ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গুয়ার হাওড়

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ২৬ নভেম্বর ২০১৫

টাঙ্গুয়ার হাওড়

ফয়জুন্নেসা মণি সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিশাল এই হাওড়টি এখন বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। অনেকেই এ হাওড়কে সম্পদ ও সৌন্দর্যের রানী হিসেবে অভিহিত করেছেন। দেশের অন্যান্য হাওড়ের সঙ্গে টাঙ্গুয়ার ভিন্নতা হলো এর সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য আর নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। ছোট বড় ৫১টি বিলের সমন্বয়ে গঠিত এই হাওড়। পরিবেশবাদীদের গবেষণা রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বে বিপন্নপ্রায় বিরল প্রজাতির দুই শতাধিক পাখির অভয়াশ্রম এই টাঙ্গুয়ার হাওড়। বিপন্ন ১৫০ প্রজাতির মাছের সমাগম এখানে। ভারতে খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড় থেকে নেমে আসা ২০ হাজার একরের ভূমি নিয়ে অন্যতম মিঠা পানির জলাভূমি এই টাঙ্গুয়া। হাওড় অববাহিকার সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক জলাভূমি হেমন্তে পানি শুকিয়ে এর আয়তন দাঁড়ায় ৬ হাজার ৯শ’ ১২ দশমিক ২০ একর। শুকনো মৌসুমে এখানকার সাড়ে ১৫ হাজার একর জমিতে বোরো ধান উৎপন্ন হয়। বিগত বছরে ১ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে পরিবেশবিষয়ক এনজিও সিএনআরএস নামক সংস্থা সুইজারল্যান্ড সরকারের উন্নয়ন সংস্থা এসডিসির অর্থায়নে একটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণের ফলে টাঙ্গুয়ার পার্শ¦বর্তী গুরমার হাওড়ে ৯শ’ একর জমিতে প্রায় ৮ কোটি টাকা মূল্যের ফসল উৎপন্ন হয়েছে। সিএনআরএস-হাওড়বাসীর উন্নয়নে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। টাঙ্গুয়ায় রয়েছে স্তন্যপায়ী দুর্লভ জলজপ্রাণী গাঙ্গেয় ডলফিন (শুশুক), খেঁকশিয়াল, উঁদ, বনরুই, গন্ধগোকুল, জংলি বিড়াল, মেছো বাঘ। গাছগাছড়ার মধ্যে রয়েছে- নলখাগড়া, হিজল, করচ, বরুণ, রেইনট্রি, পদ্ম, বুনো গোলাপসহ ২০০ প্রজাতিরও বেশি গাছগাছড়া। যা থেকে জ্বালানি কাঠ, আসবাবপত্রসহ গৃহ সামগ্রী ও শৌখিন শোপিস তৈরির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় হয়। এই দর্শনীয় পর্যটন স্পট টাঙ্গুয়ার হাওড়ের কাছে তাহিরপুর, টেকেরহাট, বারেকটিল এবং আশপাশে সুবিধাজনক এলাকায় হোটেল, মোটেল স্থাপন করা যেতে পারে। পর্যটকদের থাকা-খাওয়া ও ভ্রমণের সুব্যবস্থা থাকলে দেশী-বিদেশী মানুষের ভিড় বাড়বে এখানে। বাড়বে সরকারের রাজস্ব আয়। সৃষ্টি হবে স্থানীয় জনগণের কর্মস্থানের ক্ষেত্র। ধর্মপাশা, সুনামগঞ্জ থেকে
×