ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিল নিয়ে মুখোমুখি মৎস্যজীবী-দখলবাজ

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৩ নভেম্বর ২০১৫

বিল নিয়ে মুখোমুখি  মৎস্যজীবী-দখলবাজ

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ২২ নবেম্বর ॥ মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের শালদহ মৌজার উন্মুক্ত জলমহাল শ্যাল্লের বিল জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে। রাজশাহীর তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মসলেম আলী ও বিহারোল গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান বিলটি দখলে নিয়ে তাদের অনুগতদের দিয়ে প্রতিদিন মাছ শিকার করে যাচ্ছেন। প্রভাবশালী এ দুই ব্যক্তির হুমকির মুখে মান্দা উপজেলার চার গ্রামের তিন শতাধিক মৎস্যজীবী ওই বিলে মাছ শিকার করতে পারছেন না। রবিবার মৎস্যজীবীরা বিলে মাছ শিকারের প্রস্তুতি নেয়ায় এলাকাজুড়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। দখলবাজ ও মৎস্যজীবীরা মুখোমুখি অবস্থান নেয়ায় সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তানোর উপজেলার বাসিন্দা আব্দুল মান্নানকে ওই বিলে মাছ শিকারের মৌখিক অনুমতি দিয়েছে মান্দা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আয়নাল হক। এতে ভরা মৌসুমেও বিলে নামতে না পারায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। ঘটনায় বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাননি বলে অভিযোগ তাদের। এদিকে গত চারদিন ধরে অফিস ছেড়ে লাপাত্তা রয়েছেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আয়নাল হক। তার ব্যবহৃত মোবাইলফোনটিও বন্ধ রয়েছে। উপজেলার রুয়াই গ্রামের মৎস্যজীবী দেবেন চন্দ্র হালদার, শালদহ গ্রামের শ্রীবাস চন্দ্র হালদারসহ আরও অনেকে জানান, শালদহ মৌজায় ৩৫ দশমিক ২৬ একর আয়তনের শ্যাল্লের বিলটি একটি উন্মুক্ত জলাশয়। স্থানীয় মৎস্যজীবীদের স্বার্থে বিলটি উন্মুক্ত রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন। এ মৌসুমে হঠাৎ করেই রাজশাহীর তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মসলেম আলী ও বিহারোল গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নানসহ তাদের অনুগতরা বিলটি জবরদখল করে মাছ শিকার শুরু করে। এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার শালদহ, রুয়াই, পলাশবাড়ী ও ভারশোঁ গ্রামের মৎস্যজীবীরা বিলে মাছ শিকার করতে গেলে চেয়ারম্যান ও সাবেক মেম্বারের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে ধাওয়া দিলে সংঘর্ষ এড়াতে পিছু হঠেন তারা। মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান মসলেম আলী ও সাবেক মেম্বার আব্দুল মান্নানের নিকট থেকে লক্ষাধিক টাকা নিয়ে তাদের বিলে মাছ শিকারের মৌখিক অনুমতি দিয়েছে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা। ঘটনায় জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করা হলেও কোন প্রতিকার পাননি বলে তাদের অভিযোগ। মৎস্য কর্মকর্তা অফিসে উপস্থিত না থাকার বিষয়ে ইউএনও সাইফুর রহমান খান কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন। মৎস্য কর্মকর্তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি। শ্যাল্লের বিল জবরদখল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মৎস্যজীবীদের স্বার্থে বিলটি উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।
×