ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাজন-রাকিব হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২০ নভেম্বর ২০১৫

রাজন-রাকিব হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিলেটে নির্মমভাবে খুন হওয়া শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন ও খুলনায় পৈশাচিক নির্যাতনে নিহত শিশুশ্রমিক রাকিব হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করার জন্য পেপারবুক প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা (সুরেন্দ্র কুমার)। বুধবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখাকে এ নির্দেশনা দেন। নির্দেশ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট শাখা ডেথ রেফারেন্স নথি (পেপারবুক) প্রস্তুত করবে। পরে প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টের যে কোন ডেথ রেফারেন্স বেঞ্চে পাঠাবেন। পরে হাইকোর্টের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার মোঃ সাব্বির ফয়েজ (বিচার ও প্রশাসন) সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে গত ১০ নবেম্বর নথিপত্র (ডেথ রেফারেন্স) দুপুরের দিকে সংশ্লিষ্ট মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে হাইকোর্টে পাঠানো হয়। নিয়ম অনুযায়ী মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসির রায় কার্যকরের পূর্বে হাইকোর্টের অনুমতির প্রয়োজন হয়। ডেথ রেফারেন্সের পাশাপাশি বিচারিক আদালতের ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপীল দায়ের করে থাকেন। এখন সরকার যদি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসব ডেথ রেফারেন্সের শুনানি করতে চায় তাহলে রেজিস্ট্রার কার্যালয় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়ে থাকে। যেমনটি নিয়েছে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় করা হত্যা মামলা ও সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ এস আলী হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্সের ক্ষেত্রে। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী বিচারিক আদালতে ঘোষিত ফাঁসির রায় কার্যকর করতে হলে সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অনুমতি নিতে হয়। আইনে বলা হয়- ‘দায়রা আদালত যখন মৃত্যুদ- প্রদান করে, তখন হাইকোর্ট বিভাগে কার্যক্রম পেশ করবেন এবং হাইকোর্ট বিভাগ তা অনুমোদন না করলে দ- কার্যকর করা যাবে না।’ ফৌজদারি কার্যবিধির ৪১৮ ধারা অনুযায়ী বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ আপীল করতে পারবে। যদি আসামিপক্ষ আপীল করে তাহলে সেই আপীলসহ ডেথ রেফারেন্সের শুনানি হবে হাইকোর্টে। গত ৮ নবেম্বর রবিবার পৃথকভাবে আলোচিত রাজন ও রাকিব হত্যা মামলার রায় দেয় সিলেট ও খুলনার আদালত। এর মধ্যে সিলেট মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধার আদালত রাজন হত্যার দায়ে আসামি কামরুলসহ ৪ জনকে মৃত্যুদ- দেন। ১৩ আসামির মধ্যে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদ-, তিনজনকে সাত বছরের কারাদ- ও ২ জনকে একবছরের কারাদ- প্রদান করেন। বাকি তিনজনকে খালাস দেয়া হয়েছে। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত চার আসামি হলেন- মহানগরীর জালালাবাদ থানার কুমারগাঁও এলাকার শেখপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে কামরুল ইসলাম (২৪), চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়না (৪৫), তাজউদ্দিন বাদল (২৮) ও পলাতক জাকির হোসেন পাভেল। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ময়না চৌকিদারকে অপর দুটি ধারায় পৃথকভাবে সাত বছর ও এক বছর করে কারাদ- প্রদান করে আদালত। হত্যাকা-ের ভিডিওচিত্র ধারণকারী নূর মিয়ার যাবজ্জীবন কারাদ- প্রদান করে আদালত। সাত বছরের সাজা হয় কামরুলের দুই ভাই মুহিত আলম ও আলী হায়দার ওরফে আলী এবং পলাতক আসামি শামীম আহমদের। অপর দুই আসামি আয়াজ আলী ও দুলালকে এক বছর করে কারাদ- দেয় আদালত। দ-প্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে দশ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে ৩ মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে আদালত। অপরাধ সন্দেহজনকভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস পান ফিরোজ মিয়া, আজমত আলী ও রুহুল আমিন। অন্যদিকে খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক দিলরুবা সুলতানা রাকিব হত্যার দায়ে দুই আসামির ফাঁসির আদেশ দেন। তিন আসামির অন্যজন খালাস পেয়েছেন। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত দুইজন হচ্ছেন- গ্যারেজ মালিক ওমর শরীফ ও তার সহযোগী মিন্টু খান। শরীফের মা বিউটি বেগমকে খালাস দিয়েছে আদালত।
×