ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সিরিজ জিতল অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ৩০ নভেম্বর ২০১৫

সিরিজ জিতল অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এ্যাডিলেডে ঐতিহাসিক দিবারাত্রির টেস্টে নিউজিল্যান্ডকে ৩ উইকেটে হারিয়ে ২-০তে তিন ম্যাচের সিরিজ জিতে নিল অস্ট্রেলিয়া। দুই ইনিংসে সফরকারী কিউইরা অলআউট হয় ২০২ ও ২০৮ রানে। তৃতীয় দিন ৭ উইকেট হারিয়ে জয়ের জন্য প্রয়োজনী ১৮৭ রান তুলে নেয় অসিরা। প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ছিল ২২৪ রান। ১০ উইকেট নিয়ে আলোচিত হন এই টেস্টে ম্যাচসেরা পেসার জস হ্যাজলউড। আর দুরন্ত ব্যাটিংয়ে সিরিজসেরা হয়েছেন তারকা ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। ব্রিসবেনের প্রথম টেস্টে ২০৮ রানে জিতেছিল স্টিভেন স্মিথের দল। আর পার্থে রান-বন্যার দ্বিতীয় ম্যাচ ড্র হয়। ৫ উইকেটে ১১৬ রান নিয়ে রবিবার তৃতীয় দিনে দ্বিতীয় ইনিংসের খেলা শুরু করে নিউজিল্যান্ড। ক্রিজে ছিলেন মিচেল স্যান্টনার ও বিজে ওয়াটলিং। অভিষিক্ত স্যান্টনার একপ্রান্তে চমৎকার দৃঢ়তা দেখালেও অপর প্রান্তের ব্যটসম্যানরা থিতু হতে পারেননি। নইলে অতিথি কিউদের লিডটা নিশ্চিত করেই দুই শ’ ছাড়িয়ে যেত। বোলারদের দাপুটে ম্যাচে সেক্ষেত্রে ফলটা অন্যরকমও হতে পারত। কারণ ১৮৭ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারাতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। স্টিভেন স্মিথদের ঘাম ঝরে গেছে। ১৩ রান নিয়ে শুরু করা স্যান্টনার অল্পের জন্য হাফ সেঞ্চুরি পাননি। স্পিনার নাথান লেয়নের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে করেন ইনিংসের সর্বোচ্চ ৪৫ রান। ৮৮ বলের ইনিংসটি ছিল ৫ চার ও ১ ছক্কায় সাজানো। ব্যক্তিগত ৭Ñএর সঙ্গে কোন রান যোগ না করেই আউট হন ওয়াটলিং। টেলেন্ডাররা অবশ্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। সপ্তম উইকেটে মার্ক ক্রেইগ-স্যান্টনার যোগ করেন ২৪ রান। যেখানে ক্রেইগের অবদান ১৫। তবে ইনিংসের সর্বোচ্চ জুটিটা এসেছে স্যান্টনার ও ডগ ব্রেসওয়েলের মধ্যে। অষ্টম উইকেটে ৭.৫ ওভারে ৩৫ রান যোগ করেন দু’জনে। ৪০ বলে ১ চার ও ১ ছক্কায় ২৭ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন মূলত বোলিংই যার প্রথম কাজ সেই ব্রেসওয়েল। ৭০ রান দিয়ে ৬ উইকেট নেন হ্যাজলউডÑ এটি তার ইনিংসে সেরা বোলিংয়ের নতুন নজির। ১০ উইকেটÑ ম্যাচে সেরা। দলের চিত্তাকর্ষক জয়ে স্বভাবতই ম্যাচসেরা হয়েছেন ২৪ বছর বয়সী নিউসাউথওয়েলস প্রতিভা। ১৮৭ রানের জয়ের লক্ষ্যে দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা ছিল ঝড়ের মতো। ষষ্ঠ ওভারেই ৩৪ রান তুলে নেন দুই ওপেনার। ১১ রান করা জো বার্নসকে ফিরিয়ে প্রথম আঘাত হানেন ট্রেন্ট বোল্ট। ৫ উইকেট নিয়ে কিউইদের হয়ে এই পেসারই আশার আলো জ্বালিয়েছিলেন। ১৪তম ওভারে অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথকে যখন এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন ৩ উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার রান তখন ৬৬। তার আগে ৩৫ রান করা ওয়ার্নারকে ফেরান ব্রেসওয়েল। বিপদের আঁচের মধ্যেই গড়ে ওঠে অস্ট্রেলিয়ার সেরা জুটি। চতুর্থ উইকেটে ১৬ ওভারে ৪৯ রান যোগ করেন এ্যাডাম ভোগস ও শন মার্শ। ২৮ রান করে বোল্টের শিকারে পরিণত হন ভোগস। ৪৯ রান করা মার্শকে তুলে নিয়ে হঠাৎই ম্যাচ জমিয়ে তোলেন কিউই পেসার! ১৬১ রানে পাঁচ ও ১৭৬ রানে ছয় উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ১০ রান করা পিটার নেভিল যখন বোল্টের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দেন জয় থেকে তখন মাত্র ২ রান দূরে স্বাগতিকরা। ব্যাটসম্যান বলতে আর কেউ নেই, পিটার সিডল ৯ ও মিচেল স্টার্ক ০ রানে অপরাজিত থেকে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন। ৫৯২ রান করে অবধারিত সিরিজসেরা ওয়ার্নারÑ তিন ম্যাচের কোন সিরিজে চতুর্থ সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এটি। ১৩৮ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম ফ্লাডলাইটের আলোয় গোলাপি বলে টেস্ট অনুষ্ঠিত হওয়ায় ম্যাচটি ঘিরে গোটা বিশ্বেরই ছিল বাড়তি আগ্রহ। তাতে মাঠের ঘটনাও কম নয়। মাত্র তিন দিনেই ফল দেখল ইতিহাসের সাক্ষী হওয়া এ্যাডিলেড। ‘গোলাপি বলে দিবারাত্রির টেস্টÑ এটা সত্যি দারুণ এক অভিজ্ঞতা। ম্যাচটাও ছিল চমৎকার প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। ছেলেরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে জয় ছিনিয়ে এনেছে।’ বলেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক স্মিথ।
×