ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দলীয় প্রধান ও এমপিরা আইন ভাঙবেন না ॥ আশা নির্বাচন কমিশনারের

প্রচারের ক্ষেত্রে যে কেউ বিধি ভাঙলে ব্যবস্থা নেবে ইসি

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৭ ডিসেম্বর ২০১৫

প্রচারের ক্ষেত্রে যে কেউ বিধি ভাঙলে ব্যবস্থা নেবে ইসি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রধানরা প্রচারের ক্ষেত্রে আইন ভাঙলে ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন। রবিবার নির্বাচন কমিশনার মোঃ শাহনেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের কথা হচ্ছে- অনুগ্রহ করে আইন ভাঙবেন না। সে যেই হোক, বিধি ভঙ্গ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে, যা সুখকর হবে না। সংসদের বাইরে রয়েছে এমন দলীয় প্রধানদের পৌর নির্বাচনে প্রচারের সুযোগ পাচ্ছেন। তিনি সরকারী সুবিধাভোগীদের নির্বাচনের প্রচারে না যেতে অনুরোধ করেন এবং যারা সুবিধাভোগী নন, তাদেরও বিধি অনুসরণ করার আহ্বান জানান। সরকারী সুবিধাভোগী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, মন্ত্রী, সাংসদ ও সিটি মেয়রদের পৌর নির্বাচনে প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে অংশ নেয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আইনে রয়েছে। তবে দলীয় প্রধানদের প্রচারে বাধা নেই। শেখ হাসিনা দলীয় প্রধান হয়েও প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকায় এবার পৌর ভোটের প্রচারে যেতে পারছেন না। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের পদে থাকা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। তবে সংসদের বাইরে থাকায় সরকারী কোন সুবিধা নিচ্ছেন না বলে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ভোটের প্রচারে বাধা নেই। বিএনপি নেত্রীর বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মোঃ শাহনেওয়াজ বলেন, পথসভা করতে বাধা নেই। কিন্তু পথসভা যেন শোভাযাত্রা বা জনসভায় পরিণত না হয়। ইসিকে যেন ‘বিব্রতকর বা অস্বস্তিকর’ সিদ্ধান্ত নিতে না হয়, সে বিষয়ে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি। নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, পৌর ভোটের প্রচারে পথসভা বা ঘরোয়া সভা করতে হলে অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে। বিধিভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা ছয় মাসের দ- বা উভয় দ- হতে পারে। আর দল বিধি ভঙ্গ করলেও সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে নির্বাচনী আইনে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর ২৩৪ পৌরসভায় ভোট হবে। ইতোমধ্যে ১৩ হাজারেরও বেশি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন প্রার্থীরা। ১৩ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় শেষ হবে। এর পরই প্রতীক নিয়ে প্রচারে নামবেন প্রার্থীরা। শাহনেওয়াজ বলেন, ইতোমধ্যে অনেক সাংসদ প্রচারে নামার চেষ্টা করছেন বলে ইসি খবর পাচ্ছে। তবে দলীয়ভাবে এখনও কারও বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আসেনি। তিনি বলেন, আপনারা আইন প্রণেতা, আপনারা আইন ভাঙবেন না। এমন কিছু করবেন না যাতে আমরা অপ্রস্তুত ও বিব্রতকর অবস্থায় পড়ি। বিধি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া আছে। এর পরও ইসিতে কোন অভিযোগ এলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন কর্মকর্তা বা আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য ইসির নির্দেশনা না মানলে বা মাঠ পর্যায়ে কাজে অবহেলা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান শাহনেওয়াজ। ইসি কর্মকর্তারা জানান, মন্ত্রী-এমপিসহ সংশ্লিষ্ট সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের আচরণবিধি প্রতিপালনের বিষয়ে স্মরণ করিয়ে দিতে স্পীকার ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে শাহনেওয়াজ বলেন, কেউ ইচ্ছে করে ভোট থেকে সরে দাঁড়ালে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা সুন্দর নির্বাচন করতে চাই। কেউ যাতে সরে যেতে বাধ্য না হয় সে বিষয়ে সজাগ রয়েছি; সে ব্যবস্থাও নেব। কিন্তু ইচ্ছা করে সরে গেলে করার কিছু থাকবে না। পৌর ভোটে কেউ যেন হস্তক্ষেপ না করে সে বিষয়েও সবাইকে সতর্ক করেন এ নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ। তিনি বলেন, কেউ যেন ভোটে হস্তক্ষেপ না করেন। স্বপ্রণোদিত হয়ে পুলিশ বা প্রশাসনের কেউ যেন বাড়াবাড়ি নাক না গলায়। গত সিটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে অন্য কেউ যেন হস্তক্ষেপ না করে সে ব্যবস্থা নিয়েছি।
×