মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ মহানগর যুবলীগ চলছে আহ্বায়ক কমিটির নির্দেশনায়। তিনমাসের কমিটি দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর পার করলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহ্বায়ক ও চার যুগ্ম আহ্বায়কের যোগসাজশের কারণেই মহানগর যুবলীগের কর্মকা- অনেকটা শিথিল হয়ে পড়েছে। আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়কসহ ১০১ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটি গঠনে উপেক্ষা করা হয়েছে নগরীর কয়েকটি ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতাদেরও। এছাড়াও এই আহ্বায়ক কমিটির ছত্রছায়ায় থাকাদের মধ্যে অনেকেই সংগঠনের সুনামহানি করতে ও নিজেদের ফায়দা লুটতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ফলে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষিত। তবে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি সূত্রে জানানো হয়েছে, অল্প কিছুদিনের মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে নির্দেশনা আসছে। অভিযোগ রয়েছে, পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ে সদর দফতর সিআরবিতে ডাবল মার্ডার মামলার আসামি থেকে শুরু করে ভূমিদস্যু, পুলিশের তালিকাভুক্ত যুবলীগ নামধারী সন্ত্রাসী, অবৈধ সাইনবোর্ড ব্যবসায়ীসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের অনেকেই চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের কমিটিতে স্থান পেতে ইতোমধ্যে তোড়জোড় শুরু করেছে। এক্ষেত্রে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ব্যক্তিত্বসম্পন্ন যুবলীগের কা-ারি খুঁজতে মহানগর আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে কয়েক দফায় ধর্ণাও দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
আসন্ন মহানগর যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান পেতে যুবলীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা মনে করছেন, সভাপতি পদে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীদের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু, মাহবুবুল হক সুমন, ফরিদ মাহমুদ এবং চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন অনুসারী কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব ও আবদুল মান্নান ফেরদৌসের মধ্যে যে কোন উদ্দীপন নেতাকে মহানগর যুবলীগের সভাপতি পদে দেখতে চায়। অপরদিকে, সাধারণ সম্পাদক পদে মহানগর যুবলীগের একনিষ্ঠ নেতা হিসেবে চট্টগ্রাম আইন কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস ও মহানগর ছাত্রলীগের প্রভাবশালী নেতা হিসেবে সুমন দেবনাথের নাম উঠে এসেছে। তৃণমূলের নেতা কর্মীরা দাবি করছেন অচিরেই এ কমিটির পূর্ণাঙ্গতা দিয়ে মহানগর যুবলীগকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হোক।
জানা গেছে, ২০১৩ সালের ৮ জুলাই চট্টগ্রাম মহানগর শাখার যুবলীগের নেতৃত্ব দিতে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। তিনমাস মেয়াদী এ আহ্বায়ক কমিটি এখনও পর্যন্ত কার্যকর রয়েছে। তবে ওই কমিটি গঠনের পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শাখা সম্মেলন সম্পন্ন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছিল। দীর্ঘ আড়াই বছরেরও বেশি সময় চলমান এ আহ্বায়ক কমিটিতে আহ্বায়ক মোঃ মহিউদ্দিন বাচ্চু, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা, ফরিদ মাহমুদ, দিদারুল আলম ও মাহবুবুল হক সুমন রয়েছেন।
এছাড়াও ৯৬ সদস্যসহ মোট ১০১ জনের এ কমিটি কার্যকর রয়েছে। এছাড়াও নগরীর ৪৪টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র ৬টিতে কোন ধরনের সম্মেলন ছাড়া নামমাত্র কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ নিয়ে রয়েছে নেতাকর্মী ও তৃণমূল পর্যায়ে নানা বিতর্ক। এ কমিটিতে নগরীর ৩৯ নম্বর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ড, ৩৪ নং পাথরঘাটা ও ১১নং দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডের কোন প্রতিনিধি রাখা হয়নি। শুধু তাই নয়, একটি বিশেষ এলাকাকে কেন্দ্র করে গঠিত কমিটির ৩১ জনকে রাখা হয়েছে। এদিকে, আহ্বায়ক কমিটি গঠনের সময় বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছিরের অনুসারীদের মধ্যে ৫০ জনের একটি তালিকা নেয়া হলেও সেখানে মাত্র ৭ জনকে রাখা হয়েছে। কমিটির বাকি সদস্যরা মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতির অনুসারী।
এ ব্যাপারে আহ্বায়ক কমিটির এক যুগ্ম আহ্বায়ক জানিয়েছেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের বিষয়টি কেন্দ্রীয় নির্দেশনার ওপর নির্ভরশীল। তবে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য যারা আগ্রহী তারা ইতোমধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে অনুরোধ জানিয়েছে। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পেলেই অল্প সময়ের মধ্যে কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে ও সংগঠনের উন্নয়নে নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীকে বিবেচনায় আনা হবে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: