ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাণিজ্যমন্ত্রী আজ ইইউ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করবেন

ইউরোপে গার্মেন্টের পণ্য বাজার শক্তিশালী করার উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৩০ নভেম্বর ২০১৫

ইউরোপে গার্মেন্টের পণ্য বাজার শক্তিশালী করার উদ্যোগ

এম শাহজাহান ॥ ইউরোপের ২৭ দেশে গার্মেন্ট পণ্যের বাজার আরও শক্তিশালী হচ্ছে। রূপকল্প ২১ সামনে রেখে রফতানির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা পূরণ করতে হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোতে পোশাক রফতানি বাড়াতে হবে বলে মনে করছে সরকার। একই সঙ্গে এ শিল্পের উদ্যোক্তারাও মনে করছেন, রফতানি আয় বৃদ্ধিতে ইইউভুক্ত দেশগুলোতে বাজার সম্প্রসারণের বিকল্প কিছু নেই। আর তাই ইইউভুক্ত দেশগুলোতে রফতানি বাড়ানো, পোশাকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত, গার্মেন্টস কারখানায় নিরাপদ কর্মপরিবেশ তৈরি এবং শ্রম অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশের অগ্রগতির অবস্থান জানাতে আজ সোমবার বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে সচিবালয়ে মতবিনিময় সভা করবেন ইইউ রাষ্ট্রদূূত পিয়েরো মায়াদুর। ওই বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পোশাক আমদানির অনুরোধ জানানো হবে। জানা গেছে, ইইউভুক্ত ২৭টি দেশ- অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, সাইপ্রাস, চেকপ্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, ইস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রীস, হাঙ্গেরী, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, লাটভিয়া, লিথুনিয়া, লুক্সেমবার্গ, মালটা, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, রুমানিয়া, সেøাভাকিয়া, সেøাভেনিয়া, স্পেন, সুইডেন ও যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাসহ মোট ২৯টি দেশে প্রতিবছর পোশাক রফতানি হচ্ছে ২৩Ñ২৪ বিলিয়ন ডলারের। এক্ষেত্রে শুধু ইইউতে পোশাক রফতানি প্রায় ৫৮ শতাংশ। ২৬Ñ২৭ ভাগ পোশাক যাচ্ছে আমেরিকায় ও কানাডায় রফতানি হচ্ছে মাত্র ৪Ñ৫ শতাংশ পোশাক। কিন্তু দেশের রফতানি ও বৈদেশিক মুদ্রার বড় এ খাতটি এসব প্রচলিত মার্কেটে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। বিশেষ করে ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যায়ন বেড়ে যাওয়ায় নতুন সঙ্কট তৈরি হয়েছে। জানা গেছে, গত ২০১২ থেকে এ পর্যন্ত ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান বেড়েছে ৮ শতাংশের বেশি। ইউরোপের ক্ষেত্রেও একই ধরনের অবস্থা বিরাজ করছে। অঞ্চলটিতে ডলার ও ইউরো দুই মুদ্রায়ই রফতানি বাণিজ্য হয়। ইউরোপের ক্রেতারা এক বছর আগে ১ ডলার মূল্যের বাংলাদেশী পণ্য কিনতেন দশমিক ৭২ ইউরোর বিনিময়ে। একই পণ্য কিনতে এখন তাদের খরচ করতে হচ্ছে দশমিক ৯৪ ইউরো। এ হিসাবে ইইউ আমদানিকারকদের খরচ বেশি হচ্ছে ২০ শতাংশের বেশি। জানা গেছে, দাম কম হওয়ার কারণে প্রচলিত মার্কেটের বাইরে এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি হচ্ছে। ল্যাটিন আমেরিকার ব্রাজিল, চিলি, পেরু, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনাসহ রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, মধ্যপ্রাচ্য, তুরস্ক, চীন, জাপান, কোরিয়া ও ভারত অপ্রচলিত মার্কেটগুলোর মধ্যে অন্যতম। এদিকে, নিরাপত্তা ইস্যুতে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপে ইইউ এখন সন্তুষ্ট। বিশেষ করে কূটনৈতিক পাড়ায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আগের চেয়ে বেশি নিরাপদবোধ করছেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদু ও জার্মানির রাষ্ট্রদূত টমাস প্রিনজ। সম্প্রতি পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের সঙ্গে পৃথক সাক্ষাত শেষে তারা সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন। এতে করে পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের মনেও এখন স্বস্তি বিরাজ করছে। জানা গেছে, গার্মেন্টস শিল্পে আন্তর্জাতিক মান অর্জন ও কমপ্লায়েন্স প্রতিপালন করতে উদ্যোক্তারা ইতোমধ্যে পোশাকের দাম বাড়ানোর জন্য ক্রেতাদেশগুলোকে অনুরোধ করেছে। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকেও বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং শ্রম অধিকার বাস্তবায়নে এ শিল্পে অতিরিক্ত বিনিয়োগ প্রয়োজন।
×