ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সিরিজ হারে ব্যাটিং ব্যর্থতাকে দুষলেন হাসিম আমলা

উচ্ছ্বসিত কোহলির মুখে কেবলই অশ্বিন

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ২৯ নভেম্বর ২০১৫

উচ্ছ্বসিত কোহলির মুখে কেবলই অশ্বিন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে বিশ্বের সেরা স্পিনারের স্বীকৃতি দিলেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। মাত্র তিন দিনে নাগপুর টেস্ট জিতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ২-০তে সিরিজ নিশ্চিত করেছে স্বাগতিকরা। যেখানে ১২ উইকেট নিয়ে ‘নায়ক’ অশ্বিন। সেনাপতির মুখে অশ্বিন-বন্দনা তাই স্বাভাবিক। পাশাপাশি পিচ-বিতর্ক উড়িয়ে দিয়ে কোহলি বলেছেন, হোম এ্যাডভান্টেজটা পৃথিবীর সবদলই নিয়ে থাকে। এ নিয়ে নিন্দুকদের অযথা গলা ভারি করতে নিষেধ করেছেন ইন্ডিয়ান ক্রিকেটের ‘ক্রেজি’ বয়। অন্যদিকে ভরাডুবির জন্য মূলত নিজ দলের ব্যাটসম্যানদেরই দায়ী করেছেন সফরকারী অধিনায়ক হাসিম আমলা। পাশাপাশি নির্দ্বিধায় স্বীকার করেছেন, টেস্ট সিরিজে এ পর্যন্ত মোটেই ইতিবাচক ক্রিকেট খেলতে পারেননি তারা। ‘কোনরকম ব্যাখ্যায় না গিয়ে বলব, আমার কাছে এই মুহূর্তে অশ্বিনই বিশ্বের এক নম্বর স্পিনার। ওর পারফর্মেন্সই ওর হয়ে কথা বলছে। আমরা এই যে পরপর শ্রীলঙ্কা আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জিতলাম, সবার আগে ওর কথাই বলতে হবে। আমি ভাগ্যবান, অশ্বিনের মতো একজন বোলার দলে রয়েছে। যে ধারাবাহিকভাবে ভারতকে জিতিয়ে চলেছে।’ মোহালির প্রথম টেস্টে মাত্র আড়াই দিনে ১০৮ রানের জয় পায় ভারত। সেই ম্যাচে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন অশ্বিন। একদিন হওয়ার পর বৃষ্টিতে ভেস্তে যায় ব্যাঙ্গালুরুর দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ, সেখানেও এই স্পিনারের শিকার ৪। আর নাগপুরে তো নিজেকেই ছাড়িয়ে গেলেন। প্রথম ইনিংসে ৫/৩২, দ্বিতীয় ইনিংসে ৭/৬৬- করলেন ক্যারিয়ারসেরা বোলিং। এবার জয় ১২৪ রানে, সঙ্গে সিরিজও। র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল দক্ষিণ আফ্রিকা দীর্ঘ নয় বছরে এই প্রথম বিদেশের মাটিতে সিরিজ হারল। তাও এক ম্যাচ বাকি থাকতে। এ পর্যন্ত তিন ম্যাচে অশ্বিনের শিকার সংখ্যা ২৪! ২০১৫ সালে রেকর্ড সর্বোচ্চ ৫৫ উইকেট তারই দখলে। অশ্বিনের প্রশংসা না করলে সেটিই বরং বেমানান মতে হতো। প্রতিপক্ষ অধিনায়কের প্রশংসাও পেয়েছেন তুখোড় এই স্পিনার। আমলা বলেন, ‘অশ্বিনের মতো উঁচু মানের স্পিনার আমার দলে নেই। ভারতের উইকেটে ওকে খেলাটা সত্যি কঠিন। এই ধরনের কন্ডিশনে ওকে আমরা আগে কখনও খেলিনি- এটাই সিরিজে ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি আমরা একদম ভাল ব্যাটিং করিনি। মাঠে নিজেদের সামর্থ্যরে ছিটেফোটাও দেখাতে পারিনি। পিচ নিয়ে কথা বলতে চাই না। কারণ এখানে খেলেই তো ভারত অনায়াশে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। আমরা পারিনি সেটা আমাদের ব্যর্থতা।’ প্রথম টেস্ট আড়াই দিনে শেষ হওয়ার পর এবার ফল এসেছে তিন দিনেরও কম সময়ে। সিরিজজুড়ে কেবলই স্পিনারদের দাপট। যা হয়ে উঠেছে ব্যাটসম্যানদের বধ্যভূমি। মোহালি, ব্যাঙ্গালুরু হয়ে নাগপুর- পিচের আচরণে রীতিমতো বিস্মিত ক্রিকেটের রথী-মহারথীরা। ওয়াসিম আকরাম-রিকি পন্টিং তো রীতিমতো ক্ষুব্ধ। ক্রিকেট ব্যক্তিত্বরা বলছেন, নাগপুরের পিচ স্বয়ং ‘শয়তানের’ প্রতিভূ। কেউ চান পিচের নামে এই সব ‘আখড়া’ বন্ধ হোক! এ নিয়ে নিজের পক্ষেই সাফাই গেয়েছেন ভারত অধিনায়ক। কোহলি বলেন, ‘পিচ নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলছেন। এমনটা হওয়া উচিত নয়, কিংবা বল ভীষণ টার্ন করছে... ইত্যাদি ইত্যাদি। আমরা যখন ভারতের বাইরে খেলতে যাই তখন তো সেখানকার পিচ নিয়ে অভিযোগ করি না। টেস্টে ১ বা ২ নম্বর দল বাদে সবাই বিদেশে গিয়ে খাবি খেয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা গত ৯ বছর বিদেশেও অপরাজেয় ছিল। মনে রাখতে হবে আমরা এক নম্বরে থাকা সেই দলটাকে হারিয়েছি।’ অশ্বিনকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন সাবেক তারকা সঞ্জয় মাঞ্জরেকর, ‘শ্রীলঙ্কার মাটিতে দীর্ঘ ২২ বছর পর আমাদের সিরিজ জয়ের নায়ক অশ্বিন। এবার ঘরের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দুর্ধর্ষ দলকে বধ। অশ্বিন আসাধারণ বল করছে। এরপর হয়ত ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়াতেও ও টেস্ট জেতাবে।’ নিশ্চই অশ্বিনের বক্তব্য জানতে ইচ্ছে করছে? ‘ব্যাটসম্যানরা যেমন প্রতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করার লক্ষ্য নিয়ে নামে, ঠিক তেমনি প্রতি ইনিংসে আমার টার্গেট থাকে পাঁচ উইকেট। শেষ ম্যাচে আমলা আর ফ্যাফ ডুপ্লেসিস যখন প্রতিরোধ গড়েছিল, তখন আমার বিশ্বাস ছিল সাফল্য আসবেই। আমলাকে ফিরিয়ে অমিত মিশ্রই পথটা তৈরি করে দিয়েছে।’ দিল্লীতে বৃহস্পতিবার শুরু চতুর্থ ও শেষ টেস্ট।
×