ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বন্যার রবীন্দ্রসঙ্গীতে মুগ্ধ চট্টগ্রামের দর্শক-শ্রোতা

প্রকাশিত: ০৩:৩৩, ৫ ডিসেম্বর ২০১৫

বন্যার রবীন্দ্রসঙ্গীতে মুগ্ধ চট্টগ্রামের দর্শক-শ্রোতা

সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ দেশবরেণ্য শিল্পী রেজোয়ানা চৌধুরী বন্যার রবীন্দ্রনাথের গান ও কথায় মুগ্ধ হলো চট্টগ্রামের দর্শক শ্রোতারা। শিল্পী আর ভক্তদের এমন মেলবন্ধনের চিত্র দেখা গেল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে। ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ‘সেলিব্রেটিং লাইফ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে গান-কথামালায় জীবনকে উদযাপনের বিভিন্ন দিকগুলো ফুটিয়ে তোলেন রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রোজোয়ানা চৌধুরী বন্যা। বন্যা ছাড়াও এতে তরুণ প্রজন্মের প্রতিভা হিসেবে নিজেদের পরিবেশনা তুলে ধরে চট্টগ্রামের জনপ্রিয় ব্যান্ডদল তীরন্দাজ। মূল অনুষ্ঠান শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবরার আনোয়ার, সেলিব্রেটিং লাইফ ফেস্টিভ্যালের কো-অর্ডিনেটর রাফি হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে গানের ফাঁকে কথামালায় শিল্পী বন্যা তুলে ধরেন রবীন্দ্রনাথের কৈশোর, রবীন্দ্রনাথ হয়ে ওঠা, দেশপ্রেম, গীতাঞ্জলি, অনুধাবনের মতো অনন্য বিষয়গুলো। এ সময় রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা বলেন, জীবনকে উদযাপন ভাবনাটায় নতুনত্ব আছে। মানুষ তার জীবনে নানা সমস্যা-সঙ্কটে জর্জরিত। জীবনটাকে ভালভাবে উপভোগ করা যায় না। তাই এ ধরনের একটি ভাবনায় তরুণ প্রজন্মের সম্পৃক্ততা খুবই আশার একটি বিষয়। তিনি বলেন, ডিসেম্বর মাস বিজয়ের মাস। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত, মা বোনদের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এ মাসে আমরা পেয়েছি বিজয়ের লাল সূর্য। রবীন্দ্রনাথও তার গানে দেশপ্রেমের বিষয়টি সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। তবে তার গানে মাটি-মানুষকে ভালবাসার তুলনায় আত্মশুদ্ধির বিষয়টি বেশি ফুটে উঠেছে। কেননা রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস করতেন আত্মশুদ্ধিতে উদ্বুদ্ধ হতে পারলেই নিঃস্বার্থভাবে দেশকে ভালবাসা সম্ভব। অনুষ্ঠানের শুরুতে শিল্পী গেয়ে ওঠেন ‘ওগো ঘুম ভাঙানিয়া, তোমায় গান শোনাবো’ গানটি। ততক্ষণে দর্শকরাও নড়েচড়ে বসেন। প্রিয় শিল্পীর গানের সঙ্গে সুর মেলালেন তারাও। হাত নেড়ে শিল্পীকে উৎসাহ দিলেন। এভাবেই ভক্তদের সঙ্গে নিয়ে একে একে গাইলেন ‘সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে’, ‘ও আমার দেশের মাটি’, ‘দয়া দিয়ে হবে রে মোর জীবন গতি’, ‘তোমার খোলা হাওয়া’, ‘তাই তোমার আনন্দ, আমার পর’। ভক্তদের অনুরোধে বন্যা শোনালেন ‘ভেঙে মোর ঘরের চাবি’, ‘ওঠো ওঠো রে...’, ‘আমি চিনি গো চিনি তোমারে ওগো বিদেশিনী’। গান যেন শেষ হয়েও যেন হলো না শেষ। দর্শকদের অনুরোধে শিল্পীকে আবারও গাইতে হলো ‘পুরনো সেই দিনের কথা’ গানটি। তারপরও যেন মন ভরে না। বন্যার সুরের মূর্ছনায় বিমোহিত শ্রোতাদের জন্য আবারও গাইতে হলো ‘পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে’। প্রিয়শিল্পীর গান উপভোগ করতে আসা এক শ্রোতা বলেন, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা আমাদের দেশে রবীন্দ্রসঙ্গীতের একজন ব্র্যান্ড। রবীন্দ্রসঙ্গীত মানে মনে হয় বন্যার গান। এখানে এসেও সে বিষয়টি বার বার উপলব্ধি করছি। গান শোনার পর অনুভূতি ব্যক্ত করে আরেক শ্রোতা বলেন, অসাধারণ একটি সঙ্গীত সন্ধ্যা উপভোগ করলাম। বন্যার মতো শুদ্ধ সঙ্গীতে পারদর্শী শিল্পীদের গান উপভোগের সুযোগ এলে খুব একটা পাওয়া যায় না। অনেকদিন পর রবীন্দ্রনাথের গান শুদ্ধভাবে শুনতে পারলাম। যতক্ষণ ছিলাম পুরোটা সময়ই উপভোগ করেছি।
×