ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাদারীপুরে নির্বাচনী আমেজ

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৬ নভেম্বর ২০১৫

মাদারীপুরে নির্বাচনী আমেজ

সুবল বিশ্বাস, মাদারীপুর ॥ পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ৩ পৌর এলাকায় নির্বাচনী আমেজ শুরু হয়ে গেছে। প্রচারে মাঠে নেমে পড়েছেন মাদারীপুর সদর, কালকিনি ও শিবচর পৌরসভার সম্ভাব্য প্রার্থীরা। নির্বাচনী মাঠ এখন সরগরম। কেউ কেউ ৬ মাস ১ বছর আগ থেকেও পাড়া-মহল্লায় ঘুরে-ঘুরে জনসমর্থন যাচাই করে নিয়েছেন। আগামী ৩০ ডিসেম্বর পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এবার থেকে পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে দলীয় প্রতীক। তাই এবারের পৌর নির্বাচন ভিন্ন স্বাদ এনে দেবে ভোটারদের কাছে। স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক সরকারের এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন অনেকে। এবারের পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা একটু বেশিই পরিলক্ষিত হচ্ছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলীয় প্রতীক পেতে দৌড়-ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন নিজ নিজ দলের হাইকমান্ডের কাছে। এরই মধ্যে মাদারীপুরের ৩ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার-ফেস্টুন-ব্যানার টাঙিয়ে সম্ভাব্য মেয়র, ওয়ার্ড কাউন্সিলার ও মহিলা কাউন্সিলার প্রার্থীরা পৌরবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অনুদান দিয়ে ভোটারদের কাছে দোয়া চেয়ে তাদের মন জয় করার চেষ্টাও করছেন কেউ কেউ। জেলার ৪ পৌরসভার মধ্যে চলতি বছর ৬ জানুয়ারি নবগঠিত রাজৈর পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় ৩০ ডিসেম্বর রাজৈর পৌরসভার নির্বাচন হচ্ছে না। মাদারীপুর ॥ আওয়ামীলীগের একাধিক প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে সরব থাকলেও অনেকটাই নীরব বিএনপি। তাদের কোন প্রার্থী এখনও নির্বাচনী প্রচারে নামেনি। জেলা বিএনপি নেতাদের দাবি নির্বাচনী প্রচারে নামলেই তাদের মামলা হামলা করে হয়রানি করা হবে। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সময়মতো তারা প্রার্থী দেবে। তবে জেলা যুবদলের সভাপতি মিজানুর রহমান মুরাদ পৌর নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি জানান, দল যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং যদি আমাকে মনোনায়ন দেয়া হয় তবে আমি নির্বাচন করব। তবে জেলা বিএনপিতে চলছে গৃহদাহ। গত পৌর নির্বাচনে জেলা বিএনপির সভাপতি আবুবকর সিদ্দিক আবু মুন্সি বিএনপি প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করেছে এমন অভিযোগ এনে সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করেছে কেন্দ্রীয় বিএনপির কার্যনির্বাহী সদস্য কাজী হুমায়ুন কবির। তিনি অভিযোগ করেন বিএনপির একাংশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে রাজনীতি করছে। এতে পৌর নির্বাচনে ফল বিপর্যয়ের আশঙ্কাও করেন তিনি। গত পৌর নির্বাচনে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান গ্রুপ ও বাহাউদ্দিন নাছিম গ্রুপ ভিন্ন ভিন্ন প্রার্থী অংশগ্রহণ করে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগে গ্রুপিং-দ্বন্দ্ব না থাকলেও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবার শুরু হতে পারে গ্রুপিং। পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে মাদারীপুর পৌরসভা বর্তমান মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ ও শ্রমিকলীগ নেতা খন্দকার খায়রুল হাসান নিটুল প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। জেলা বিএনপির সভাপতি আবুবকর সিদ্দিক আবু মুন্সি জানান, দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা পদক্ষেপ নেব। এছাড়া বিভিন্ন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং মহিলা কাউন্সিলরের সম্ভাব্য প্রার্থীর সংখ্যা শতাধিক। কালকিনি ॥ কালকিনিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ৭ ও বিএনপির একজন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী প্রচার শুরু করেছেন। আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র এনায়েত হোসেন হাওলাদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মশিউর রহমান সবুজ, জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক লোকমান হোসেন ও কালকিনি সাবেক পৌর প্রশাসক আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক সোহেল রানা মিঠুসহ ৭ জন নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। বিএনপির একক সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন মুন্সি আলোচনায় রয়েছেন। বিভিন্ন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং মহিলা কাউন্সিলরের সম্ভাব্য প্রার্থীর সংখ্যা অর্ধশতাধিক। শিবচর ॥ শিবচর পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সম্ভব্য প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র আবদুল লতিফ মোল্লা, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোঃ শামসুদ্দিন খান, সাবেক চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আওলাদ হোসেন খান, যুবলীগের সাবেক সভাপতি আকরাম হোসেন খান ও বিএনপি প্রার্থী হিসেবে পৌর যুবদলের সভাপতি বাকাউল করিম খান এবং পৌর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক হেমায়েত হোসেন খানের নাম শোনা যাচ্ছে। অন্যদিকে, বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে আছেন। তবে তারা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং মহিলা কাউন্সিলরের সম্ভাব্য প্রার্থীর সংখ্যা শিবচরে অন্যান্য পৌরসভার চেয়ে আপাতত কম পরিলক্ষিত হচ্ছে।
×