ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সার্বিক নৈপুণ্যে এগিয়ে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ১৭ নভেম্বর ২০১৫

সার্বিক নৈপুণ্যে এগিয়ে বাংলাদেশ

মোঃ মামুন রশীদ ॥ বাংলাদেশ দল যতটা এগিয়েছে, ঠিক যেন ততটাই পিছিয়েছে জিম্বাবুইয়ে। এ বছরটা দারুণ কেটেছে বাংলাদেশ দলের। কোন ওয়ানডে সিরিজে হারেনি বাংলাদেশ। বছরের শুরুটা হয়েছিল বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে জয় দিয়ে। তবে শেষ হলো টি২০ তে জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে পরাজয় দিয়ে। আইসিসির এফটিপি অনুসারে আর কোন সিরিজ না থাকায় তাই বছরের শেষ ধরা হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের। অবশ্য আগামী মাসে একটি সিরিজ আয়োজনের চিন্তাভাবনা করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে সিরিজে বাংলাদেশের নৈপুণ্যে সন্তুষ্ট টাইগারদের কোচ চান্দিকা হাতুরাসিংহে। কিন্তু দলের ব্যাটিং নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তাই দেখিয়েছেন তিনি। ওয়ানডে ও টি২০ সিরিজে দলের বোলিং অনেক ভাল হলেও তিনি মনে করেন ব্যাটিংয়ে তেমন ভাল করতে পারেনি দল। যদিও পুরো সিরিজেই সাফল্যের গ্রাফে ব্যাটিং-বোলিংয়ে এগিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাই। তিনি মনে করেন টি২০ ক্রিকেটে এখনও বাংলাদেশ দল সঠিক মনোভাবটা খুঁজে পায়নি। ওয়ানডে সিরিজে কোন পাত্তাই পায়নি জিম্বাবুইয়ে। তিন ম্যাচেই সহজ জয় তুলে নিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ দল। কিন্তু ব্যাটিংয়ের চেয়ে এগিয়ে ছিল দলের বোলারদের নৈপুণ্য। এ বিষয়ে হাতুরাসিংহে বলেন, ‘আমি সত্যিই দলের বোলিং বিভাগ নিয়ে খুব সন্তুষ্ট। কিন্তু ব্যাটিং বিভাগ নিয়ে বলতে চাই ব্যক্তিগতভাবে সবারই সেরা মনোভাব প্রদর্শনের সুযোগটা আরও বাড়াতে হবে।’ হাতুরাসিংহে মনে করেন টি২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখনও উন্নয়নশীল একটি দল। এখনও সঠিক গেমপ্ল্যান, মনোভাব এবং সমন্বয়টা তৈরি হয়নি। তাঁর মতে ধারাবাহিকভাবে ভাল করার জন্য আরও সময়ের প্রয়োজন হবে। এর কারণ অবশ্যই খুবই কম পরিমাণে টি২০ খেলা। এ বিষয়ে হাতুরাসিংহে বলেন, ‘আমি শুনেছি ঘরোয়া ক্রিকেটেও বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা শেষ টি২০ খেলেছে ২০১৩ সালে। সুতরাং এত কম খেলে টি২০ ক্রিকেটে সঠিক মনোভাবটা দেখানো কঠিন। ছেলেদের সেজন্য কোন দোষ দেয়া যাবে না যেহেতু তারা টি২০ খেলেই না। কাজেই অনেক বড় কাজ পড়ে আছে উন্নতি করার জন্য, সেটা অসম্ভব নয়। এশিয়া কাপের আগে আর দুই মাসে আমাদের অবশ্যই মানসিক চিন্তা এবং দক্ষতা নিয়ে কাজ করতে হবে। এটা আমাদের জন্য অতীব জরুরী। কারণ সামনে অনেক টি২০ টুর্নামেন্ট আসছে। পরিবর্তন আনতে হবে মানসিকতায় এবং সেজন্য কঠোর অনুশীলন করতে হবে। আর এটাই এখন আমাদের চ্যালেঞ্জ। কিন্তু বলব না যে খুব বড় চ্যালেঞ্জ এটি, কারণ ছেলেরা খুব ভালভাবে সবকিছু বুঝে উঠতে পারে।’ জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং সার্বিকভাবে তেমন ভাল না হলেও ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরাই এগিয়ে। এর কারণ দলের বোলিংটা দুর্দান্ত ছিল। ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে মুশফিকুর রহীম ১ সেঞ্চুরিসহ ১৫৬ রান করে শীর্ষে। প্রত্যাবর্তনের সিরিজে ইমরুল কায়েস দুটি অর্ধশতক হাঁকিয়ে ১৪৯ রান করে দ্বিতীয় স্থানে। জিম্বাবুইয়ের অধিনায়ক এলটন চিগুম্বুরা ১৩৩ রান নিয়ে তৃতীয় এবং বাংলাদেশের ওপেনার তামিম ইকবাল ১৩২ রান নিয়ে চারে। আর বোলিংয়ে বাংলাদেশী পেস বিস্ময় মুস্তাফিজুর রহমান ৮ উইকেট নিয়েছেন ৩ ম্যাচে। মাত্র ১ ম্যাচ খেলেই ৫ উইকেট শিকার করা সাকিব আল হাসান দুই নম্বরে। ৩ ম্যাচে সমান ৫ উইকেট নিয়ে জিম্বাবুইয়ের পেসার টিনাশে পানিয়াঙ্গারা তিন নম্বরে। টি২০ সিরিজের দুই ম্যাচেই ১০৮ রান করে শীর্ষে জিম্বাবুইয়ের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ম্যালকম ওয়ালার। দুই নম্বরে থাকা তামিমের রান মাত্র ৫২! আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন করা এনামুল হক বিজয় ৪৮ রান করে তিনে। আর বোলিংয়ে এখানেও এগিয়ে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের পর প্রথম বাংলাদেশের হয়ে খেলা পেসার আল আমিন হোসেন ৫ উইকেট শিকার করে শীর্ষে গড় ও ইকোনমিতে এগিয়ে থাকায়। সমান ৫ উইকেট নিয়ে দুইয়ে জিম্বাবুইয়ের স্পিনার গ্রায়েম ক্রেমার। ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুইয়েকে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে টানা ৫ সিরিজ জয় করেছে বাংলাদেশ। টি২০ সিরিজে একটি হেরে ড্র করেছে ১-১ সমতায়। সার্বিকভাবে বছর শেষে দলের নৈপুণ্যে সন্তুষ্ট হাতুরাসিংহে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর বিতর্কহীনভাবেই এটা বাংলাদেশের সেরা বছর। আমি খেলোয়াড়দের উন্নতিতে দারুণ সন্তুষ্ট। টানা ৫ সিরিজ জয় সহজ কথা নয়। কারণ দুয়েকটা খারাপ সিরিজ যেতেই পারে। কিন্তু আমরা ধারাবাহিকভাবেই ভাল খেলেছি।’
×