ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ইস্টার্ন রিফাইনারির আরেকটি ইউনিট নির্মিত হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৮:১৭, ১২ নভেম্বর ২০১৫

ইস্টার্ন রিফাইনারির আরেকটি ইউনিট নির্মিত হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের (ইআরএল) দ্বিতীয় ইউনিট নির্মাণে ফ্রান্সের কোম্পানি টেকনিপের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ৪৭ বছর পর দেশে জ্বালানি তেলের পরিশোধন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এখন দেশের জ্বালানি তেলের পরিশোধন ক্ষমতা ১৫ লাখ মেট্রিক টন থেকে বেড়ে ৪৫ লাখ মেট্রিক টন হবে। সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান এএম বদরুদ্দোজা এবং টেকনিপের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের চেয়ারম্যান কেকে লেইন বুধবার সন্ধ্যায় হোটেল সোনারগাঁয়ে স্ব স্ব পক্ষে স্বাক্ষর করেন। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ১৯৬৮ সালে এই কোম্পানিটি ইআরএলের তেল শোধনাগার নির্মাণ করে দেয়। দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়লেও দেশের একমাত্র সরকারী তেল শোধনাগার ইআরএলের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়নি। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বলা হয়, ৪৭ বছর আগে এই কোম্পানিটি ইআরএলের তেল শোধনাগার তৈরি করে দিয়েছিল। যেখানে ৪৭ বছরে এই শোধনাগার পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা দিয়ে এখন বছরে ১৪ লাখ টন তেল পরিশোধন করা হচ্ছে। কারিগরি মান বিবেচনা করে ফ্রান্সের টেকনিপের সঙ্গেই আবার সরকার এমওইউ স্বাক্ষর করেছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, আমাদের দেশে আরও আগেই পেট্রো-কেমিক্যাল শিল্প বিকশিত হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। বাংলাদেশ গ্যাসের ওপর ভাসছেÑআমরা অনেক দিন এ রকম একটি ভুল ধারণার ওপর ছিলাম। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিবেচনায় বাংলাদেশ ভাল অবস্থানে রয়েছে বলে উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) কর্মকর্তারা জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ইআরএল পরিশোধন ক্ষমতা ১৫ লাখ টন থেকে বেড়ে ৪৫ লাখ টনে উন্নীত হবে। এতে একবারে পরিশোধন ক্ষমতা ৩০ লাখ টন বৃদ্ধি পাবে; যাতে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হওয়ার কথা। একই সঙ্গে দেশে জ্বালানি তেলের লাভও অনেকাংশে বেড়ে যাবে। তরল জ্বালানির উপজাত হিসেবে এলপিজিসহ অন্যান্য পেট্রোলিয়াম পণ্যের চাহিদা মেটানোও সম্ভব। শীঘ্র চূড়ান্ত চুক্তি হবে। আর প্রকল্পের কাজ ২০১৮ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। অনুষ্ঠানে বিদ্যুত, জ্বালানি এবং খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আমাদের এশিয়া অঞ্চলের সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়া তেল পরিশোধন করে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে। আমাদের সামনেও সেই সম্ভাবনা হাতছানি দিচ্ছে। ইতোমধ্যে মিয়ানমার আমাদের কাছ থেকে পরিশোধিত জ্বালানি তেল ক্রয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে। ভারতের পূর্বাঞ্চল, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কায় আমরা পরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি করতে পারি। ভবিষ্যতে দেশে পেট্রোলিয়াম শিল্প বিকশিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বিগত সরকারের সময় ২০১০ সালে দেশের একমাত্র সরকারী তেল পরিশোধনাগারের ক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়। পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও বিনিয়োগ, নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিতে না পারায় প্রকল্পটি ঝুলে যায়। দরপত্রের মাধ্যমে উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করতে না পারায় দরপত্র ছাড়াই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এজন্য দেশী-বিদেশী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে আগ্রহপত্র চায় ইআরএল। এমওইউ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, জ্বালানি সচিব আবু বক্কর সিদ্দিক, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত সফি আবেট এবং বিপিসির চেয়ারম্যান এএম বদরুদ্দোজা বক্তব্য রাখেন।
×