স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক দিক থেকে অনেক সমৃদ্ধ। দেশের রফতানি পণ্যের বাজার এখন বহুমুখী, রেমিটেন্সও বেড়েছে। ওষুধ শিল্প, জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প এবং এগ্রো শিল্পে যারা রফতানি করতে চায় সরকার তাদের নগদ সহায়তা দেবে। আর ব্যবসার জন্য ব্যাংক ঋণের সুদ ডাবল ডিজিট না হয়ে সিঙ্গেল ডিজিট হওয়া উচিত। এ জন্য বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ শনিবার চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর আবাহনী মাঠে আয়োজিত চিটাগাং মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও রফতানি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পানি সম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও সাবেক মন্ত্রী ডাঃ আফসারুল আমিন এমপি। মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন চিটাগাং উইমেন চেম্বার সভাপতি কামরুন মালেক, মেলা কমিটির আহ্বায়ক আমিনুজ্জামান ভুঁইয়া ও মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহসভাপতি মাহবুব চৌধুরী।
বাণিজ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী না থাকলে এদেশে কেউই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পারত না। এ বিচারের মধ্য দিয়ে আমাদের কপালে কলঙ্কের টিকা দূর হচ্ছে। আমরা চাই না কপালে কলঙ্কের সেই দাগটি থাকুক। যারা একাত্তরে গণহত্যা চালিয়েছে, মা বোনদের সম্ভ্রমহানি করেছে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে তাদের বিচার হচ্ছে। এর মধ্যে কয়েকজনের ফাঁসিও হয়েছে। এ বিচার বন্ধ করতে দেশে-বিদেশে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু বাংলার মানুষ এই দাবিতে ঐক্যবদ্ধ রয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী দেশের অর্থনীতি প্রসঙ্গে বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নে এ সরকার কাজ করে যাচ্ছে। চট্টগ্রামকে দেশের দ্বিতীয় রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে বর্তমান সরকার। এ লক্ষ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ চলছে। তিনি বলেন, সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণকাজ হাতে নেয়া হয়েছে। ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ লক্ষ্যে একনেক থেকে ৫শ’ কোটি টাকার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
হালিশহরের আবাহনী মাঠে অনুষ্ঠিত এ মেলা শুরু হবে আগামী ১ ডিসেম্বর। মাসব্যাপী এ মেলায় থাকছে দেশের খ্যাতনামা শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর ১৮৪টি স্টল। এছাড়া বিদেশী জোনে অংশ নিচ্ছে থাইল্যান্ড, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো।
প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার বর্গফুট পরিসরের এই মেলাঙ্গন সাজানো হচ্ছে মেগা প্যাভেলিয়ন, প্রিমিয়াম প্যাভেলিয়ন, স্ট্যান্ডার্ড প্যাভেলিয়ন, ব্যাংক ও ইন্স্যুরেন্স, রেস্টুরেন্টসহ একটি সুদৃশ্য টাওয়ার ও দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারার মাধ্যমে। মেলায় নিরাপত্তা বিধানের জন্য থাকছে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। চিটাগাং চেম্বারের সহসভাপতি মাহবুব চৌধুরী এ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিক্রি কিংবা মেলা থেকে আর্থিক লাভের জন্য নয়, দেশের শিল্প ও উৎপাদিত পণ্য ভোক্তা সাধারণ ও বিদেশী ক্রেতাদের কাছে তুলে ধরাই এ মেলার উদ্দেশ্য।
মাসব্যাপী এ মেলায় চট্টগ্রামের লাখ লাখ মানুষের সমাগম ঘটবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।