ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিপিএল- আমিরের ফেরার মঞ্চ!

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ২৪ নভেম্বর ২০১৫

বিপিএল- আমিরের ফেরার মঞ্চ!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) পুনর্জন্ম দিয়েছিল নাসির জামসেদকে। শামসুর রহমান শুভ ফের জাতীয় দলে ডাক পেয়েছিলেন এই বিপিএলে আলো ছড়িয়ে। পাকিস্তানের ‘কলঙ্কিত নায়ক’ মোহাম্মদ আমিরও বিপিএলে ভাল করেই ফের জাতীয় দলে ফিরতে চান। চিটাগাং ভাইকিংসে সাইন করেই নিজের বাসনার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। শ্বাসরুদ্ধকর প্রথম ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের কাছে ২ উইকেটে হেরে গেছে দল। তবে বল হাতে ঠিকই নিজের জাত চিনিয়েছেন আমির। ৪ ওভারে ৩০ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট, সঙ্গে ১ মেডেন- ক্লাব টি২০তে করেছেন ক্যারিয়ারসেরা বোলিং। আইসিসির নিষেধাজ্ঞা ওঠার পর পাকিস্তানের বাইরে এটিই ছিল তার প্রথম ম্যাচ। ভীনদেশের কোন প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনে পা ফেলেই হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন ২৩ বছর বয়সী আলোচিত এই পাকিস্তানী। ‘চিটাগাং ভাইকিংস কর্তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ যে তারা আমাকে এমন একটি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়েছেন। দলের সাফল্যে নিজের শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করব। আমার লক্ষ্য ভারতের মাটিতে আসন্ন টি২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তান জাতীয় দলে জায়গা করে নেয়া।’ বিশ্লেষকরাও তাই মনে করেন। ঘরোয়া ক্রিকেট হয়ে বিপিএল- প্রত্যাবর্তনে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন প্রতিভাবান এই পেসার। তবে দুটি প্রশ্ন এক্ষেত্রে বড় হয়ে সামনে উঠে আসছে। প্রথমত, ফিক্সিংয়ের কলঙ্ক লেগেছে বিপিএলের গায়েও। যদিও এবারের আসর দিয়ে সেই অতীত ভুলে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছেন টুর্নামেন্টের আয়োজকরা। একই কারণে নিষিদ্ধ বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল যেমন বলেন, ‘অনেকের দায়িত্ব থাকলেও ফিক্সিং থেকে দূরে থাকতে মূল ভূমিকাটা খেলোয়াড়েরই। যে কোন ধরনের অনৈতিক প্রস্তাবই একজন ক্রিকেটারকে একবাক্যে না বলতে হবে। আত্মোপলব্ধি থেকে বলছি, আমিরের অনেক শিক্ষা হয়েছে, যা ওকে ভবিষ্যতে আরও ভাল মানুষ, ভাল ক্রিকেটার হতে সাহায্য করবে।’ অন্যটি পাকিস্তানের অভ্যন্তীরণ সমস্যা। আমিরের ফেরা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত দলটির সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটাররা। কারও মতে, বয়স কম হওয়ায় আমিরকে ক্ষমা করে দেয়া উচিত। কেউ আবার বলছেন, কলঙ্কিত ক্রিকেটারকে ফিরিয়ে আনলে সেটি বাজে উদাহরণ সৃষ্টি করবে। আমিরের প্রত্যাবর্তন পরিস্থিতি আর ঘোলাটে করে তুলেছেন মোহাম্মদ হাফিজ! বিপিএলে তুখোড় এই অলরাউন্ডারকে পেতে বিশাল অঙ্কের প্রস্তাব দিয়েছিল চিটাগাং ভাইকিংস। কিন্তু আমিরের সঙ্গে ড্রেসিং রুম ভাগাভাগি করতে হবে বলে সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন তিনি! হাফিজ বলেন, ‘এটি পাকিস্তান ক্রিকেটের ভাবমূর্তির বিষয়। আমি এমন কোন ক্রিকেটারের সঙ্গে খেলতে পারি না, যে দেশের ইজ্জত ধুলোর সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘এটা সম্পূর্ণই আমার ব্যক্তিগত মত। আমরা পৃথিবীর সব দর্শকদের জন্য খেলে থাকি। এর মধ্য দিয়ে আমরা তাদের বিনোদন দেই। কেউ যদি সেটার অপব্যবহার করার পর খেলায় অংশ নেয়, তবে আমি তার সঙ্গে ড্রেসিং রুম ভাগভাগি করতে পারি না। সেটা কেবল আমিরের বেলায় নয়, অন্য কেউ হলেও আমি আমার নীতি থেকে সরে আসব না।’ হাফিজ পাকিস্তান জাতীয় দলের সিনিয়র ও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তার মতো একজনের মুখ থেকে এমন বক্তব্য আমিরের প্রত্যাবর্তনে নেতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এর আগে টি২০ অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদিও প্রায় একই ধরণের বক্তব্য রেখেছিলেন।
×