়ের নির্ধারক। যদিও ব্যাট-বলের নৈপুণ্যে বিদেশীরা শীর্ষস্থান দখল করেছেন, কিন্তু স্থানীয় ক্রিকেটাররা সমানতালেই লড়েছেন। বিশেষ করে এবারের বিপিএল ছিল ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা পাকিস্তানী তরুণ পেসার মোহাম্মদ আমিরের নিজেকে প্রমাণের টুর্নামেন্ট। তিনি সেটা ভালভাবেই পেরেছেন। দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়ে বিপিএল একাদশেও ঠাঁই করে নিয়েছেন। ইএসপি এনক্রিকইনফো’র দৃষ্টিতে বিপিএলের সেরা একাদশে আমিরসহ আছেন তিন বিদেশী, বাকি ৮ জনই বাংলাদেশী। পুরো বিপিএলেই মাশরাফির নেতৃত্ব ছিল আলোচনার কেন্দ্রে। কাগজে-কলমে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে কেউ সবচেয়ে শক্তিধর বিবেচনা করেনি। কিন্তু মাশরাফি তার ক্ষুরধার মস্তিষ্কের জোরে ঠিকই প্রাথমিক পর্বে দলকে শীর্ষস্থান এনে দিয়েছেন। নিজে সব ম্যাচে বোলিং করতে পারেননি, কিন্তু শুধুই একজন নেতা হিসেবে দলকে টেনেছেন বড় চাপের ম্যাচগুলোতেও। ব্যাটসম্যান মাশরাফিকেও দেখেছে এবার বিপিএল। ১২ ম্যাচের ৫টিতেই বোলিং করেননি। তাই বোলার মাশরাফিল ঝুলিতে মাত্র ৫ উইকেট। কিন্তু ব্যাট হাতে একটি অপরাজিত ফিফটিসহ ২০.৪০ গড়ে ১০২ রান করেছেন। এ কারণে বিপিএল একাদশে ঠিকই জায়গা হয়েছে তার। তবে অধিনায়ক হিসেবে বিপিএল একাদশ মনোনীত করেছে মাহমুদুল্লাহকেই। শুধু দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ফাইনালে তুলেছেন, এমন নয় বরং বিপদের মুহূর্তে ব্যাট কিংবা বল হাতেও দলকে বাঁচিয়েছেন। প্রাথমিক পর্বের শুরুর দিকে দলের অন্য ব্যাটসম্যানরা যখন ব্যর্থ তখন তিনি ধারাবাহিকভাবেই রান পেয়েছেন। আর ফাইনালে ছিলেন আরও দুর্দান্ত। ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ৪৮ এবং বল হাতে মাত্র ২৩ রানে দুই উইকেট নেন তিনি। ফিল্ডিংয়েও ছিলেন এদিন অসাধারণ। দুর্দান্ত এক রানিং ক্যাচ ধরা এবং একটি সরাসরি থ্রো-তে রানআউট করেছেন। সবমিলিয়ে ২৭.৯০ গড়ে করেছেন ২৭৯ রান। ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে উজ্জ্বল থেকে দলের অন্য ক্রিকেটারদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠার জন্যই বিপিএল একাদশের অধিনায়ক হয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। বিপিএল একাদশে সর্বাধিক রান করে শীর্ষে থাকা ঢাকা ডায়নামাইটসের অধিনায়ক শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকারাও আছেন। তিনি ১০ ম্যাচে ৩৮.৭৭ গড়ে ৩৪৯ রান করেছেন। চিটাগাং ভাইকিংস অধিনায়ক তামিম ইকবাল ৩৭.২৫ গড়ে ২৯৮, ইমরুল কায়েস ২৮.৩৬ গড়ে ৩১২, জহুরুল ইসলাম ৪১.০০ গড়ে ২০৫, পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ অলরাউন্ডার আসহার জাইদি ৫৩.৭৫ গড়ে ২১৫ রান ও ১৭ উইকেট, সাকিব ১৮ উইকেট ও ১৩৬ রান, পাক পেসার আমির ১৪ উইকেট ও পেসার আল-আমিন হোসেন ২০ উইকেট নিয়ে ঠাঁই পেয়েছেন একাদশে। এছাড়া আছেন তরুণ উদীয়মান ১৯ বছর বয়সী বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার রনি। দারুণ বোলিং করা এ তরুণ ২১ উইকেট নিয়ে আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। তবে গত দুই আসরেই বিপিএল একাদশে থাকা মুশফিকুর রহীম এবার ব্যর্থতার জন্য ছিটকে পড়েছেন। এছাড়া ডায়নামাইটসের আইকন নাসির হোসেনও জায়গা পাননি সেরা একাদশে। গত আসরের সেরা একাদশে থাকাদের মধ্যে এবার শুধু আছেন সাকিব। বিপিএল একাদশ ২০১৫ ॥ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, কুমার সাঙ্গাকারা, জহুরুল ইসলাম, আসহার জাইদি, সাকিব আল হাসান, মাশরাফি বিন মর্তুজা, মোহাম্মদ আমির, আবু হায়দার রনি ও আল-আমিন হোসেন।
×