ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সুপেয় পানি সঙ্কট বিশ্বজুড়েই

প্রকাশিত: ০৫:২০, ২৮ নভেম্বর ২০১৫

সুপেয় পানি সঙ্কট বিশ্বজুড়েই

ফিরোজ মান্না ॥ চারদিকে শুধু পানি আর পানি, কিšুÍ কোথাও একটু খাবার পানি নেই। সারা দুনিয়ায় এমনই এক পরিস্থিতি ধেয়ে আসছে। দুনিয়া জুড়েই বিজ্ঞানীদের ভাবনার বিষয় হিসেবে দেখা দিয়েছে আগামী দিনে সুপেয় পানি কিভাবে পাওয়া যাবে। আর এমন ভাবনা থেকে বাংলাদেশও বাদ পড়েনি। বাংলাদেশের পানি বিজ্ঞানীরাও বিষয়টি নিয়ে ভীষণ চিন্তিত। পানি সম্পদের সঠিক ব্যবহার না থাকায় দেশের পরিস্থিতি ভবিষ্যতে জটিল আকার ধারণ করবে। বিজ্ঞানীদের হিসাব অনুযায়ী পৃথিবীতে সুপেয় পানির পরিমাণ খুবই কম। এমন একদিন আসবে সেদিন আর কোন খাবার পানি পাওয়া যাবে না। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পানি সম্পদের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটছে। প্রতিদিন সুপেয় পানির উৎসগুলো দূষণের শিকার হচ্ছে। আর এই দূষণের জন্য মানুষই দায়ী। পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন করে ভাবনার সময় এসেছে। পানি বিজ্ঞানী ড. আইনুন নিশাত সম্প্রতি বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ায় ক্রমান্বয়ে পানির প্রাপ্যতা বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেবে। বৃষ্টির সময় বদলে যাবে। বৃষ্টিপাতের স্থানেরও পরিবর্তন ঘটবে। এ অবস্থায় পানি ব্যবস্থাপনা নতুন করে ভাবতে হবে। বিশেষ করে বন্যা ব্যবস্থাপনা একই সঙ্গে অনাবৃষ্টির কথা বিবেচনায় আনতে হবে। তার সঙ্গে যোগ হবে নদীভাঙ্গন ও ঘন বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা, উপকূলে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া এবং ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের প্রকোপ বেড়ে যাবে। এ জন্য প্রয়োজন অববাহিকা ভিত্তিক পানি ব্যবস্থাপনা। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ২০১১ সালে যে অঙ্গীকার করেছিলেন তার সঠিক বাস্তবায়ন হলে পানি নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী সমাধান হতে পারে। পানি সম্পদের সার্বিক গুরুত্বের স্বীকৃতি হিসাবে ১৯৯২ সালে জাতিসংঘের পরিবেশ ও উন্নয়ন বিষয়ক ৪৭তম অধিবেশনে প্রতিবছর ২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত হয়। আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির পর ১৯৯৩ সাল থেকে পানি সংরক্ষণ ও উন্নয়নের ওপর গণসচেতনা সৃষ্টি এবং সংশ্লিষ্টদের উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী দিবস পালিত হয়ে আসছে। দিবস পালন হলেই পানি সম্পদ রক্ষা করা যাবে এমন কোন কথা নেই। সবার আগে দরকার এই সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে পানি বিজ্ঞানী ড. মজিবর রহমান বলেন, আমরা পানি সম্পদ রক্ষায় জনগণকে সচেতন হতে হবে। কিন্তু পানিই হচ্ছে সব শক্তির মূল উপাদান। পানি ছাড়া কোন শক্তিই তৈরি করা সম্ভব না। বিদ্যুত উৎপাদনে সবচেযে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে পানি। কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্রে প্রতি মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন করতে ১৭ হাজার গ্যালন পানির প্রয়োজন হয়। নিউক্লিয়াসের বিদ্যুত উৎপাদনে প্রতি মেগাওয়াটের জন্য পানির প্রযোজন হয় ১৫ হাজার গ্যালন। গ্যাসের মাধ্যমে বিদ্যুত উৎপাদন করতে পানির প্রয়োজন হয় প্রতি মেগাওয়াটের জন্য ৭ হাজার গ্যালন। তবে বাতাস ও সোলার বিদ্যুতের ক্ষেত্রে পানির প্রয়োজন তেমন একটা নেই। তবে হাইড্রোপাওয়ারের ক্ষেত্রে সবচেযে বেশি পানির প্রযোজন হয়। পানি বিজ্ঞানী মজিবর রহমান বলেন, সারা পৃথিবীতে যে পরিমাণ পানি রয়েছে তার মধ্যে মাত্র দশমিক শূন্য ১৪ ভাগ খাবার পানি রয়েছে। এই পানির উৎস হচ্ছে, নদী, লেক, মাটির নিচের পানি, মাটি ও বাতাসের ময়েসচার থেকে আসে। ৯৭ দশমিক ৪১ ভাগ পানিই হচ্ছে লবণাক্ত। বাকি ২ দশমিক ৫৯ ভাগ পানি কয়লা খনি বা মাটির এত নিচে যে এই পানি পাওয়া কঠিন। তবে এই পানি ব্যবহার উপযোগী। পানি বিজ্ঞানী ড. ফিরোজ আহমেদ বলেন, বর্তমান বিশ্বে পানি এখন সবচেয়ে বড় ইস্যু। আমাদের সুপেয় পানির উৎসগুলো থেকে ক্রমাগত পানি সাগরের দিকে চলে যাচ্ছে। কারণ আমাদের পানি সংরক্ষণের জয়গার খুব অভাব। পানি সম্পদ সংরক্ষণ না করতে পারলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে। এখনই বিষয়টি নিয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে। পানি সম্পদ সারা পৃথিবীতেই ধীরে ধীরে কমে আসছে। বাংলাদেশও সেখান থেকে বাদ পড়ছে না। পানি নিয়ে কাজ করে এনজিও ফোরাম নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের হেড এ্যডভোকেসি এন্ড ইনফরমেশন কর্মকর্তা জোসেফ হালদার বলেন, পানিই শক্তি। এই শক্তির ব্যবহার আমাদের ঠিক মতো করতে হবে। দেশের বিভিন্ন নদী, লেক দূষণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই পানি সম্পদকে রক্ষা করতে আমাদের সকলের এক যোগে কাজ করতে হবে। এমন দিন আসবে পানিভিত্তিক ইকোলজি পরিবর্তিত হয়ে লবণ পানি হয়ে যেতে পারে। ফলে বর্তমানের গাছপালা বিলীন হয়ে যাবে ও চিরচেনা শস্য বিন্যাস হারিয়ে যাবে। জীবিকার অভাবে ক্রমেই এ এলাকার জনসংখ্যা হ্রাস পেতে থাকবে। সূত্র জানিযেছে, ভূগর্ভস্তরের পানি ক্রমেই নিচে নেমে যাওয়ায় সারাদেশে ভূগর্ভস্তরের লবণপানি সংমিশ্রণের আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠছে। ভূগর্ভ দিয়েই দক্ষিণের লবণ পানি ধীরগতিতে দেশের মূল ভূখ-ের অভ্যন্তরে প্রবেশ করছে। এর কারণ হিসাবে বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন অতিরিক্ত পানি উত্তোলনের কারণে ঢাকা শহরের ভূগর্ভস্তরের পানির স্তর বঙ্গোপসাগরের পানির গড় উচ্চতার তুলনায় নিচে নেমে যাওয়া কারণে দক্ষিণের লবণ পানি অপেক্ষাকৃত হারে উত্তরের দিকে ধাবিত হচ্ছে। ফলে ঢাকা শহরের ভূগর্ভস্তরের লবণাক্ত পানি প্রবেশের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। শিল্পায়নের কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অস্বাভাবিক হারে বছরব্যাপী পানি উত্তোলন করায় ওই এলাকার পানিও সমুদ্রের গড় উচ্চতার নিচে নেমে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও এই নিম্নœগামিতার হার ঢাকার নিম্নগামিতার হারের কাছাকাছি চলে এসেছে। এ কারণে ঢাকার ভূগর্ভস্তরের ফাঁকা জায়গা মিঠা পানি দ্বারা পূরণের সম্ভাবনা ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে আসছে। ভবিষ্যতে ঢাকার ভূগর্ভস্তরের ফাঁকা জায়গায় লবণপানির অনুপ্রবেশ ঘটবে। অথচ এ অনুপ্রবেশ রোধ করার কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। ইতোমধ্যেই দেশের দক্ষিণের ৬ কোটি মানুষ ভূ-গর্ভস্থ পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধিজনিত বিপর্যয়ের সম্মুখীন। এ অবস্থায় খাদ্য উৎপাদন ও পরিবেশে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দেবে। এ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নদী, খাল-বিল ও অন্যান্য জলাশয় দূষণমুক্ত ও পুনরুজ্জীবিত করা। পানির নতুন উৎস খুঁজে বের করাসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নিতে হবে। ইরি চাষের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় ৮০ ভাগ পানি ভূ-গর্ভ থেকে উত্তোলন করা হয়। এদিকে, অতিরিক্ত পানি উত্তোলনের কারণে ঢাকার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমেই নিচে নেমে যাচ্ছে এ খবরটি নতুন নয়। প্রতিবছর পানির স্তর যে হারে নিচে নেমে যাচ্ছে বন্যা ও বৃষ্টির পানির মাধ্যমে রিচার্জ হচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা নতুন করে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন ঢাকা শহরের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর বঙ্গোপসাগরের পাানির গড় উচ্চতার তুলনায় নিচে নেমে যাওয়ার কারণে সাগরের লোনা পানি অপেক্ষাকৃত দ্রুতগতিতে উত্তর দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ঢাকা শহরের ভূ-অভ্যন্তরে লবণাক্ত পানি প্রবেশের ব্যাপক আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এখনই এ বিষয়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আগামী এক থেকে দেড় দশকে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ভূগর্ভের ফাঁকা জায়গায় ঢুকে পড়বে সমুদ্রের লোনাপানি। ফলে রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকায় দেখা দেবে সুপেয় পানির তীব্র সঙ্কট। সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপার এক গবেষণা রিপোর্টেও উল্লেখ করা হয়েছে ঢাকা শহরের পানির স্তর এখন সমুদ্রপৃষ্ঠের চেয়ে ১৭০ ফুট নিচে নেমে গেছে। রাজশাহীতেও পানির স্তর ১৮ থেকে ২৯ ফুট নিচে চলে গেছে। ফলে সাগরের লোনা পানি দক্ষিণাঞ্চল পার হয়ে এখন ঢাকা মহানগরীসহ দেশের মধ্যঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের দিকে আসছে। অপরিকল্পিতভাবে পানি উত্তোলনের ফলে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার ফলে ঢাকার পানিতে লবণাক্ততা দেখা দেয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। গবেষণায় আর বলা হয়েছে ইতোমধ্যেই দক্ষিণাঞ্চলের ৬ কোটি মানুষ ভূগর্ভস্থ লবণাক্ততা বৃদ্ধিজনিত বিপর্যয়ের হুমকিতে রয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন যে গ্রাউন্ড ওয়াটার জোনিং ম্যাপ তৈরি করে, তাতে দেখানো হয়েছে দেশের মধ্যভাগ ও উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে বিস্তৃত ৩১টি জেলার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর প্রতিবছরই একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় নেমে যাচ্ছে। তাছাড়া হাইড্রোলজি এ্যান্ড আর্থ সাইন্সেস শীর্ষক আন্তর্জাতিক জার্নালে ২০০৯ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা অববাহিকাজুড়ে বিস্তৃত দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর প্রতি বছর ১০ থেকে ৫০ সেন্টিমিটার হারে নেমে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের যত্রতত্র সেচ পাম্প বসানো, সেচ কাজের কাজের অব্যবস্থাপনাজনিত কারণে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি উত্তোলন ছাড়াও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের অধিকাংশ নদ-নদীর পানির স্তর নেমে যাচ্ছে। ফলে সব এলাকার মাটির নিচে বিস্তৃত অগভীর পানির মজুদগুলোতে পানির স্তর নেমে যাচ্ছে। তাদের মতে, ভূগর্ভস্থ অঞ্চলের পানির স্তর দ্রুত নেমে যাওয়ার সঙ্গে ভারতের পানি প্রত্যাহারের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের-ভারতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত আন্তঃদেশীয় নদীগুলোর অধিকাংশের উজানে ভারত নানা সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এতে ভাটিতে বাংলাদেশ অংশে নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বিঘিœত হচ্ছে। ফলে নদী পানির স্তরসহ নদী অববাহিকায় অবস্থিত ভূগর্ভস্থ পানির মজুদের উপরও বিরূপ প্রভাব ফেলছে। তাদের মতে, সম্প্রতি সেচ কাজে নদনদীর পানির ওপর নির্ভরকতা একেবারেই কমে এসেছে। নববইয়ের দশকে যেখানে ৮০ শতাংশ সেচের উৎস ছিল নদ-নদী, বর্তমান কমে গিয়ে ২০ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। ফলে ভূগর্ভস্তরের পানির অপর অধিক চাপ বাড়ছে। ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিংয়ের (আইডব্লিউএম) এর পক্ষ থেকে সম্প্রতি যে গ্রাউন্ড ওয়াটার মডেলিং করা হয়েছে তাতে দেখা গেছে, উত্তর-পশ্চিমের যৌথ নদী অববাহিকাজুড়ে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় দ্রুতগতিতে নেমে আসছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর থেকেও ১৯৮৬ সাল থেকে সারাদেশে ভূগর্ভস্থ পানির স্তরের হ্রাস-বৃদ্ধির জরিপ চালানো হচ্ছে। তার ভিত্তিতে দেখা যায় বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অধিকাংশ জায়গায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর স্বাভাবিক স্তর থেকে নিচে নেমে গেছে। ভূগর্ভস্তরের পানির ওপর বিভিন্ন জরিপে দেখানো হয়েছে, প্রতিবছর যে পরিমাণ পানি ভূগর্ভ থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে সেই পরিমাণ পানি ভূগর্ভে রিচার্জ হচ্ছে না। বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এবং শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই উত্তরাঞ্চলের নদ-নদী ও খাল-বিলগুলো পানিশূন্য হওয়ায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে নিচে নেমে যাচ্ছে। সরকারী হিসেবে দেখানো হয়েছে দেশের উত্তরাঞ্চলে কৃষি কাজে ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার হচ্ছে ৯৮ভাগ। এভাবে ভূগর্ভস্থ পানির ব্যাপক ব্যবহারে দেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে। পরিবেশ ও পানি বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতিবছর বিভিন্ন কারণে পাতাল পানির ব্যবহারের কারণে পানির স্তর ৫ মিটার নিচে নেমে যায়। বৃষ্টিপাতের কারণে পাতাল পানি ১ মিটার এবং বর্ষাকালে বন্যার কারণে নিচু জমি ও জলাভূমি প্লাবিত হওয়ায় ৪মিটার রিচার্জ হয়। নদীতে পানি প্রবাহ কমে গেলে পাড় উপচে নিচু কৃষি জমি নিম্নাঞ্চল ও জলাভূমি প্লাবিত হয় না। এতে পাতাল পানি রিচার্জ কমে যাচ্ছে। তাঁর মতে পাতাল পানির স্তর ৮ মিটারের বেশি নিচে নেমে গেলে নলকূপে কোন পানি উঠবে না। ফলে সেচের পানি ও খাবারের জন্য পানি পাওয়া যাবে না। প্রতিবছর বর্ষাকালে দেশের মোট আয়তনের ২২ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হলেই কেবল পাতাল পানির পর্যাপ্ত রিচার্জ হবে।
×