ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পরীক্ষাগারে তৈরি ভোকাল কর্ড

প্রকাশিত: ০৭:২০, ২৭ নভেম্বর ২০১৫

পরীক্ষাগারে তৈরি ভোকাল কর্ড

বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো মানুষের ভোকাল কর্ড থেকে নেয়া কোষ দিয়ে পরীক্ষাগারে ভোকাল কর্ড কোষ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। পরীক্ষাগারে বেড়ে ওঠা এই কোষ প্রাকৃতিক কোষের মতোই সাড়া প্রদানে সক্ষম। বিজ্ঞানীরা আশা প্রকাশ করছেন, একদিন এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ভোকাল কর্ড ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া মানুষরা তাদের হারানো কণ্ঠস্বর ফিরে পেতে পারবেন। আমাদের গলার সামনের অংশে ল্যারিংস বা শব্দযন্ত্র অবস্থিত, যেখানে দুটি ভোকাল কর্ড রয়েছে। শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় ফুসফুস থেকে প্রবাহিত বাতাস টানটান অবস্থায় থাকা ভোকাল কর্ডকে কম্পিত করে শব্দ সৃষ্টি করে। কথা বলার সময় প্রতি সেকেন্ড ১০০ থেকে ২০০ বার ভোকাল কর্ড কম্পিত হয়। তবে গান গাওয়ার সময় সেটি সেকেন্ডে প্রায় ১০০০ বার কম্পিত হয়। কিন্তু আবার এমনও হয়Ñ কোন ব্যক্তির ভোকাল কর্ড সেকেন্ড ১০০ বারও কম্পিত হতে পারে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২০ মিলিয়ন মানুষ সাময়িক বা স্থায়ীভাবে কণ্ঠ সমস্যায় ভুগে থাকে। ক্যান্সার থেকে সুরক্ষায় রেডিয়েশনের প্রভাবে বা অধিকবার সার্জারির কারণে ভোকাল কর্ডে সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা কিনা স্থায়ীভাবে কথা বলার ক্ষমতা রোধ করে দিতে পারে। বিজ্ঞানীরা গবেষণাগারে দুটি প্রধান কোষে মিউকাস স্থাপন করেন যা ফিব্রোব্লাস্ট কোষ উৎপন্ন করবে। এটি কোষের মূল অংশ তৈরি করবে এবং এপিথেলিয়াল কোষ, যা পৃষ্ঠভাগ গঠন করবে। বিজ্ঞানীরা মানব শরীর থেকে এপিথেলিয়াল কোষ ও ফিব্রোব্লাস্ট সংগ্রহ করেন। এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা একজন মৃত ব্যক্তি ও তিনজন জীবিত ব্যক্তি থেকে এগুলো সংগ্রহ করেন, যারা ইতোমধ্যে অন্য সার্জারিতে তাদের শব্দযন্ত্র হারিয়েছেন। বিজ্ঞানীরা এই দুই ধরনের কোষকে একটি থ্রিডি কোলজেন ম্যাট্রিক্সে স্থাপন করেন। দুই সপ্তাহ পর বিজ্ঞানীরা দেখতে পান কোষটি জটিল আকার ধারণ করছে এবং যা খুব তাড়াতাড়ি প্রকৃত ভোকাল কর্ডের সদৃশ হয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষার জন্য পাঁচটি মৃত কুকুরের শব্দযন্ত্র থেকে একটি ভোকাল কর্ড সরিয়ে সেখানে পরীক্ষাগারে সৃষ্ট ভোকাল কর্ড স্থাপন করেন। পরে বিজ্ঞানীরা নলের সাহায্যে শব্দযন্ত্রে বাতাস প্রবেশ করিয়ে যে শব্দ সৃষ্টি করেন তা ছিল প্রায় প্রকৃত কোষের শব্দযন্ত্রের মতোই। নতুন এই গবেষণা তথ্যটি সায়েন্স ট্রানসেলেশনাল মেডিসিন-এ প্রকাশিত হয়েছে। প্রকৃতি ও বিজ্ঞান ডেস্ক
×