ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আলোচিত হত্যাকাণ্ডের মামলাগুলোর তালিকা এনআইএর কাছে হস্তান্তর, চলছে অভিযান

চাঞ্চল্যকর ফারুকী হত্যায় জড়িত ৪ জন শনাক্ত, গ্রেফতার যে কোন সময়

প্রকাশিত: ০৭:২১, ৩০ নভেম্বর ২০১৫

চাঞ্চল্যকর ফারুকী হত্যায় জড়িত ৪ জন শনাক্ত, গ্রেফতার যে কোন সময়

গাফফার খান চৌধুরী ॥ বহুল আলোচিত চ্যানেল আইয়ের উপস্থাপক মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী হত্যায় সরাসরি অংশ নেয়া ৪ জন শনাক্ত হয়েছে। তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেছে। শনাক্ত ৪ আসামির মধ্যে দুই জন দেশেই আত্মগোপনে রয়েছে। অপর দু’জন বিদেশে আত্মগোপনে থাকতে পারে। যে কোন সময় চারজনই গ্রেফতারের সম্ভাবনা রয়েছে। মূল হত্যাকারী ৪ জনকে আরও অন্তত ৫/৭ জন সহযোগিতা করে। ফারুকী ছাড়াও সিলেটে অনন্ত বিজয় দাশ ও ত্রিশালে তিন জেএমবি সদস্য ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৯ আসামির একটি তালিকা ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থার (এনআইএ) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ত্রিশালের ঘটনায় সাজিদ নামে একজন ভারতে গ্রেফতার হয়েছে। তালিকাভুক্ত ৮ বিশেষ আসামি গ্রেফতারে বাংলাদেশ ও ভারতে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। ফারুকী হত্যা মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সূত্রে আরও জানা গেছে, হত্যাকা-ের সঙ্গে জেএমবি জড়িত। জঙ্গী সংগঠনটির একটি গ্রুপ হত্যাকা-টি ঘটায়। হত্যায় সরাসরি জড়িত ৪ জনকে সহযোগিতা করতে ঘটনাস্থলে আরও অন্তত ৫/৭ জন ছিল। এদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত অনেকেই আত্মগোপনে। তাদের সম্পর্কে তথ্য পেতে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থার (এনআইএ) কাছে ফারুকী, সিলেটে ব্লগার অনন্ত ও ময়মনসিংহের ত্রিশালে পুলিশ হত্যা করে তিন জেএমবি সদস্য ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিনটি পৃথক তালিকা পাঠানো হয়েছে। তালিকায় ফারুকী হত্যার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে পলাতক ৩ জন, অনন্ত হত্যায় সরাসরি অংশ নেয়া ৫ জনের মধ্যে গ্রেফতারের বাইরে থাকা ৩ এবং ত্রিশালে জেএমবি সদস্য ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে ৩ জনের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই ত্রিশালের ঘটনায় সাজিদ নামে একজন ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছে। তাকে ফেরত আনার বিষয়ে আলোচনা চলছে। সাজিদ বর্ধমানে জেএমবির আস্তানায় বোমা বিস্ফোরণ মামলার অন্যতম আসামি। বাকি ৮ জনের অবস্থান জানতে ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যেই ভারতে কয়েকটি অভিযানও চালিয়েছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সর্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত আছে। আসামিদের মধ্যে জাপানী নাগরিক হোশি কুনিওর হত্যাকারীদের গ্রেফতারেও অভিযান চলছে। এ ব্যাপারে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মীর্জা আবদুল্লাহেল বাকী জনকণ্ঠকে বলেন, নুরুল ইসলাম ফারুকী হত্যায় জড়িতদের মধ্যে অনেকের সম্পর্কেই বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আশা করছি, স্বল্প সময়ের মধ্যেই হত্যা রহস্য উদঘাটিত হবে। ফারুকী ছাড়াও চাঞ্চল্যকর অনেক মামলার পলাতক দাগি আসামি গ্রেফতারসহ নানা বিষয়ে ভারতের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। ভারত অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে সহযোগিতা করার চেষ্টা করছে। সে লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে সর্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত আছে। সিআইডি সূত্র বলছে, গত ২৩ অক্টোরব হোসেনী দালানে বোমা হামলায় ২ জনের মৃত্যু ও শতাধিক জনকে আহত করার ঘটনায় ডিবির হাতে গ্রেফতারকৃত চালক চাঁন মিয়াকে মাওলানা ফারুকী ও ত্রিশালে জেএমবি সদস্য ছিনতাই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি চলছে। ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ত্রিশালে জঙ্গী ছিনতাইয়ের সময় জেএমবির একটি গাড়ির চালক ছিল চাঁন মিয়া।
×