ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা

বিনিয়োগ সমন্বয়ে সময় বাড়ানোর ঘোষণায় সূচকের উত্থান

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ২২ নভেম্বর ২০১৫

বিনিয়োগ সমন্বয়ে সময় বাড়ানোর ঘোষণায় সূচকের উত্থান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ব্যাংকের বাড়তি বিনিয়োগ নির্ধারিত সীমায় নামিয়ে আনতে সময় বৃদ্ধির সরকারী ঘোষণায় দরবৃদ্ধির প্রবণতায় ফিরেছে দেশের পুঁজিবাজার। টানা অষ্টম সপ্তাহের দরপতন শেষে সূচকের উল্লেখযোগ্য উত্থান দেখলেন বিনিয়োগকারীরা। বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসায় বেড়েছে কেনাবেচাও। এর আগে গত রবিবার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসের লেনদেন শেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সমন্বয়ের সময়সীমা দুই বছর বাড়ানো হবে। এতে আগামী জুলাই পর্যন্ত প্রতি মাসে ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে গড়ে ৭০০ কোটি টাকারও বেশি নিট শেয়ার বিক্রির আশঙ্কা প্রশমিত হয়। সোমবার টানা প্রায় দেড় মাসের দরপতনের ধারা থেকে বেরিয়ে আসে দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ। গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের পাশাপাশি বেড়েছে সব ধরনের মূল্য সূচক। আলোচিত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ২০ দশমিক ১৭ শতাংশ। জানা গেছে, আগের সপ্তাহের চেয়ে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৩০০ কোটি ৪৯ লাখ টাকার। আলোচিত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৭৯০ কোটি ৬৩ লাখ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৪৯০ কোটি ১৩ লাখ টাকার। সমাপ্ত সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ। ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ। ‘জেড’ ক্যাটাগরির লেনদেন হয়েছে ১ দশমিক ০৮ শতাংশ। বাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক দরপতনের পর পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা মৌলভিত্তি বিবেচনায় অনেক শেয়ার কিনেছেন, যেগুলোর দর ক্রয়সীমার মধ্যে নেমে এসেছে। এদিকে, ডিএসইর সার্বিক সূচক বা ডিএসইএক্স সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ২১ শতাংশ বা ৯৮ দশমিক ০৫ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই৩০ সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ বা ৩১ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট। অপরদিকে, শরীয়াহ বা ডিএসইএস সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ২৫ শতাংশ বা ২৪ দশমিক ০৪ পয়েন্টে। সপ্তাহ জুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩২৮টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২৩৮টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ৬৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬টির। আর লেনদেন হয়নি ৭টি কোম্পানির শেয়ার। গত সপ্তাহে সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) বেড়েছে ১.৭৮ শতাংশ। বর্তমানে ডিএসইর পিই রেশিও অবস্থান করছে ১৫.০৪ পয়েন্টে, যা গত সপ্তাহের শুরুতে ছিল ১৪.৭৮ পয়েন্ট। অর্থাৎ পিই রেশিও বেড়েছে ০.২৬ পয়েন্ট বা ১.৭৮ শতাংশ। বর্তমানে খাত ভিত্তিক পিই’র হিসাবে ব্যাংকিং খাতের পিই অবস্থান করছে ৭.৮০ পয়েন্টে, সিমেন্ট খাতের ৩০.৮৪, সিরামিকস খাতের ২৯.৮৬, প্রকৌশল খাতের ১৯.৪৬, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ২৩.০২, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ৩২.২৬, জ্বালানি ও বিদ্যুত খাতের ১১.৮৪, বীমা খাতের ১৬.০২, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ১৮.১০, পাট খাতের ১৪২.৯৭, বিবিধ খাতের ২৯.২০, পেপার ও প্রকাশনা খাতের ৩৪.১৯, ওষুধ ও রসায়ন খাতের ২৩.০২, সেবা ও আবাসন খাতের ২২.৩৪, চামড়া খাতের ২৮.৯৮, টেলিযোগাযোগ খাতের ১৮.৩২, বস্ত্র খাতের ১১.১৯, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের ১৬.৯৫ পয়েন্ট। সাপ্তাহিক লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : ইফাদ অটোস, সাইফ পাওয়ার টেক, তিতাস গ্যাস, বেক্সিমকো ফার্মা, অলিম্পিক ইন্ড্রাস্টিজ, কেডিএস এক্সেসরিজ, কাসেম ড্রাইসেল, বেক্সিমকো, স্কয়ার ফার্মা ও বিএসআরএম স্টিল। দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো : এটলাস বাংলাদেশ, ফনিক্স ফাইন্যান্স, এ্যাপেক্স ট্যানারি, পেনিনসুলা চট্টগ্রাম, আইপিডিসি, এ্যাপেক্স ফুডস, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, ওরিয়ন ইনফিউশন, ন্যাশনাল টিউবস ও ইউনাইটেড ফাইন্যান্স লিমিটেড। দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো : রহিম টেক্সটাইল, সিভিও পেট্রো কেমিক্যাল, আরএসআরএম স্টিল মিলস লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, ইফাদ অটোস, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, সোনালী আঁশ, জেমিনি সী ফুড, জাহিন টেক্সটাইল ও জুটস স্পিনার্স।
×