জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ মার্শাল এখন ঝুঁকির মুখে রয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রভাব এখন দ্বীপটিতে পড়তে শুরু করেছে। সেখানকার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাও এখন আর আগের মতো নেই।
লিনবার আনেজ নামে ৩০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে দেখা গেল বাড়ির সামনে কংক্রিটের টুকরো ফেলে জোয়ারের পানি আটকানোর আশায় অস্থায়ী দেয়াল তৈরি করছেন। সাগরের পানির কাছে অবশ্য এটি কিছুই নয়। তবু কোন রকমে আত্মরক্ষার চেষ্টা। দ্বীপটির রাস্তাঘাটের অবস্থা এখন ভাল নয়। সাগরের লোনা পানি, কাদা ও পয়ঃবর্জ্য মিলে রাস্তাঘাটের অবস্থা একেবারে শোচনীয়। তিনি এখন আরও কয়েকজনকে নিয়ে একটি গ্রুপ করেছেন। ছুটির দিনটি ছাড়া প্রতিটি দিন তারা সাগরের পানি আটকাতে ব্যস্ত থাকেন। তিনি বলছিলেন, ‘আমি জানি এ এক ধরনের উন্মাদনা। কিন্তু এ ছাড়া আমাদের হাতে আর কোন বিকল্প নেই।’ বাবা-মা, ভাইবোন ও সন্তান নিয়ে তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ১৩। তিনি চার রুমের এক বাড়িতে থাকেন। তার বাড়িটি একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়। তিনি বলছিলেন, ‘আমার মনে হয় আমরা পানির নিচে বাস করছি।’
লন্ডন, প্যারিস, নিউইয়র্ক বা ওয়াশিংটনের কোন বিলাসবহুল হোটেলে বসে মার্শাল দ্বীপের এই নির্মম বাস্তবতা উপলব্ধি করা যাবে না। মার্শাল আইল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী টনি ডিব্রাম বলছিলেন, আনেজের মতো লোকদের অভিজ্ঞতা প্রভাবশালী নীতিনির্ধারকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিতে পারে। জাতিসংঘের উদ্যোগে প্যারিসে চলমান জলবায়ু সম্মেলন সম্পর্কে তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেছেন, প্যারিস সম্মেলনে পশ্চিমা আলোচকদের মনোযোগ কেবল অর্থ বরাদ্দের দিকেই নিবদ্ধ রয়েছে। কিন্তু সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এখন নিম্ন এলাকার বহু অংশের মানুষের অস্তিত্ব হুমকির মুখে। যেমন বাংলাদেশের কথা এখানে বলা হয়েছে। ২০৫০ সালের মধ্যে দেশটির ১৭ শতাংশ সাগর গর্ভে তলিয়ে যেতে পারে। এর ফলে ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। তবে এদিক দিয়ে ৭০ হাজার লোক অধ্যুষিত মার্শাল দ্বীপের বাসিন্দারা কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে। দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ সামরিক সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৮৬ সালে সম্পাদিত এক চুক্তি অনুযায়ী দ্বীপ দেশটির বাসিন্দারা যে কোন প্রাকৃতিক বা হুমকির মুখে নিখরচায় যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হতে পারবে। -ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: