ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এবার প্রতিশোধ নিল কুমিল্লা

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ৩ ডিসেম্বর ২০১৫

এবার প্রতিশোধ নিল কুমিল্লা

স্পোর্টস রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে ॥ সবসময় কি আর চাইলে একই রকম হয়। মিরপুরে চিটাগাং ভাইকিংসের বিপক্ষে ম্যাচে দলের বেহাল দশায় আগেই ব্যাট হাতে নামেন। ম্যাচই জিতিয়ে দেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। বুধবার ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষেও আগে নামেন। কিন্তু চিটাগাংয়ের বিপক্ষে অপরাজিত ৫৬ রান করতে পারলেও ঢাকার বিপক্ষে ২ রানের বেশি করতে পারেননি মাশরাফি। দলও খুব বেশি রান স্কোরবোর্ডে জমা করতে পারেনি। এরপরও আসহার জাইদি যে অপরাজিত ৪৫ রান করে দলকে ১৪১ রানে নিয়ে যান, তাতেই ১০ রানের জয় আসে কুমিল্লার। সেই সঙ্গে বিপিএলের তৃতীয় আসরে প্রথম লেগে যে ঢাকার কাছে ৬ উইকেটের হার হয়েছিল কুমিল্লার, তার প্রতিশোধও নেয়া হয়ে যায়। ম্যাচে টস জিতে ঢাকা ডায়নামাইটস ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। আগে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে পারেনি কুমিল্লা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শেষে বাংলাদেশে এসে কুমিল্লা দলে খেলেন পাকিস্তানের শোয়েব মালিক। কিন্তু কিছুই করতে পারেননি। মাত্র ৮ রানে আউট হয়ে যান। শুরুতে লিটন কুমার দাস ৩১ ও পরে আসহার জাইদি অপরাজিত ৪৫ রান করায় ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রান করতে পারে মাশরাফির দল। ফরহাদ রেজা ও ইয়াসির শাহ ২টি করে উইকেট নেন। এ রানই ঢাকার জন্য অনেক বেশি হয়ে যায়। ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে তাই ১৩১ রানের বেশি করতে পারেনি কুমার সাঙ্গাকারার দল ঢাকা। দলের পক্ষে নাসির হোসেন ৩২ ও সাঙ্গাকারা ৩০ রান করেন। আবু হায়দার রনি ২ উইকেট নেন। বুধবারের ম্যাচটির আগে দুইদলই পাঁচটি করে ম্যাচ খেলেছিল। ৩ জয়ে দুই দলেরই ৬ পয়েন্ট করে ছিল। এখন এগিয়ে গেল কুমিল্লা। পয়েন্ট তালিকার শীর্ষেও উঠে গেল। ৮ পয়েন্ট হয়ে গেল। চট্টগ্রামে ঢাকার শেষ ম্যাচ ছিল এটি। তাতেও হার হল। চট্টগ্রামে ২ ম্যাচ খেলে দু’টিতেই হারল ঢাকা। কুমিল্লার যে রকম অবস্থা হয়, ঢাকারও একই অবস্থা হয়। ৪০ রানে ২ উইকেট হারায় ঢাকা। এরপর সাঙ্গাকারা ও নাসির মিলে দলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেও পারেননি। ৭১ রানে সাঙ্গাকারা আউট হলে দল যেন ছন্নছাড়া হয়ে পড়ে। ৯৯ রানে নাসিরকে যখন আবু হায়দার রনি আউট করে দেন তখন থেকেই ঢাকার হারের পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যায়। এরপরও রায়ান টেন ডয়েশচেট ও ম্যালকম ওয়েলার থাকাতে ভয় থাকে। কিন্তু মাশরাফি এসে দলের ১০২ রানের সময় ডয়েশচেটকে (১১) আউট করে দিয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন খেলা। এমন পরিস্থিতিতে ওয়েলার ও আবুল হাসান রাজু (১২*) খানিকটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেও তা কাজে দেয় না। ১১৯ রানে যেই ওয়েলারকে (১১) আউট করে দেন রনি তখন ম্যাচ পুরোই কুমিল্লার দিকে ঝুঁকে যায়। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ১৩১ রানের বেশি করতেই পারেনি ঢাকা। অথচ কুমিল্লা কিন্তু খুব ভাল রান স্কোরবোর্ডে জমা করতে পারেনি। শুরু থেকেই বিপাকে পড়ে থাকে কুমিল্লা। ৩০ রানে ২ উইকেট হারায়। এরপর ব্যাট হাতে নামেন শোয়েব। এ ব্যাটসম্যান ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় টি২০ ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন। ৫৪ বলে ৭৫ রানের ইনিংস খেলেন। মনে করা হচ্ছিল শোয়েব চট্টগ্রামেও ভাল একটা ইনিংস খেলে দেবেন। কিন্তু ৮ রানের বেশি করতে পারলেন না। ৪৫ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে কুমিল্লা খাদের কিনারায় পড়ে যায়। সেই খাদ থেকে দলকে উদ্ধার করতে নামেন মাশরাফি। ঠিক যেমনটি চিটাগাংয়ের বিপক্ষে মিরপুরে দলের বেহাল দশায় খেলতে নেমেছিলেন। দলকেও জিতিয়েছিলেন। কিন্তু এদিন তাকে কেউ সঙ্গ দিবে দূরে থাক, নিজেই ২ রান করে আউট হয়ে যান। আসহার জাইদি এরপর দলের হাল না ধরলে ১০০ রান করাই যেন কঠিন হয়ে পড়েছিল কুমিল্লার। শেষ পর্যন্ত ২৯ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় অপরাজিত ৪৫ রান করে দলকে ভাল এগিয়ে নেন জাইদি। ৮৮ রানে ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর জাইদিকে ভাল সঙ্গ দেন শুভগত হোম। সপ্তম উইকেটে দু’জন মিলে ৪৫ রানের জুটি গড়েন। যা দলকে এতটা পথ এগিয়ে নিয়ে যায়। ১৩৩ রানে শুভগত আউট হওয়ার আগে ২১ রান করে যান। শেষে জাইদি দলকে ১৪১ রানে নিয়ে যান। বিশেষ করে কুমিল্লার ইনিংসে ১৮তম ওভার থেকেই রান দ্রুত আসতে থাকে। ১৭ ওভারে দলের রান ছিল ৯৪। সেখান থেকে বাকি ৩ ওভারেই ৪৭ রান আসে। জাইদি ও শুভগত মিলে ছক্কা, চার হাঁকাতে থাকেন। ১২২ রান থেকে শেষ ওভারেই ১৪১ রানে চলে যায় কুমিল্লা। ফরহাদ রেজার শেষ ওভারে দুই ছক্কা ও এক চার হাঁকিয়েই ১৬ রান নেন জাইদি। সেখানেই কুমিল্লা অনেকদূর চলে যায়। এ চলে যাওয়া কুমিল্লাকে শেষ পর্যন্ত জয়ও এনে দেয়। প্রথম লেগে ঢাকার কাছে হারের প্রতিশোধও নেয়া হয়ে যায়।
×