ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৪:১১, ১ ডিসেম্বর ২০১৫

ঢাকার দিনরাত

ঢাকার দিন আর রাতের মধ্যে তাপমাত্রার ব্যবধান বেড়ে গেছে কিছুটা অস্বাভাবিক হারে। রাতে রীতিমতো শীত লাগতে শুরু করেছে। সচল সিলিং ফ্যানগুলো ফের বন্ধ। ডিসেম্বর এসে পড়েছে, তবু কম্বল-কাঁথা সব দেরাজ থেকে বের করার ইচ্ছে যেন হচ্ছে না। গত সপ্তাহে রাতে ঢাকার তাপমাত্রা সর্বনিম্ন সতেরো- সাড়ে সতেরো ডিগ্রী সেলসিয়াস ছিল পরপর ক’দিন। আর দিনের বেলা ঊনত্রিশ ছুঁইছুঁই- দস্তুরমতো প্যাঁচপেঁচে গরম। আর সে কী রোদ! এই যে দিন আর রাতের তাপমাত্রার এমন বেজায় ফারাক চলেছে তাতে বিপদে পড়েছে মূলত শিশু ও অল্পবয়সীরাই। খুদে শরীর এই বিষম ওঠানামার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারছে না ঠিকঠাকমতো। ফলে সর্দি ও জ্বরজারি উটকো অতিথি হিসেবে হাজির হয়েছে রাজধানীর বহু ঘরেই। এলো বিজয়ের মাস আজ থেকে শুরু হলো বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। সংগঠন যারা পরিচালনা করেন ইতিমধ্যে তারা বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন আয়োজনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। সত্যি বলতে কি, প্রতি বছরই নতুন নতুন তরুণ বিজয় দিবস আয়োজনে যুক্ত হচ্ছে। তাদের ভেতর মুক্তিযুদ্ধের সারসত্যটুকু পৌঁছে দেয়া খুব জরুরী। শুধু একখানা কবিতা পাঠ নয়, শুধু মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ নয়, তার সঙ্গে যুক্ত করা দরকার আজকের প্রেক্ষাপট এবং স্বাধীনতার শত্রুমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার অঙ্গীকার। বিজয়ের তাৎপর্যটুকু নিছক দিবস উদযাপনের আনন্দের মধ্যেই যেন ফুরিয়ে না যায়। প্রসঙ্গ হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ এখনও অনেকের জন্য অস্বস্তিকর। সমাজের আরেকটি বাস্তবতা হলো, প্রসঙ্গটির উত্থাপন কিছুটা ফ্যাশনে দাঁড়িয়ে গেছে। মুখে অনেকে বলেন বটে মুক্তিযুদ্ধের কথা, কিন্তু অন্তরে তারা লালন করেন মুক্তিযুদ্ধের ঠিক বিপরীত ধারণাটিই। মুক্তিযুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধা থাকলে কারও পক্ষেই তা নিয়ে সুবিধাবাদিতা ও স্বার্থপরতার পথে হাঁটা সম্ভব নয়; দেশের উন্নয়নের কথা বলে দেশকে রসাতলে পৌঁছে দিয়ে সঙ্কীর্ণ আত্মোন্নয়ন অসম্ভব। এটা অনস্বীকার্য যে দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য একাত্তরের আবেগ জরুরী। ওই একটি বছরেই বাঙালীর দেশপ্রেম চূড়ান্তস্পর্শী হয়েছিল। খাঁটি দেশপ্রেম ছাড়া দেশের ও দেশের মানুষের উন্নয়নের লক্ষ্যে ভূমিকা রাখা অসম্ভব। সেজন্যই মুক্তিযুদ্ধকালীন মানসিকতার নবায়ন প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধকালে যারা ছিল কৈশোরের কোঠায়, আজ তারাই প্রায় প্রৌঢ়ত্বের দরজায়। নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের আলো যারা পৌঁছে দেবেন তাদের সংখ্যাও ক্রমশ কমে আসছে। এরকম একটি পরিস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক আলোচনার কোন বিকল্প নেই। রাতভর সুরের ধারায় রাতভর সুরের ধারায় অবগাহনের সময় আবার ফিরে এসেছে। প্রতি বছর নবেম্বর-ডিসেম্বর মাসে আর্মি স্টেডিয়ামে পাঁচ দিনব্যাপী উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উৎসব হয়ে থাকে। গত কয়েক বছর ধরে এটা সঙ্গীতপ্রেমী নাগরিকদের বার্ষিক উৎসবে পরিণত হয়েছে। তারই অনুসরণে এবার পক্ষকাল আগে একই ভেন্যুতে ফোক ফেস্টিভ্যাল বা লোকসঙ্গীত উৎসবও হলো সফলভাবে। এ ধরনের উৎসবের জন্য শিক্ষিত সঙ্গীতপ্রেমী মানুষের মন যে তৃষ্ণার্ত থাকে তার দৃষ্টান্ত মিলেছে। বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আয়োজিত উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত উৎসবে ভারতের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক খ্যাতিমান সঙ্গীতজ্ঞ অংশ নেন। প্রতি বছরই নতুন নতুন জগৎখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী উৎসবে যুক্ত হচ্ছেন। হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, রশিদ খান, অজয় চক্রবর্তী ও তার কন্যা কৌশিকী প্রায় নিয়মিতই আসছেন এ উৎসবে। এবার নতুন এলেন ওস্তাদ জাকির হোসেন, শুভা মুডগালসহ কয়েক জন। বিদুষী বোম্বে জয়শ্রীর পরিবেশনা শুনেছিলাম দু’বছর আগে। প্রথম রাতটি জাগা তারই জন্যে। যখন শুরু করলেন ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি পৌনে চারটা। শিশিরঝরা শীতার্ত রাতে খোলা আকাশের নিচে, ঠাণ্ডা গ্যালারিতেও হাজারো মানুষ। মঞ্চের সামনে যেখানে কয়েক হাজার চেয়ার পাতা রয়েছে সেখানে অত রাতে প্রায় অর্ধেকটা পূর্ণ থাকা মানেও বিরাট ব্যাপার। কর্নাটিক উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের এই গুণী শিল্পী লাইফ অব পাই চলচ্চিত্রের ‘পাইস লালাবাই’ গানটির জন্য ২০১৩ সালে অস্কার মনোনয়ন পেয়েছিলেন। চেন্নাইয়ে অবহেলিত দরিদ্র এবং অটিস্টিক শিশুদের সপ্তাহে এক দিন করে সঙ্গীত শেখান। জয়শ্রী বলেন, ‘সমুদ্রসমান কাজে এগুলো বিন্দুও নয়। আরও অনেক কাজ করার আছে।’ এমনি এমনি তো আর বড় মাপের শিল্পী হওয়া যায় না! এবার উৎসব ব্যবস্থাপনায় আরেকটু পেশাদারিত্ব দেখছি। কঠোরভাবে নিরাপত্তার দিকটি খেয়াল রাখা হচ্ছে। ব্যাগ নিয়ে ঢোকার সুযোগ নেই। কফি পানের আয়োজন বেড়েছে। ফুড কোর্টে সব সময়ই বসে থাকছে মানুষ, কারও কারও সেটাই প্রিয় স্থান। অন্যেরা তাই খাবার হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এবার বাইরে ইতালিয়ান হোটেল বসতে দেয়া হয়নি। ভেতরে না খেয়ে উপায় নেই। তাই খাবারের মান নিশ্চিত করতে পারে কর্তৃপক্ষ। মোবাইলে ব্যালান্স ফুরিয়ে গেলে ফ্ল্যাক্সিলোডের মতো জরুরী প্রয়োজন পূরণের জন্য আশপাশে নেই ব্যবস্থা। বাসের মধ্যে অল্পবিস্তর পথেঘাটে লোকের সামনে সরাসরি হাতটা বাড়িয়ে না দিয়ে গানটান শুনিয়ে কিছুটা মনোরঞ্জন করে সাহায্য প্রার্থনা করা অতটা দোষের বলে মনে হয় না। বাসের ভেতর দোতারা বাজিয়ে গান শোনানোর মানুষ কালেভদ্রে মেলে। লম্বা চুল, পোশাকে ভিন্নতা বুঝিয়ে দেয় মানুষটির বসবাস সুরের জগতে। কিন্তু পার্থিব ভুবনের নিত্য প্রয়োজনও তাকে পূরণ করতে হয়। মুখ ফুটে টাকাপয়সা চাইতে নিশ্চয়ই তাদের সংকোচ হয়। কিন্তু না চাইলে যাত্রীরাও নিজে থেকে আগ বাড়িয়ে টাকাপয়সা দেন না। ব্রিটেনের পথেঘাটে, যানবাহনে গিটার বাজিয়ে বহু লোক গান শোনান। এর একটা পোশাকি নাম আছেÑ বাস্কিং। এই বাস্কিংয়েরও প্রচলিত রীতিনীতি আছে, মুখ ফুটে কেউ অর্থ দাবি করেন না। সামনে থাকে খোলা টুপি। বিলেতে জন্মগ্রহণকারী এক মধ্যবয়সী সিলেটী বলছিলেন তার যৌবনের গল্প। বাবার চা বাগান থাকলে কী হবে, পাউন্ডের টানাটানি পড়লে তিনি গিটার নিয়ে ট্রেনে উঠে পড়তেন। আন্ডারগ্রাউন্ড রেল স্টেশনের এক কোনায় দাঁড়িয়ে একের পর এক গান শোনাতেন। সেই আশির দশকে এভাবে তিনি ভালই রোজগার করতেন। ঢাকায় উত্তরা থেকে মতিঝিলগামী বিআরটিসির এসি বাসে একহারা গড়নের এক তরুণ প্রায়ই ওঠেন, বড় নিঃশব্দে। দরোজার পাদানিতে দাঁড়িয়ে বাঁশির সুর তোলেন বাঁশি ছাড়াই। বিষয়টা অভিনব বটে। রডের ওপর কয়েকটি আঙুলের সঞ্চালনে যে ধ্বনি তোলেন তা কিছুটা তবলার বোলের মতো বৈকি। মানবজীবন নিয়ে ক’লাইনের যে গানটি তিনি যাত্রীদের শোনান, তার আবেদন একেবারে ফেলনা নয়। তবে চমকিত হওয়ার মতো বিষয় হলো গানের ফাঁকে তরুণটি যে বাজনা শোনান তা বাদ্যযন্ত্র ছাড়াই, শুধু মুখ দিয়ে সেই বাজনা বাজিয়ে থাকেন। গান শেষ করে নিজের ক্ষীণ দৃষ্টিশক্তির সীমাবদ্ধতার কথা বলে আর্থিক সাহায্য প্রার্থনা করেন। তবে সেটাও মিহিস্বরে, নিম্নকণ্ঠে। সেখানেও একটা সুর কাজ করে। বাসের চালকরা বিনা বাক্যব্যয়ে যন্ত্রের সুইচ টিপে তরুণটির ওঠানামার সুযোগ করে দেন। মানুষের কাছে থেকে অর্থপ্রাপ্তির জন্য স্নিগ্ধতা ও বিনয়েরও প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে হয় আমাদের। সে যাক, বাসের ভেতর যাত্রীরা এমন সব কাণ্ড কারখানা করেন যে অনেক সময় লজ্জায় পড়তে হয়। এসি বাসের জানালা খুলে থুতু ফেলেন কেউ কেউ। আর এমন লোক বিস্তর মেলে যারা সংসার, ব্যবসা বা অফিসের দরকারি আলাপের জন্য বাসযাত্রাকেই বেছে নেন। মোবাইলে তারা এত উচ্চ স্বরে দীর্ঘ আলাপ জুড়ে দেন যে কানের পোকা খসে পড়ার দশা হয়। কবে যে বাঙালীর কাণ্ডজ্ঞান হবে! বিপিএলের অধিনায়করা ফের সেই চেনা ছবি। মৌচাক ঘিরে যেমন থাকে মৌমাছিরা, অনেকটা সেরকমই যেন পথের পাশের টিভিসেটের শোরুমের বাইরে ঝাঁক বেঁধে থাকে পথচলতি ক্রিকেটপ্রেমী মানুষ। বিপিএল জমে উঠেছে, দর্শকদের ভিড়ে ফুটপাথও যেন উপচে উঠছে। আর হঠাৎ হঠাৎ খুশির চিৎকার শোনা যায়। এমন ভিড়ের ভেতর টাই পরা ভদ্দরনোক আর লুঙ্গিগেঞ্জি পরা মুটেমজুর দিব্যি পাশাপাশি দাঁড়িয়ে সারসের মতো গলা উঁচু করে খেলা দেখেন। কে কোন শ্রেণীর, কে খুলনার, কে নোয়াখালীর তার হিসেব কেউ কষেন না। জাতীয় দলের একেকজন সুপারস্টার বিপিএলে একেক দলের অধিনায়ক। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়কও আছেন একাধিক! তাদের নেতৃত্বে একেক দলের জয়-পরাজয়েও নেপথ্যে কিছুটা ব্যক্তিগত ইগোও কাজ করে থাকতে পারে। সিলেটকে হারিয়ে রংপুরের অধিনায়কের অতিরিক্ত আনন্দের বহর দেখে এমনটা মনে হতেই পারে। সাকিব ইস্যুতে দুই ভাগ হয়ে গেছে দর্শকরা। বার বার সাকিবের অখেলোয়াড়সুলভ আচরণ অনেককে বিরক্ত করছে। আবার তার পক্ষ নিয়েও লোকে বলছেন, খেলোয়াড়দেরই তো এমন একটু আধটু মাথাগরম থাকে। ওদিকে ঢাকা থেকে বিপিএল গতকাল চলে গেছে চট্টগ্রামে; সেখানে টেস্ট ও ওয়ান ডে অধিনায়কের মধ্যে (কুমিল্লা বনাম সিলেট) হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখার আশায় চট্টলাবাসী। শূন্যে বিশাল ধাতব কাঠামো নিচে জমজমাট কাঁচাবাজার বাজার হলো এক আজব স্থান। বিশেষ করে কাঁচাবাজার। কাঁচা পয়সার খুচরো লেনদেন চলতেই থাকে হাজারোটা কথার সঙ্গে। পকেটের টাকা ওখানে রেখে আসতেই যাবেন বিলক্ষণ, বিনিময়ে থলেটা পুরোপুরি ভরতে পারবেন না। যাও বা ভরবেন তার দুয়েকটা জিনিস নিয়ে আপনারও সন্দেহ থাকবে, গিন্নিরও আপত্তি থাকবে। এক কথা দু’কথায় মুখরা ঘরণীদের সঙ্গে সংসারী পুরুষদের খটোমটো বেধে যাওয়াটা নিত্যনৈমিত্তিক। আপনি ঠকতে চাইবেন না। বাজারে কেউই ঠকতে চায় না। আপনাকে না ঠকালে দোকানি বা সবজিঅলাকেই ঠকতে হয়। সেটা কি কখনও হতে পারে? খুব জিতে এসেছেন ভেবে যেই না বড়াই করতে শুরু করলেন গিন্নির কাছে, গিন্নি চুলের জঙ্গল থেকে বিন্দুবৎ উকুন বাছার মতো করে এমন একটা খুঁত বের করে দেবে যে আপনাকে ঘাঁট মানতেই হবে। মনে মনে হয়ত মানবেন, মুখে মানবেন না। তাতে মনের খচখচানি তো আর দূর হয়ে যাবে না। বহু স্থানে ফুটপাথের ওপরেই বাজার, ফুটপাথ ছাড়িয়ে মূল সড়কের কিছু অংশও গিলে নেয় বাজার। কাঁচাবাজারেরও নিজস্ব একটা শব্দ কি থাকে? তরিতরকারি মাপামাপি, বস্তা ওঠানো নামানো, দর কষাকষি হাঁকডাক সব মিলিয়ে প্রতিটি বাজারেরই এক ধরনের বিশেষ ধ্বনিপ্রবাহ থাকে। শুধু আওয়াজ তো নয়, বিচিত্র গন্ধও থাকে বাজারের। দৃষ্টিহীন কেউ নিশ্চয়ই কাছাকাছি এসে পড়লে বাজারের শব্দ আর গন্ধ ঠিকঠিক পেয়ে যায়। বাজারে বোলতার পাখা ঝাপটানোর মতো একটানা বেজে চলা গমগমউমউম শব্দও আগেভাগেই শ্রুতি দখল করে নেয়। অস্বীকার করা যাবে না, কেমন একটা প্রাণ মেলে তাতে। জ্যান্ত মানুষগুলো তো বটেই ইটকাঠপাথরের জঙ্গলের ভেতর জীবন্মৃত হয়ে থাকা মানুষগুলোও যেন বড় বড় শ্বাস নিতে পারে বাজারে এসে। তখন তারা যেন আরও বেশি জীবন্ত। যা হোক, এই রাজধানীতে কত কিসিমেরই না বাজার রয়েছে। বাংলামোটর থেকে মগবাজার মোড়ে যেতে জনকণ্ঠ ভবনের দু’শ’ গজের ভেতর প্রায় লুকানো একটা বাজার বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে। এখানে কত বছর ধরেই না চলছে উড়াল সড়ক নির্মাণের কাজ। উঁচু উঁচু ক্রেন এসে পড়েছে কয়েক সপ্তাহ হলো। উড়াল সড়কের লোহা নির্মিত বিশাল কাঠামো বাইরে থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে। এখানে শুধু জুড়ে দেয়া চলছে। জিরাফের মতো গলা বাড়িয়ে ক্রেন শূন্যে তুলে ফেলছে একেকটা ইয়াবড় ধাতব কাঠামো। তারপর জায়গামতো স্থাপন চলছে। দেখলে নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবার যোগাড়ই হয়। ওপরে এ ধরনের নির্মাণযজ্ঞ চলছে আর কাছেই কংক্রিটের ছাদের নিচে বসে গেছে বাজার। চার-পাঁচজন মাছের দোকানি অন্ততপক্ষে গোটা চল্লিশেক পাত্রে রকমারি মাছ সাজিয়ে বসে দিব্যি বিক্রি করছেন। পাশাপাশি সবজিঅলাও আছে কয়েকজন, তাদের পসরা ভ্যানের ওপর। মসলাপাতি আর আদা-রসুন- পেঁয়াজের দোকানও রয়েছে। বড় বড় কংক্রিট আর ইস্পাত নির্মিত বড় বড় কাঠামোর আড়ালে রয়েছে এই একচিলতে বাজার। দু’পাশের সরু রাস্তা দিয়ে চলা লোকজনের নজরে সহজে পড়বে না এই বাজার। কিন্তু এলাকাবাসী ঠিকই অস্থায়ী বাজারটির খোঁজ পেয়ে গেছেন। প্রিয় মেয়র, আপনাকেই বলছি আমরা এই কলামে ঢাকার দুই মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাৎক্ষণিকভাবে সমস্যার সমাধান ও অনিয়মের সুরাহা চাইছি। এটা নিছক অনুরোধ নয়, সমাজেরই দাবি। আজ আমরা তুলে ধরব রাজধানীর বেদখল যাত্রী ছাউনি প্রসঙ্গ। বাস বা অন্য যানবাহনের অপেক্ষারত নাগরিকদের জন্যই যাত্রী ছাউনি। বসার জন্য বেঞ্চ আর মাথার ওপর অর্ধবৃত্তাকার ছাদÑ এই নিয়ে যাত্রী ছাউনি। রোদ-বৃষ্টি থেকে বাঁচার আশ্রয়। দীর্ঘ অপেক্ষার সময়ে বসে একটু জিরিয়ে নেয়ার সুবিধা। অথচ এখন রাজধানীর বেশিরভাগ যাত্রী ছাউনিতেই বসার বেঞ্চ নেই, জায়গাটি দখল করে নিয়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। গড়ে উঠেছে অবৈধ দোকানপাট, খোলা হয়েছে খাবার হোটেল। রাতের বেলা এগুলো বখাটে আর মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়। যাত্রী ছাউনিতে বসা তো দূরের কথা, অনেক সময় দাঁড়ানোরও সুযোগ মেলে না। প্রিয় মেয়র, যথাযথ ব্যবস্থা নিন। ৩০ নবেম্বর ২০১৫ [email protected]
×