ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আজ সপ্তাহ উদ্বোধন

বিদ্যুত সংযোগ পেতে ঘুষ না দিয়ে ধৈর্য ধরার আহ্বান

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ১০ ডিসেম্বর ২০১৫

বিদ্যুত সংযোগ পেতে ঘুষ না দিয়ে ধৈর্য ধরার আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নতুন বিদ্যুত সংযোগ পেতে উৎকোচ না দিয়ে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানানো হলো। বিদ্যুত জ্বালানি সপ্তাহ উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ধৈর্য ধারণের এই আহ্বান জানানো হয়। সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকা-ের প্রচারের পাশাপাশি বিদ্যুত ব্যবহারে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে বিদ্যুত সপ্তাহের আয়োজন করা হয়। তবে এবার বিদ্যুতের সঙ্গে জ্বালানি খাতকে এই সপ্তাহের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এবারের বিদ্যুত জ্বালানি সপ্তাহের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘আলোর পথে আরও এগিয়ে।’ রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ আজ বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সপ্তাহের উদ্বোধন করবেন। বিদ্যুত জ্বালানি সপ্তাহ উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নতুন সংযোগে উৎকোচ গ্রহণ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিনকে উত্তর দিতে বলেন। আরইবি চেয়ারম্যান এ বিষয়ে বলেন এই অভিযোগ সত্য। কিছু কিছু জায়গা থেকে আমাদের কাছে এই অভিযোগ আসছে। আমরা কারও কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। সংযোগ নিতে টাকা চাইছে ঠিকাদার। এর সঙ্গে আরইবির লোক জড়িত রয়েছে। স্থানীয়ভাবে একটি দালাল চক্রও গড়ে উঠেছে। তিনি বলেন, আমরা গতমাসে তিন লাখ ৯২ হাজার বিদ্যুত সংযোগ দিয়েছি। প্রত্যেকে বিদ্যুত পাবেন। সকলকে সংযোগ দেয়া হবে। কাজেই আমরা সকলকে বলব উৎকোচ না দিয়ে ধৈর্য ধরুন। এমনিতেই সংযোগ পাবেন। বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বিদ্যুত খাতে মাঠপর্যায়ে দুর্নীতির অভিযোগ অনেক। তাই আগামী বছর মাঠপর্যায় থেকে দুর্নীতি দূর করার উদ্যোগ নেয়া হবে। এটাই আমাদের জন্য এবার বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি জানান, টেকসই ও সাশ্রয়ী বিদ্যুত উৎপাদনকে বাংলাদেশ বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি দূর করার পাশাপাশি সাশ্রয়ী ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত দেয়াও আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। গ্রাহকদের সাশ্রয়ী ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত দেয়ার লক্ষ্যে সরকার ২০২১ সাল পর্যন্ত পরিকল্পনা করেছে। তেলভিত্তিক বেশি দামের বিদ্যুত থেকে সরে এসে বড় বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, ভারতীয় কোম্পানি আদানী ও রিলায়েন্স বাংলাদেশ বিনিয়োগের প্রস্তাব দিলেও তারা বার বার তাদের প্রস্তাব পরিবর্তন করায় সময় চলে যাচ্ছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তাদের প্রস্তাবগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকার ইতিবাচক মনোভাব দেখাবে। এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিল্পে বিদ্যুত দেয়া হবে না এটা ঠিক নয়। তবে বিচ্ছিন্নভাবে সংযোগ না দিয়ে পরিকল্পিত শিল্প এলাকায় বিদ্যুত দেয়ার ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে চাহিদার তুলনায় বেশি বিদ্যুত উৎপাদন করা হচ্ছে। ফলে বিদ্যুতের কোন সমস্যা নেই। তাই সব ধরনের সংযোগই দেয়া হচ্ছে। ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্রের বিষয়ে তিনি বলেন, রেন্টালের মেয়াদ বাড়ানো হলেও তা খুব অল্প সময়ের জন্য বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া তাদের বিদ্যুতের দামও অনেক কমিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এতদিন সরকার বিদ্যুত উৎপাদনের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছিল এখন উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে বিতরণ ও সঞ্চালনের বিষয়েও পরিকল্পিত উদ্যোগ নিয়েছে। এবারের বিদ্যুত-জ্বালানি সপ্তাহ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এতে ৩০৩টি স্টল আছে, কোম্পানির সংখ্যা ১৬০টি। মেলা উপলক্ষে চারটি সেমিনারও করা হবে। যার দুইটি বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে, বাকি দুইটি বিদ্যুত ভবনে করা হবে। প্রথমবারের মতো মেলায় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানও অংশ নিচ্ছে। তিনদিনব্যাপী আয়োজিত মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে। সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রতিমন্ত্রী বিদ্যুত বিভাগের নতুন ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিদ্যুত সচিব মনোয়ার ইসলাম, বিদ্যুত বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আহমেদ কায়কাউস, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহম্মদ হোসেইন, পিডিবির চেয়ারম্যান কেএম হাসান উপস্থিত ছিলেন।
×