ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দর্শকের ঢল মিরপুরে টিকেট নিয়ে হাহাকার

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১৪ নভেম্বর ২০১৫

দর্শকের ঢল মিরপুরে টিকেট নিয়ে হাহাকার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ওয়ানডে ইতিহাসে সফলতম একটি বছর গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। এ বছর কোন সিরিজ হারেনি দল। আর বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ক্রিকেট আবেগটা অনেক অনেক। সেই আবেগটা বিশ্ববাসী অনেক ভালভাবেই দেখেছে ২০১২ এশিয়া কাপে। দেশের ‘হোম অব ক্রিকেট’ মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম সে সময় ছিল উত্তেজনাপূর্ণ এক এলাকা। সেই উত্তেজনার ঢেউয়ে জনস্রোত ছিল স্টেডিয়ামুখী মানুষের। চারদিকে টিকেট না পাওয়ার হাহাকার তখন ছিল চরমে। বিশ্বের ক্রিকেট পরাশক্তিরা যেখানে একের পর এক টাইগারদের কাছে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে, তখন জিম্বাবুইয়ের মতো দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ক্রিকেট আবেগী বাংলাদেশের মানুষদের সম্ভবত আগ্রহের কিছুটা কমতিই ছিল। তবে শেরেবাংলার গ্যালারি ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। কিন্তু ভুল ভাঙ্গল টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচেই। আবারও সেই জনস্রোত, আবারও সেই হাহাকার ফিরে এলো। প্রতিপক্ষ যেই হোক না কেন, মাঠে বসে টাইগারদের সমর্থন দিতে যেন দেশের ১৬ কোটি মানুষই থাকে উদগ্রীব। সেটাই শুক্রবার প্রথম টি২০ ম্যাচে দেখা গেল। স্টেডিয়ামের বাইরে মানুষের ঢল থাকলেও অনেকেই পাননি টিকেট, মাঠে থেকে সমর্থন দিতে না পারার হতাশায় অনেকে বাড়ি ফিরে গেছেন। আবার অনেকে বাইরে বসেই ভেতরের দর্শকদের চিৎকার শুনে শামিল হয়েছেন গলা মিলিয়ে। বাংলাদেশে সব অফিস-আদালত শুক্রবার বন্ধ। ব্যবসা-বাণিজ্যও শিথিল থাকে এদিন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও বিরতি। এ কারণে শুক্রবার প্রাণের দল বাংলাদেশের খেলা থাকলে তো কোন কথাই নেই। সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়েন। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের তিন ম্যাচ হয়েছে শনি, সোম ও বুধবার। তাই স্টেডিয়ামের বাইরে এতটা ঢল ছিল না। কিন্তু একে তো শুক্রবার, তারপর আবার টি২০ ম্যাচ শুরু বিকেল ৫টায়। আশপাশের এলাকা তাই লোকে-লোকারণ্য হয়ে গেছে দুপুরের পর থেকেই। যারা আগে টিকেট কাটেননি তারা ভিড় করেছেন একটি টিকেটের প্রত্যাশায়। আর টিকেট করে রেখেছিলেন যারা স্টেডিয়ামে ঢোকার গেটগুলোয় তারা লাইন দিয়েছেন দুপুর আড়াইটা থেকেই। কিন্তু এই লাইনের পাশ থেকেই মিলল হতাশা, দেখা গেল টিকেট না পাওয়ায় মুষড়ে পড়া মুখ। যারা টিকেট পেয়েছেন তারা লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েন। তাদের পাশেই অসংখ্য মানুষের দেখা মেলে যারা টিকেট না পেয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ। তাদের অভিযোগেরও সীমা নেই। তাদের দাবি টিকেট না পাওয়া গেলেও কালোবাজারিদের হাতে অনেক টিকেট। যেসব টিকেটের মূল্য হাঁকা হচ্ছে কয়েক গুণ বেশি। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কালোবাজারিরা ১০০ টাকা মূল্যের টিকেট বিক্রি করছেন ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায়। আর ৩০০ টাকা মূল্যের টিকেট বিক্রি করা হয়েছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায়। এছাড়া ভিআইপি স্ট্যান্ডের ৫০০ টাকা মূল্যের টিকেট বিক্রি করা হয় ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকায়। এমনটা ২০১২ এশিয়া কাপ থেকেই দেখা গেছে। সে সময়ই প্রথম টিকেট জটিলতার সৃষ্টি যেমন হয়েছিল তেমনি কালোবাজারি হওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে প্রচুর পরিমাণে। সেটা যে এখনও থামেনি শুক্রবার টিকেট বঞ্চিত ক্ষুব্ধ মানুষের কাছ থেকেই নিশ্চিত হওয়া গেল। তাদের দাবি, ‘ব্যাংকে টিকেট শেষ হয়ে গেছে জানানো হয়েছে। অথচ কালোবাজারিরা এত টিকেট পেয়েছে কিভাবে?’ শেরেবাংলার দর্শক ধারণক্ষমতা বাড়ানোর দাবি অনেক আগের। সেই দাবিটা আবারও সামনে চলে আসল শুক্রবার দর্শকদের ঢল দেখে। বর্তমানে শেরেবাংলার দর্শক ধারণক্ষমতা প্রায় ২৫ হাজার। আর আগ্রহী দর্শক এর প্রায় দ্বিগুণ। সবার প্রত্যাশা হয় তো নতুন করে বিষয়টি নিয়ে ভাববে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
×