ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ভোগস-মার্শের শতকে রানের পাহাড় অসিদের

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১১ ডিসেম্বর ২০১৫

ভোগস-মার্শের শতকে রানের পাহাড় অসিদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ তরুণ স্টিভেন স্মিথের নেতৃত্বে একেবারে নবীন দলটি নিয়ে শঙ্কা ছিল সবার। হয় তো কিছুদিন সংগ্রাম করতে হবে এবার অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলকে টেস্ট ক্রিকেটে। কিন্তু সেই ভয়টাকে গত মাসেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দূরীভূত করে দিয়েছেন অসি ব্যাটসম্যানরা দুর্দান্ত ব্যাটিং প্রদর্শনী দেখিয়ে। এবার সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলারদের জন্যও বড় অগ্নিপরীক্ষা ছুড়ে দিয়েছেন অসি ব্যাটসম্যানরাই। হোবার্টে বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া প্রথম টেস্টের প্রথম দিনেই রানের পাহাড় গড়েছে তারা। জোড়া শতক বেরিয়ে এসেছে এ্যাডাম ভোগস ও শন মার্শের ব্যাট থেকে। চতুর্থ উইকেট জুটিতে অবিচ্ছিন্ন থেকে ৩১৭ রান যোগ করেছেন তারা। ফলে প্রথম দিনশেষে মাত্র ৩ উইকেটে ৪৩৮ রানের বিশাল সংগ্রহ পেয়েছে অসিরা। উভয় ব্যাটসম্যানই ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। ভোগস ১৭৪ ও মার্শ ১৩৯ রান নিয়ে এখনও অপরাজিত। হোবার্টে সফরকারী ক্যারিবীয়দের জন্য তাই চরম হতাশার একটা দিন গেছে। টস জিতেই ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। শুরুটা যেভাবে করেছিলেন দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও জো বার্নস তা থেকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলারদের অনেক ভুগতে হবে পুরোদিন। অবশ্য দলীয় ৭৫ রানেই প্রথম উইকেট হারিয়ে বসে অস্ট্রেলিয়া। স্বভাবসুলভ বিধ্বংসী মনোভাব নিয়েই ব্যাট চালিয়ে যাচ্ছিলেন ওয়ার্নার। ৬১ বলে ১১ চারে ৬৪ রান করার পর তাকে শিকার করেন মিডিয়াম পেসার শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। ওয়ার্নার চলতি বছর ১১টি পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস খেলেছেন। এটি যে কোন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনারের ক্ষেত্রে রেকর্ড। এর আগে কোন অসি ওপেনার এক বছরে এত বেশি পঞ্চাশোর্ধ টেস্ট ইনিংস উপহার দিতে পারেননি। দ্রুতই এরপর বার্নস (৩৩) ও স্মিথের (১০) উইকেট তুলে নিয়ে ক্যারিবীয়রা যেন কিছুটা স্বস্তিতেই পৌঁছে। মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই অসিদের তিনটি ফ্রন্ট লাইন উইকেট তুলে নেয় তারা। তবে এরপর শুধু অসি ব্যাটসম্যানদেরই দাপট। পাত্তাই পায়নি ক্যারিবীয় বোলাররা। চা বিরতি পর্যন্ত ভোগস-মার্শ জুটি যোগ করেন আরও ১৩৬ রান। একেবারে সাবলীল ভঙ্গি নিয়ে দাপটের সঙ্গে খেলে দলকে মাঠের নিয়ন্ত্রণ এনে দেন এ দু’জন। দিনের শেষ বল পর্যন্ত ক্যারিবীয় বোলারদের ব্যর্থতার হতাশায় ভুগতে হয়েছে। ফিল্ডাররা শুধু বল কুড়িয়ে গেছেন। রানের ফুলঝুরি ছুটিয়েছেন ভোগস-মার্শ। কোনভাবেই তাদের জুটিতে চিড় ধরানো যায়নি। চা বিরতির আগেই মাত্র ১০০ বল খেলে ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক পূর্ণ করেন ভোগস। এটি হোবার্টের দ্রুততম টেস্ট সেঞ্চুরি। এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে এ্যাডাম গিলক্রিস্ট ১১০ বলে শতক হাঁকিয়েছিলেন এ ভেন্যুতে। ভোগস যখন ক্যারিবীয় বোলারদের তুলোধুনো করছিলেন ওই সময়টাতে মার্শ অনেকটাই গুটিয়ে রেখেছিলেন নিজেকে। তবে পুরো দুই সেশন নির্বিঘেœ খেলে প্রথম দিন তারা শেষ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেই। হোবার্টে একদিনে এর আগে ৪১১ রান তোলার রেকর্ড ছিল। ২০০১-০২ মৌসুমে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেবারও অসিরা এ রান করেছিল। এবার সেটাকে ছাড়িয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া ৩ উইকেটে ৪৩৮ রান তুলে। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে যত টেস্ট হয়েছে প্রথম দিনেই হওয়া সর্বাধিক রান হওয়ার তালিকায় এটির অবস্থান অবশ্য তিনে। শেষ সেশনে শতক পেয়ে যান মার্শও। দীর্ঘ ১৮ ইনিংস পর তিনি আবারও টেস্ট সেঞ্চুরি পেলেন। গত বছর সেঞ্চুরিয়ানে ১৪৮ রান করেছিলেন দীর্ঘদিন ব্যাটে বড় ইনিংস না পাওয়া এ ক্রিকেটার। অবশেষে সেটা কাটিয়েছেন এবং ক্যারিয়ারে ১০০০ টেস্ট রানও পূর্ণ করেছেন এর মাধ্যমে।
×