ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আল আমিনের হ্যাটট্রিকে জিতল বরিশাল বুলস

প্রকাশিত: ০৮:০৫, ২৫ নভেম্বর ২০১৫

আল আমিনের হ্যাটট্রিকে জিতল বরিশাল বুলস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আল আমিন কী বোলিংই না করলেন। হ্যাটট্রিকসহ একাই ৫ উইকেট নিয়ে নিলেন। তার এ দুর্দান্ত বোলিংয়ে টান টান উত্তেজনার ম্যাচে সিলেট সুপার স্টারসকে ১ রানে হারিয়েছে বরিশাল বুলস। টানা দুই ম্যাচ জিতে নিল বরিশাল। ম্যাচে টস জিতে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বরিশাল বুলস। আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু খুব বেশি রান স্কোরবোর্ডে জমা করতে পারেনি। ১৯.৩ ওভারে ১০৮ রান করতেই অলআউট হয়ে যায়। সর্বোচ্চ ২৪ রান করেন নাদিফ চৌধুরী। নাজমুল ইসলাম ৩ উইকেট নেন। জবাবে ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১০৭ রান করে সিলেট সুপার স্টারস। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন দিলশান মুনাভিরা। বল হাতে আল আমিন ৫ ও তাইজুল ইসলাম ৩ উইকেট শিকার করেন। শুরুটা অসাধারণ হয় বরিশালের। দুই ওপেনার শাহরিয়ার নাফিস ও রনি তালুকদার মিলে সুন্দর সব শট খেলতে থাকেন। কিন্তু যেই ৩৪ রান দলের স্কোরবোর্ডে জমা হয়, তখন থেকেই ওলট-পালট হয়ে যায় সব। ছন্নছাড়া হয়ে পড়েন বরিশালের ব্যাটসম্যানরা। এমন সময় রনি যে আউট হন, এরপর এক এক করে ৮০ রানের মধ্যে ৭ উইকেটের পতন ঘটে যায়। এমন অবস্থা হয়, ১০০ রান করাটাই কষ্টসাধ্য মনে হয়। এমন সময় দলের হাল ধরেন নাদিফ চৌধুরী। তার সঙ্গে স্কোরবোর্ডে যতটা পারা// যায় রান যোগ করার চেষ্টা করে যান তাইজুল। দুইজন মিলে প্রয়োজনের মুহূর্তে ২১ রানের জুটি গড়েন। যা দলকে ১০১ রানে নিয়ে যায়। এমন মুহূর্তে নাদিফ আউট হতেই ১০৮ রানের মধ্যে গুটিয়ে যায় বরিশাল। মোহাম্মদ শহীদের বলে বোল্ড হন আল আমিন। বরিশালও অলআউট হয়ে যায়। শহীদ সামান্য আনন্দ করেন। কিন্তু আল আমিন এগিয়ে এসে শহীদকে উল্টা পাল্টা বলতে থাকেন। একটু তর্ক বিতর্কও হয়। শেষে এসে সিলেট সুপার স্টারসের অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম সামলে নেন। তবে এ বিষয়টি আল আমিনের ভেতর হয়ত জেদ তৈরি করে দেয়। এত কম রানে অলআউট হয়েও কঠোর লড়াই চালিয়ে যান। তাতে আল আমিন পুরো সাফল্যই পান এবং হ্যাটট্রিকই করে বসেন। দলও সাফল্য পায়। আল আমিনের দুর্দান্ত বোলিংয়ের জন্য সিলেট সুপার স্টারসের শুরুটাই বাজে হয়। যখন দল ১ উইকেট হারিয়ে ১৮ রানে তখন আল আমিন তোপ শুরু হয়। ৩.২ বলে রবি বোপারাকে (৪) আউট করে পরের দুই বলে ৩.৩ ও ৩.৪ বলে দুটি দুর্দান্ত ডেলিভারিতে নুরুল হাসান ও মুশফিককে বোল্ড করে দেন আল আমিন। মুশফিককে যে আউট করেন, মিডল স্টাম্পই ভেঙ্গে যায়! বিপিএলে ২০১২ সালে ঢাকার বিপক্ষে যে হ্যাটট্রিক করেন পাকিস্তানী পেসার মোহাম্মদ সামি, এরপর মঙ্গলবার আল আমিন দ্বিতীয় বোলার হিসেবে বিপিএলে হ্যাটট্রিক করলেন। তার এ দুর্দান্ত বোলিংয়ে মুহূর্তেই সিলেট সুপার স্টারসের হারের শঙ্কাই তৈরি হয়ে যায়। ১৮/১ থেকে মুহূর্তেই ১৮/৪ এ পরিণত হয় সিলেট। এরপর দিলশান মুনাভিরা ও ওয়াইজ শাহ মিলে দলকে ৬১ রানে নিয়ে যান। এমন মুহূর্তে আবার বিপত্তিতে পড়ে সিলেট। এবার তাইজুল ইসলামের স্পিন ঘূর্ণিতে বিপদে পড়ে সিলেট। ৬১ রানের সময় শাহকে (১১) ও ১ রান যোগ হতেই মুনাভিরাকে (৩৬) আউট করে দেন তাইজুল। ৯০ রানের সময় নাজমুল ইসলামকে (১৬) আউট করে দেন মোহাম্মদ সামি। সিলেট সুপার স্টারসের হারার পথ অনেকটাই তৈরি হয়ে যায়। ১২ বলে জিততে যখন ১৬ রানের প্রয়োজন, এমন সময় আবার বল করতে আসেন আল আমিন। ১৯তম ওভারের প্রথম বলেই নাজমুল হোসেন মিলন আউট হয়ে যেত, কিন্তু শাহরিয়ার ক্যাচ মিস করেন। ১০ বলে যখন ১৪ রানের দরকার এমন সময় মিলনকে (১৫) আউট করে দেন আল আমিন। ৫ উইকেট নিয়ে নেন আল আমিন। ওভারের শেষ বলে গিয়ে ফিদেল এডওয়ার্ডস বাউন্ডারি হাঁকান। শেষে ৬ বলে ৮ রানের প্রয়োজন পড়ে। স্পিনার তাইজুল বল করতে আসেন। প্রথম বলেই মোহাম্মদ শহীদকে (২) আউট করে দেন। ৫ বলে ৮ রানের দরকার থাকে। হাতে থাকে ১ উইকেট। দ্বিতীয় বলে ২ রান হয়ে যায়। তৃতীয় বলে হয় ১ রান। ৩ বলে ৫ রানের প্রয়োজন থাকে। চতুর্থ বলে কোন রান হয় না। টান টান উত্তেজনা তৈরি হয়ে যায়। পঞ্চম বলে গিয়ে ১ রান নেন শুভাশিষ। ১ বলে জিততে ৪ রানের প্রয়োজন থাকে। ব্যাটিংয়ে থাকেন এডওয়ার্ডস। বোলিংয়ে থাকেন তাইজুল। ২ রান হয়। ১ রানে জিতে যায় বরিশাল বুলস। টানা দুই ম্যাচে হার হয় সিলেট সুপার স্টারসের। স্কোর ॥ বরিশাল বুলস ১০৮/১০; ১৯.৩ ওভার (নাদিফ ২৪, রনি ২০; নাজমুল ৩/১৮)। সিলেট সুপার স্টারস ১০৭/৯; ২০ ওভার (মুনাভিরা ৩৬, নাজমুল ১৬; আল আমিন ৫/৩, তাইজুল ৩/২৩)। ফল ॥ বরিশাল বুলস ১ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ আল আমিন (বরিশাল বুলস)।
×