ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ফুওয়াং ক্লাবে র‌্যাবের অভিযান, বিপুল মাদক উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ২১ নভেম্বর ২০১৫

ফুওয়াং ক্লাবে র‌্যাবের অভিযান, বিপুল মাদক উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বিতর্কিত ‘ফুওয়াং ক্লাবে’ অভিযান চালিয়ে ৪৭৩ বোতল বিদেশী মদ এবং ৯৭৩ ক্যান বিয়ারসহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে র‌্যাব-১ এ অভিযান চালায়। এ ছাড়া রাজধানীর কমলাপুর ও সূত্রাপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভাসমান ১৪ জন গাঁজা বিক্রেতাকে ৬ মাস করে কারাদ- প্রদান করে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিভাগের ভ্রাম্যমাণ আদালত। র‌্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক মেজর মাকসুদুর আলম জানান, বিতর্কিত ‘ফুয়াং ক্লাব’ দীর্ঘদিন ধরে অনুমোদনহীন বিদেশী মদ বিক্রি করছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব এ অভিযান চালায়। অভিযানের সময় ক্লাবটির পক্ষে কোন বৈধ অনুমোদনপত্র দেখাতে পারেনি কেউ। এ সময় ক্লাবটির ম্যানেজার মাহিন ও গোলাম মুর্তজা নামের দু’জনকে আটক করা হয়। অভিযানের পর রাতে মেজর আসিফ জনকনণ্ঠকে বলেন, বিগত ২০১১ সালের পর থেকে ওই ক্লাবের মাদক বিক্রির কোন বৈধ কাগজপত্র তারা দেখাতে পারেনি। পরে মাদকদ্রব্য বিভাগের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মাল জব্দ করা হয়। তখন মাদক কর্মকর্তারা স্বীকার করেন-গত দেড় বছর ধরে ওই ক্লাবটিকে মাদক আমদানি করার অনুমোদন বন্ধ রাখা ছিল। তারপরও কিভাবে তারা এখানে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এমন প্রশ্নও রাখেন মেজর আসিফ। তিনি আরও জানান-অভিযানের সময় ক্লাবটির বাথরুম ও গার্ডরুমেও লুকিয়ে রাখা মদ বিয়ার পাওয়া যায়। বৈধ মাদক তো থাকে নিজস্ব গোডাউনে। এখানে লুকানো থাকবে কেন ? পুলিশ জানায়, ফুওয়াং ক্লাবে এ ধরনের অনুমোদনহীন মাদকের রমরমা বাণিজ্যের অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিনের। বার বার তাগিদ দেয়ার পরও এটা বন্ধ করা হয়নি। এ ক্লাবের বিরুদ্ধে বিদেশী নাগরিকের আড়ালে দেশীয় ক্রেতাদের কাছে মদ বিয়ার বিক্রি করা হতো। এর আগেও এই ক্লাবে একাধিকবার অভিযান চালিয়ে অবৈধ মদ বিয়ার সীসা ও গাঁজা জব্দ করা হয়। র‌্যাব জানায়, তেজগাঁও জোনের পরিদর্শক মোফাজ্জলের সহযোগিতায় এ ক্লাবটিতে অবৈধ মাদক বিক্রি করা হচ্ছিল। এখান থেকে নিয়মিত মাসোহারা নিয়ে মাদকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করা হতো। এ অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে মোফাজ্জল জনকণ্ঠকে বলেন, এ ধরনের ব্যবসা যারা করে তারা খুবই প্রভাবশালী। এখন র‌্যাব ধরেছে। কাগজপত্র চেক করে দেখছি এটা কতটা বৈধ-অবৈধ। র‌্যাব সূত্র জানায়, ফুওয়াং ক্লাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল রাজধানীতে তাইওয়ানের বিনিয়োগকারীদের বিনোদনের জন্য। এটাতে এলকোহলের একটি বারও অনুমোদন দেয়া হয়। এ অনুমোদনের পর ক্লাবটি কিছুদিন বারের সব নীতিমালা মেনে চলে। এক পর্যায়ে নুরুল ইসলাম নামের একজন ব্যবসায়ীর কাছে ক্লাবটি বিক্রি করে দেয়া হয়। তারপরই ওই বারটিকে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। ডিউটি ফ্রি সুবিধা ক্লাবটিতে বার খুলে রমরমা বাণিজ্য শুরু হয়। বিদেশী বারের অনুকরণে ফুওয়াং ক্লাবটির সাজসজ্জা থাকায় স্বল্প সময়ে তা ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এক পর্যায়ে প্রতি বৃহস্পতিবার রাতে এখানে জমানো হতো ডিজে পার্টিসহ জুয়ার আসর। এরপাশেই তৈরি করা হয় কয়লা নামের আরও একটি ব্যতিক্রমধর্মী রেস্তরাঁ। শাহজালালে গাঁজাসহ ওমানগামী মহিলা আটক ॥ এদিকে হজরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ওমানগামী এক মহিলাকে এক কেজি গাঁজাসহ আটক করে মাদক দ্রব্যনিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। উত্তরা জোনের পরিদর্শক কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাতে এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় গাঁজাসহ আমেনা নামের এক ওমানগামী যাত্রীকে আটক করা হয়। পরে তাকে বিমানবন্দর থানায় সোপর্দ করা হয়। ১৪ জনের কারাদ- ॥ এ ছাড়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ভ্রাম্যমাণ আদালত রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে গাঁজা বিক্রি করার দায়ে ১৪ জনকে আটকের পর প্রত্যেককে ৬ মাস করে কারাদ- প্রদান করে। জানা যায়, কমলাপুর ও সূত্রাপুর এলাকার ভাসমান গাঁজা বিক্রেতা হিসেবে তাদের আটক করা হয়। তারা হলেন বাদশাহ, আরমান হোসেন, জনি মাহমুদ, মোহাম্মদ আলী, মনিরুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, তাজুল ইসলাম, আরমান, জাহিদ হাসান শুভ, মোহাম্মদ সুমন, ও মাহতাবুর রহমান। তাদের বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ আটকের পর পরিদর্শক কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব জামিল প্রত্যেককে ৬ মাসের সাজা প্রদান করেন।
×