ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকা তোমাকে কী দিল

জাফর ওয়াজেদের গুচ্ছ কবিতা

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ২০ নভেম্বর ২০১৫

জাফর ওয়াজেদের গুচ্ছ কবিতা

ঢাকা তোমাকে কী দিয়েছে, বলো হে চান্দু বেপারি মাথার উপর এই যে উড়াল পুল অজস্র গতির গাড়ি কিংবা ধরো মোড়ে মোড়ে বিলবোর্ডে নারী এবং শাড়ি হাইরাইজ সব ভবনগুলো গুনতে গুনতে সূর্য দেয় পাড়ি। হ্যাঁচকা টানে নাটবল্টু মাথার তোমার নেয় খুলে যারা রাতবিরেতে দিন দুপুরে সিঁধকাটি আর মলম দিয়ে খাঁড়া যমদূত সব ঘুরে বেড়ায়, অন্ধকারে দেয়াল ধরেই দাঁড়া দাঁড়াতে দাঁড়াতে ক্লান্ত যখন-সর্বস্বই দেউলিয়া করা সারা। ঢাকতে ঢাকতে বেলা ফুরোয় রাতের বাতি আসমানেতে খানাখন্দ ঘিরে আছে ঢাকনামুক্ত দুর্গন্ধের ম্যানহোলেতে ঢাকবে কে আর দেখবে কে আর ধুলায় দেহ হাতড়াতে বৃষ্টি ঝরা রাতের ঘোরে রাস্তাজুড়ে ব্যাকস্ট্রোক সাঁতরাতে। কে আর কাকে মান্য করে, কাজীর গরু কিতাবজুড়ে, ঘাস খেয়ে যায়, শকুন ওড়ে, বাদ্য বাজে ব্যান্ড সুরে চান্দু তোমার কী আসে যায় হাওয়া যখন ডানে ঘুরে বামের বাতাস কান ফাটিয়ে ভয় দেখিয়ে সরায় দূরে... মারুন কষে পশ্চাতে কষে লাথি মারুন, দেখুন ক্যামন বলক তোলে দোররা মারার দিন গিয়েছে, চাবুক আর কে ভোলে দুধ কলা আর মধু খাইয়ে পরিয়ে পুষছিলাম সাপ সেই সাপে যে ছোবল মারে, ভোলায় নিজের বাপ বাপের ছিল সাধ্যি অনেক, গায়ে গতরে বীর্যবান সাপও মারেন, লাঠিও ভাঙেন, এমনই সে ক্ষমতাবান ক্ষমতার আছে অনেক ফাঁক-ফোকরে চন্দ্র নামান সেই চন্দ্রে লন্ঠন জ্বেলে দু’হাতে টাকা ও পয়সা কামান টাকার আছে অনেক জোর, বশীকরণ মন্ত্র জানে টাকার পিঠে হাত রেখে আরো কোটি টাকা আনে সেই টাকাতে সাম্রাজ্য গড়া, আভিজাত্যের চরণধ্বনি শুনতে শুনতে বনেদিভাব, মাথায় মুকুটতাজ মণি মণিতে আছে হীরে জহরত আর পান্না চুনির বহর বহর দেখে ভয়ও জাগে, কিন্তু মনে জাগে সুখ প্রহর। সুখে থাকতে ভূতে কিলায়, কিল মারতে মারতে ঠাঁই কোথায় মিলবে কে বলবে- সাধ্য যখন আর নাই। অন্ত্যজ জীবন বলুন, বলুন, সারমেয় সন্তানই বলুন, গ-ারের চামড়া পরিধানে যত খুশি বলে যান শকুন বাঁদর, হোক পুরোপুরি ইতরজ্ঞানে নামিয়ে দিন, উল্লুক বেল্লুজেরও নিচে গুবরে পোকার চারপাশে প্রয়োজনে শূকর ছানাটাকে লেপ্টে দিন অন্ত্যজকেই ভালোবেসে। ভালো না বাসলে কি অত্তো নামে ডেকে অত্তোভাবে দেখা যায় এই যে দেখছেন কখনো পশু, কখনো প্রাণীদের সন্তান মায়ায় এ রকম প্রাণভরা অমৃত সিঞ্চন দুর্লভ অতি সহজে কি মেলে এ্যাত্তো এ্যাত্তো নাম-সর্বনামের নিক্তিতে বসে বসে কীই বা পেলে? যদি কেউ জানার দেখায় আগ্রহ, বলে দিন গরু কিংবা গাধা হালের বলদও জুড়ে দিতে পারেনÑ লাঙল যেন জোয়াল বাঁধা বলুন, বলুন, দিলখোলা হাসিতেই বলে যান হারামজাদা অমুকের পুত অমুকের নাতি-চাষাভুষো গায়ে পায়ে কাদা থেমে গেলে কষ্ট বাড়ে; গ্রাম্যতা করে ভর এই উত্তরাধুনিকে নিম্নবর্গে চড়ি ফিরি, অন্ত্যজ জীবনে সবই তো দেখি ফিকে। পূর্বপুরুষ দাদার ছিল হস্তিশালা, করিৎকর্মা আছেন বাবার শালা তাকে নিয়ে শান্তি স্বস্তি তাকে নিয়েই বিঘœ মোকাবেলা হুঙ্কারে মেতে বেশ চোঙ্গা ফুঁকেন, ভালোই দেখি বক্তা আজ মারেতো কাল পেটায়-পিটিয়ে বানায় কাঠ তক্তা তক্তা দিয়ে বানায় নৌকা-চলে সেই নাও নদীজুড়ে সেই নদীতে কুমির আসে-ডাঙ্গাতেও যায় পাক ঘুরে ঘুরতে ঘুরতে খেয়েই ফেলে মৎস্যের অতল ভা-ার শূন্য নদী, শূন্য পুকুর, হাঁসেরাও দেয় না আন্ডা আর- আন্ডা কোথায়, ডিমের বহর ছুটছে ওই তো শহর মুখ সেখানেই তার যবনিকাপাত সেখানেই তার যত্তো সুখ সুখের নহর যেতো বয়ে মজলিশ যখন বসতো গুলিস্তাঁ ডাক পাঠাতো ফুলপরিরা নিষিদ্ধ নাম ঠিকানার হিন্দুস্তাঁ সবখানেতেই যাতায়াত তার সবর্ত্রই চলে অবাধ বিচরণ বাপের শ্যালক মায়ের ভাই ভাবটা মামুর অতি সজ্জন।
×