ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চট্টগ্রাম সরকারী মহিলা কলেজ

হয়রানির প্রতিবাদে অবস্থান ধর্মঘট, অবরোধ

প্রকাশিত: ০৭:১২, ৭ ডিসেম্বর ২০১৫

হয়রানির প্রতিবাদে অবস্থান ধর্মঘট, অবরোধ

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম সরকারী মহিলা কলেজের ডিগ্রী পাস পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণের ব্যাংক সিøপ ঠেকিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে অধ্যক্ষের দফতরের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছে বিক্ষুব্ধ হাজারো শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের দাবি নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ নিতে না দিয়ে চক্রান্তের মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ফায়দা লোটার চেষ্টা করেছিল পরীক্ষা কমিটির শিক্ষকরা। রবিবার সকাল ৯টা থেকে সোয়া ১১টা পর্যন্ত সমাধা না পেয়ে অবশেষে কলেজের সামনের সড়কে আধঘণ্টার ব্যারিকেড দেয় তারা। পরে খুলশী থানা পুলিশ ও শিক্ষকরা ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা ব্যারিকেড তুলে নেয়। পরে শিক্ষক জাহিদ শিক্ষার্থীদের মামলা ঠুকে হেনস্থা করার ভয়ও দেখান। অভিযোগ রয়েছে, গত ২৯ অক্টোবর থেকে ১৯ নবেম্বর পর্যন্ত ডিগ্রী পাস কোর্সের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষা নেয়া শুরু করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। সে অনুযায়ী দ্বিতীয় বর্ষের ৪টি ও তৃতীয় বর্ষের ৭টি পরীক্ষা নেয়ার কথা ছিল। ৬টি পরীক্ষা হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ নোটিস বোর্ডে একটি বিজ্ঞপ্তি সাঁটিয়ে দেয়। এ বিজ্ঞপ্তিতে যারা পরীক্ষায় অনুপস্থিত থাকবে তাদের সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখপূর্বক পরীক্ষা কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে উপস্থিত পরীক্ষার্থীদের বিষয়ে কৃতকার্য বা অকৃতকার্য বিষয়ে কোন কিছুই বলা হয়নি। অথচ, গত ২ ডিসেম্বর বুধবার নীলনক্সার একটি ফলাফল বিবরণী নোটিস বোর্ডে সাঁটিয়ে দিয়ে বিষয়ভিত্তিক জরিমানার মাধ্যমে অর্থ আদায়ের পরিকল্পনা করে পরীক্ষা কমিটি। নোটিস বোর্ডের সাঁটানো হয় শুধু এক বিষয়ে পাস করা শিক্ষার্থীদের তালিকা। কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীকে চূড়ান্ত ফরম পূরণে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার নির্দেশনা দেয়া হয়নি অন লাইনে ফরম পূরণের ক্ষেত্রে। বিষয়টিকে পুঁজি করে কমিটি অকৃতকার্য ও অনুপস্থিত পরীক্ষার্থীদের টার্গেট করে অবৈধভাবে অর্থ আদায়ের কৌশল নিয়েছে। এরই ভিত্তিতে গত শনিবার দ্বিতীয় বর্ষের এবং রবিবার তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের প্রায় ৯০ ভাগ শিক্ষার্থীকে সোনালী সেবা সিøপ আটকিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম পূরণ অসম্পূর্ণ রেখে দেয়। কারণ, এ সিøপ ব্যতীত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত ফি জমা দেয়ার নিয়ম নেই। কিন্তু ব্যারিকেড তুলে নেয়ার পর পুনরায় পুলিশ, শিক্ষক জাহিদ ও মহিলা শিক্ষক বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তোমরা রাস্তার মেয়ে, রাস্তায় শুয়ে থাকতে পার, তোমাদের অভিভাবককে নিয়ে আসার পর ক্ষমা চাইলেও পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে দেয়া হবে না।’ একপর্যায়ে মামলার হুমকিও দেন শিক্ষক জাহিদ। মহিলা পুলিশ ডেকে এনে থানায় তুলে দেয়ার হুমকিও দেয়া হয়। পরে অধ্যক্ষের কক্ষের সামনে থাকা শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করলেও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ছিল অনড়। এ ব্যাপারে কলেজ অধ্যক্ষ শাহিদা ইসলাম জানান, পরীক্ষায় অনুপস্থিত বা অকৃতকার্য কোন ধরনের শিক্ষার্থীকে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হবে না। কিন্তু নোটিসে শুধু অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি নিজেকে মিডিয়া কর্মীর ভাই বোন দাবি করে আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারী শিক্ষার্থীদের আচরণ সম্পর্কেও প্রশ্ন তোলেন। সে সঙ্গে নির্বাচনী পরীক্ষা চলাকালে একঘণ্টা পর শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষ থেকে বের করে দেয়া শিক্ষকদের তালিকা এবং কক্ষ নম্বর জানানোর জন্য প্রতিবেদককে পরামর্শ দেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রবিবার সকাল ৯টা থেকে কলেজের অফিস কক্ষের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে সোনালী সেবা স্লিপ নেয়ার চেষ্টা করে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু শিক্ষকরা শুধু যারা এক বিষয়ে পাস করেছে তাদের স্লিপ দিয়ে বাকিদের ১০ ডিসেম্বরের পরে যোগাযোগের জন্য বলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয় শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে বাগ্বিত-ায় মেতে উঠে শিক্ষার্থীরা।
×