ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে শীর্ষে বরিশাল

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ৪ ডিসেম্বর ২০১৫

রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে শীর্ষে বরিশাল

মিথুন আশরাফ, চট্টগ্রাম থেকে ॥ প্রথম লেগে যেমন হয়েছে, ফিরতি লেগেও ঠিক একই অবস্থা হয়েছে। বরিশাল বুলসের কাছে হেরেছে রংপুর রাইডার্স। প্রথম লেগে ১৩ রানে হারের পর ফিরতি লেগে বৃষ্টি আইনে ৬ উইকেটের হার হয়েছে সাকিব আল হাসানের দল রংপুরের। সেই সঙ্গে পয়েন্ট তালিকাতেও এ ম্যাচের আগে দু’দলেরই সমান ৮ পয়েন্ট থাকলেও এখন বরিশাল এগিয়ে গেল। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ম্যাচ শুরুর আগে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষেও চলে গেল বরিশাল। ম্যাচে টস জিতে বরিশাল আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্তই নেয়। কুয়াচ্ছন্ন দিনটিতে রংপুর ইনিংসে অন্ধকারই লেগে থাকে। ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১০৪ রানের বেশি করতে পারেনি রংপুর। এতটাই খারাপ অবস্থা হয়েছে রংপুরের, চারজন ব্যাটসম্যান মাত্র দুই অংকের ঘরে পৌঁছাতে পেরেছেন। এরমধ্যে ওপেনার জহুরুল ইসলাম অমি সর্বোচ্চ ২৪ রান করতে পারেন। ৩ উইকেট নেয়া আল আমিন হোসেন ও ২ উইকেট করে নেয়া মোহাম্মদ সামি ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের রায়াড এমরিটই রংপুরের ইনিংসে ধস নামিয়ে দেন। এ রান অতিক্রম করা খুব কঠিন কিছু নয় তা বোঝাই যায়। কিন্তু টার্গেট আর ১০৫ রান থাকে না। বরিশাল যখন ১৯ রানে থাকে তখন বৃষ্টি শুরু হয়। খেলা বন্ধ থাকে ৫০ মিনিট। তাতে করে খেলা বৃষ্টি আইনেই চলে যায়। বল ও রান দুটিতেই প্রভাব পড়ে। বরিশালের সামনে জিততে ১৩ ওভারে ৭৫ রানের টার্গেট পড়ে। যেহেতু আগেই ১৯ রান করে বরিশাল, আর ৩.৩ ওভার খেলে তাই ৯.৩ ওভারে ৫৭ বলে ৫৬ রান করার লক্ষ্য বেঁধে দেয়া হয় বরিশালকে। সেই রান ১২.৩ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে তুলে নেয় বরিশাল। ৭৫ রান করে জয় পায়। দলের পক্ষে অপরাজিত ২৩ রান করে মাহমুদুল্লাহ। শুরুতেই দ্বিতীয় ওভারে যে মোহাম্মদ নবীর ৪ বলে ৩টি বাউন্ডারি মারেন রনি, তাতেই বোঝা যায় এই দিনটিও বরিশালেরই হতে চলেছে। ওয়াহাব রিয়াজের করা তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে এবারের বিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান এভিন লুইস যখন মিড উইকেট দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকান, তখন মনে হয় আবার বোধ হয় তার দিন হলো। পরের বলেই এলবিডাবলিউ হয়ে যান লুইস (৪)। ৩ ওভারে দল ১৯ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে। চতুর্থ ওভারে তৃতীয় বলটি যখন হয় তখনই বৃষ্টি শুরু হয়। দিনভরই কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকে আকাশ। এর সঙ্গে আবার বৃষ্টি যোগ হয়। তাতে করে খেলা বন্ধ থাকে প্রায় ১ ঘণ্টা। যখন খেলা শুরু হয় বল আর রান যেন সমপর্যায়েই থাকে। তাতে করে জয় পেতে বরিশালের খুব সমস্যা হওয়ার কথা নয়, এমনই বোঝা যায়। ৫.৪ ওভারে আরাফাত সানির বলে ছক্কা হাঁকানোর পরের বলেই রনি তালুকদার (২৩) সাজঘরে ফেরেন। ততক্ষণে ৩০ রান হয়ে যায় বরিশালের। এরপর ৪২ রানে মেহেদী মারুফ (৩) আউট হন। চতুর্থ উইকেটে গিয়ে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও নাদিফ চৌধুরী দলকে ৭২ রানে নিয়ে যান। এমন সময়ে নাদিফ (১৬) আউট হলেও জয় পেতে কষ্ট করতে হয়নি বরিশালকে। সেকুগে প্রসন্নকে (১*) সঙ্গে নিয়ে অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (২৩*) দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন। ৩ বল বাকি থাকতে জয় পায় বরিশাল। সেই সঙ্গে দলকে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষেও তুলেন। শুরু থেকেই বিপত্তিতে পড়ে থাকে রংপুর। নিয়মিত বিরতিতে উইকেটও পড়তে থাকে। একটি মাত্র জুটি ২০ রানের বেশি হয়। তাও আবার অষ্টম উইকেটে গিয়ে আল আমিন জুনিয়র ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শেষে রংপুরের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা ওয়াহাব রিয়াজ মিলে এ জুটি গড়েন। তাতেই বোঝা যায় কতটা বিপদে ছিল রংপুর। ৬৫ রানেই রংপুরের ৭ উইকেটের পতন ঘটে। এ সময়ের মধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ সব উইকেট হারিয়ে বসে দলটি। সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মোঃ মিঠুন, দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান করা জহুরুল ইসলাম, থিসারা পেরেরা, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২২ রান করা মিসবাহ উল হক ও মোহাম্মদ নবী আউট হন। অষ্টম উইকেটে গিয়ে আল আমিন ও ওয়াহাব মিলে যে জুটিটি গড়েন সেটিতে ভর করেই ১০০ রানের নিচে করার যে সম্ভাবনা তা দূর হয়। ১০০ রান থেকে দলকে ১২ রানের দূরত্বে রেখে ৮৮ রানে আল আমিন জুনিয়র ও ৯৯ রানে ওয়াহাবও আউট হয়ে যান। শেষে গিয়ে মুক্তার ৯ রান যোগ করে দলকে ১০৪ রানে নিয়ে যান। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই পেসার আল আমিন কাজের কাজটি করেন। প্রথম বলে সৌম্যকে ও ওভারের শেষ বলে সাকিবকে আউট করে দেন। সেই যে ভরাডুবি শুরু হয় তা শেষ পর্যন্ত বজায় থাকে। হারেও রংপুর।
×