ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সীমানা বিরোধ

যে পৌরসভায় কখনও নির্বাচন হয়নি ॥ এবারও হচ্ছে না

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ২৮ নভেম্বর ২০১৫

যে পৌরসভায় কখনও নির্বাচন হয়নি ॥ এবারও হচ্ছে না

সমুদ্র হক ॥ দেশে পৌর নির্বাচনের বাদ্য বেজে ওঠার সঙ্গেই আনন্দের ঢেউ বয়ে যাচ্ছে। তবে যে পৌরসভাগুলোতে নির্বাচন নানা কারণে হচ্ছে না সে এলাকার মানুষ অপেক্ষায় আছে কবে কখন নির্বাচন হবে। আপাতত চলতি নির্বাচনী ঢেউয়ের তরীতে পালের হাওয়া লাগাতে পারছে না। এমনই এক পৌরসভা বগুড়ার সোনাতলা। প্রায় পনেরো বছর আগে পৌরসভা ঘোষণার পর একটিবারের জন্যও নির্বাচন হয়নি সীমানা বিরোধের কারণে। পৌর এলাকার মানুষ বর্তমানে যে নাগরিক সুবিধা পাচ্ছে তা সরকারের নিযুক্ত পৌর প্রশাসকের কাছ থেকে। যিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)। দ্বৈত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন। কোনটি রেখে কোনটি আগে বা পরে করবেন এ নিয়ে দ্বন্দ্বের মধ্যেই থাকতে হয়। নিয়ম অনুযায়ী পৌর মেয়রের পদসহ ওয়ার্ড কাউন্সিলরগণের পদ নির্ধারিত হয় ভোটের মাধ্যমে। তারাই হয় এলাকার উন্নয়নে জনপ্রতিনিধি। সোনাতলা পৌরসভায় পনেরো বছর ধরে কোন জনপ্রতিনিধি নেই। বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা সদরের কিছু অংশ এবং কাছের ইউনিয়নের কোন কোন গ্রাম নিয়ে পৌরসভা ঘোষিত হয় ২০০১ সালের ২৬ এপ্রিল। নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়। পৌরসভা ঘোষণার পরই পাশের বালুয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম পৌরসভার অন্তর্ভুক্তি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মামলা করেন দুই ব্যক্তি। তারা হলেনÑ শাজাহান আলী ও শাবেরী আলম। মামলাটি গড়ায় হাইকোর্টের রিট অবধি। এরই মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের সময় এলে বালুয়া ইউনিয়নের অমীমাংসিত এলাকাকে পৌরসভার বাইরে রেখে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হয়। রিটের কারণে পৌর নির্বাচন বন্ধ থাকে। সর্বশেষ অবস্থার বিষয়ে সূত্র জানায়, শাবেরী আলমের করা রিটটি এ বছর ২২ এপ্রিল খারিজ হয়। এরপর নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধা অপসারণ হয়ে গেলে আশা করা হয়েছিল এবার নির্বাচন কমিশন সোনাতলা পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করবে। এরই মধ্যে গেল ১৯ মে বালুয়া ইউনিয়নের বাগবাড়ি গ্রামের রায়হান অর রশিদ ফের একটি রিট আবেদন করেন। আদালত সোনাতলা পৌরসভার ভোটগ্রহণের ওপর ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয়। যার মেয়াদ এখনও উত্তীর্ণ হয়নি। সীমানা চিহ্নিত পৌর এলাকার কয়েক ভোটার জানালেন, সোনাতলা পৌর নির্বাচন হোক তা সকলই চায়। কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তির কারণে বারবার নির্বাচন হোঁচট খাচ্ছে। সাধারণ মানুষের কেউই চায় না আমলাদের দিয়ে এবং অনির্বাচিত প্রশাসকদের দিয়ে পৌরসভা পরিচালিত হোক। স্থানীয় সরকার পরিচালনা কার্যক্রমটি জনপ্রতিনিধিদের কাছে থাকবে এটাই নিয়ম। সোনাতলা পৌরসভায় তার ব্যত্যয় ঘটেছে। ফলে এলাকার উন্নয়নে কিছুটা হলেও ভাটা পড়েছে।
×