ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

চাঁপাইয়ে তৈরি হচ্ছে বীরশ্রেষ্ঠ ফোয়ারা

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ১৪ নভেম্বর ২০১৫

চাঁপাইয়ে তৈরি হচ্ছে বীরশ্রেষ্ঠ ফোয়ারা

ডি.এম তালেবুন নবী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ শোভা বর্ধনের মাধ্যমে দৃষ্টিনন্দন করার কাজে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা এবার এগিয়ে এসেছে। বিশেষ করে শহরের একেবারে প্রাণকেন্দ্র বড় ইন্দারা মোড়টি দীর্ঘদিন অযতœ আর অবহেলায় পড়েছিল। এবার হাঠাৎ করেই এই মোড়ের প্রতি নজর পড়ে এক্সিম ব্যাংক চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখার। তড়িঘড়ি কেন্দ্রের কাছে তাগিদ দিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বড় ইন্দারা মোড়টিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দৃষ্টিনন্দন করার মানসে ১০ লাখ টাকার বরাদ্দ নিয়ে আসে। সেই মোতাবেক পৌরসভার অনুমোদন ও তত্ত্বাবধানের প্রয়োজন পড়ায় দৃষ্টিগোচর করতে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের কালক্ষেপণ না করে উষ্ণ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। এলাকাটি ত্রিমোহনী সড়কের সংযোগ সাধন করছে। একদিকে আমনুরা ঝিলিম রোড় দ্বিতীয়টি গোদাগাড়ী ছেড়ে শাহনিয়ামতুল্লা হয়ে শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর বীরশ্রেষ্ঠ সেতু সড়কের শান্তিমোড় গড়িয়ে মোড়ে মিলেছে, অপরটি হাসপাতাল, থানা, সদর পোস্ট অফিস ধরে পুরানবাজার ডিঙিয়ে সড়কটি সোজা এসে বড় ঈদারা মোড়ে ঠেকেছে। তিনটি প্রধান রাস্তার এই জংশনটি বড় ঈদারা মোড় হিসাবে পরিচিত হলেও এতদিন পড়েছিল অবহেলার মধ্যে। এবার এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়নে ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার তত্ত্বাবধানে তৈরি করা হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ ফোয়ারা। ১০৮ মিটার গোলাকার ব্যাসার্ধের ওপর মনোমেন্ট আদলে ১৬.৩৯ মিটার ও ১২ ফুট উচ্চতায় সাতটি ডাবল স্টিলের মোটা লম্বা স্ট্রাকচার বাঁকানোভাবে উপরে উঠে গেছে। তার উপরে তৈরি করা হয়েছে গ্লোব আকারের পৃথিবী। যার সিংহভাগ রয়েছে বাংলাদেশের পুরো অবয়ব। আর সাত বীরশ্রেষ্ঠর স্মরণে সাতটি ডাবল স্টিল মনোমেন্ট ডেকোরেশন। শুধু তাই নয় গোল ব্যাসার্ধের চারিধারে মারবেল পাথরের ওপর টেন টুয়েল্ড (১০১১) আকারের সাত বীরশ্রেষ্ঠর ছবি দেয়া হয়েছে। যার কারণে নাম দেয়া হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ ফোয়ারা। আর উৎসব করা হয়েছে ডাবল সাত বাঁকানো থাম্বাকে বীরশ্রেষ্ঠদের নামে। গোল ব্যাসার্ধের মধ্যেই সার্বক্ষণিক স্থির অবস্থায় থাকবে প্রায় ২২ ইঞ্চি উঁচু হয়ে পানি। সন্ধ্যা নামলেই এই পানি বার বার একটি মোটরের সাহায্যে লাইটিংয়ের মাধ্যমে কিছুক্ষণ পরপর সাত রং ধারণ করে একাধিক ফোয়ারার মাধ্যমে ওপর যাবে আবার নিচে নামবে। রাত নামলেই এক মোহনীয় দৃষ্টিনন্দন চমকের সৃষ্টি হওয়ায় দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় হচ্ছে। ফোয়ারার চারিধার অর্থাৎ তিন রাস্তার ওপারের ফুটপাথকেও ডেকোরেশনের আওতায় আনা হয়েছে। ড্রেনের ওপর সøাব ও পাসের পায়ে হাঁটা পথের উপরে বসানো হয়েছে রঙিন ফুট টাইলস। যা অনেকটাই বীরশ্রেষ্ঠ ফোয়ারার সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে। এক্সিম ব্যাংক কর্তৃপক্ষের এ ধরনের সহযোগিতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উজ্জীবিত করার মহান প্রচেষ্টাকে নগরবাসী কৃতজ্ঞাতার সঙ্গে নিয়ে অশেষ ধন্যবাদ দিয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর সভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাদেকুল ইসলাম জনকণ্ঠকে জানান এক্সিম ব্যাংকের এ ধরনের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অনেকটাই জীবন্ত রূপ দেবার আর্থিক সহযোগিতাকে কোনভাবেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। ভবিষ্যতে তারা এ ধরনের একাধিক সহযোগিতায় আরও সরবভাবে এগিয়ে আসবে বলে মনে করেন। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার কৃতজ্ঞার একটুও কমতি নেই এক্সিম ব্যাংকের প্রতি।
×