ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

অস্ট্রেলিয়ার শুরু জয় দিয়ে

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৫

অস্ট্রেলিয়ার শুরু জয় দিয়ে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ তারিখ অনুযায়ী তিনদিন বলা হলেও কার্যত হোবাট টেস্টে আড়াই দিনেই হারলো সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেও যেমন তেমন হার নয়, একেবারে লজ্জার অতল গহীনে তলিয়ে যাওয়া। ভিভ রিচার্ডস-গর্ডন গ্রিনিজের উত্তরসূরিরা মাথা নোয়ালো ইনিংস ও ২১২ রানের ব্যবধানে! নিজেদের হারিয়ে খোঁজা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে রানের হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার এটি দ্বিতীয় বড় জয়ের নজির। ইস, অল্পের জন্য রেকর্ডটা নতুন করে লেখা হলো না স্টিভেন স্মিথদের। প্রতিপক্ষকে পার্থক্য বুঝিয়ে দুর্দান্ত প্রতাপে তিন টেস্টের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে যাওয়াই বা কম কিসে; কে বলবে এই অস্ট্রেলিয়া আনকোরা, নেই মাইকেল ক্লার্কসহ নিয়মিত ছয়-সাত জন তারকা? ক্যারিবীয়দের দুমড়ে-মুচড়ে অসিদের চিরায়ত মানসিকতাই প্রকাশ পেল। অনন্য এক ডাবল সেঞ্চুরি (২৬৯*) হাঁকিয়ে যেখানে ম্যাচসেরা এ্যাডাম ভোগস। ৬ উইকেটে ২০৭ রান নিয়ে শনিবার তৃতীয় দিনে প্রথম ইনিংসের খেলা শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অস্ট্রেলিয়ার ৫৮৩/৪ ডিক্লেঃÑএর জবাবে ফলোঅন এড়ানো তো দূরের কথা ১৬ রানের মধ্যে শেষ ৪ উইকেট হারায় ক্যারিবীয়রা। প্রাপ্তি বলতে ৪০তম টেস্টে ড্যারেন ব্রাভোর ৭ম সেঞ্চুরি। ৯৪ রান নিয়ে নামা উ.ইন্ডিজ ব্যাটসম্যান আউট হন ১০৮ রান করে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কেমার রোচের ৩১। ২২৩ রানে অলআউট সফরকারীরা। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে জস হ্যাজলউড ৪, নাথান লেয়ন ৩ ও পিটার সিডল নেন ২টি করে উইকেট। ফলোঅনে পড়লেও প্রথম ইনিংসে তবু দুই শ’ রান পার হয়েছিল, দ্বিতীয় ইনিংসে যে ১৪৮ রানেই অলআউট জেসন হোল্ডারের ওয়েস্ট ইন্ডিজ! ৫ উইকেট নিয়ে অতিথিদের লড়াই করার এতটুকু সুযোগ দিলেন না নয় মাস পর দলে ফেরা জেমস প্যাটিনসন। ৫ উইকেট নিয়েছেন এই পেসার। ১৪ টেস্টের ছোট্ট ক্যারিয়ারে এ নিয়ে চার বার পাঁচ উইকেট নিলেন তিনি। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নেন অপর পেসার জস হ্যাজলউড। প্যাটিনসন-হ্যাজলউডের গতির তোপে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৩৬.৩ ওভারেই গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একাই যা একটু লড়েছেন ক্রেইগ ব্রেথওয়েট। ব্যক্তিগত আক্ষেপ সঙ্গী করে এই ওপেনার ফিরেছেন ৯৪ রানে। ১৪৮Ñএর মধ্যে একজনই যদি ৯৪ রান করেন তবে বাকিদের অবস্থা অনুমান করে নেয়া যায়। দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন মাত্র দু’জন, হোল্ডার (১৭) আর জেরমে টেইলর (১২), বাকিদের স্কোর দেখলে মোবাইল ডিজিটি বলে ভ্রম হবে। দুর্দান্ত জয়ের পরও স্মিথের হয়তো একটা আফসোস থেকে যাবে! মাত্র ৫ রানের জন্য যে ব্র্যাডম্যানের সময়ের রেকর্ড ছোঁয়া হলো না। আর ৫ রান আগে উ.ইন্ডিজকে গুঁড়িয়ে দিতে পারলেই ছোঁয়া যেত ১৯৩১ সালের রেকর্ডটা। আক্ষেপের জয়টা এল মাত্র ইনিংস ও ২১২ রানের ব্যবধানে! এত কাছে এসেও কিংবদন্তি স্যার ডনের পাশে বসা হলো না। এই জয়টা নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম জয়। ওপরে কেবল ১৯৩১ সালে ব্র্যাডম্যানের ওই জয়টাই। ৮৪ বছর আগে ব্রিসবেনের সেই টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ইনিংস ও ২১৭ রানে হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। রেকর্ড সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয়টা না এলেও একটি ‘প্রতিজ্ঞা’ পূরণের স্বস্তি নিয়েই ফিরেছে স্মিথের দল। সিরিজ শুরুর আগে যারা হুঙ্কার দিয়েছিল, দুর্বল বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এতটুকু ‘দয়া’ দেখানো হবে না। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা হল। অসিরা ক্যারিবীয়দের হারালো অতি নির্দয়ভাবে। মাত্র চার সেশনের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুই ইনিংসে অলআউট, তার আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে চার সেশনেই রানের পাহাড় গড়া। যেখানে ২৮৫ বলে ৩৩ চারের সাহায্যে ওয়ানডে স্টাইলে অপরাজিত ২৬৯ রান করে ‘নায়ক’ এ্যাডাম ভোগস। মেলবোর্নে দ্বিতীয় টেস্ট (বক্সিং ডে) ২৬ ডিসেম্বর থেকে।
×