২৬ অক্টোবর সারা পৃথিবীজুড়ে মুক্তি পেয়েছে জেমস বন্ড সিরিজের নতুন সিনেমা ‘স্পেকট্রা’। সিনেমার পরিচালক স্যাম মেন্ডেজ আগেই জানিয়েছিলেন এটিই হতে যাচ্ছে তাঁর সর্বশেষ জেমস বন্ড ফিল্ম। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে ‘স্কাইফল’ পরিচালনার একই রকম ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। এটি কি তবে মেন্ডেজের প্রচারণার নতুন কৌশল।
২০০৬ সালে ক্যাসিনো রয়্যালের মধ্য দিয়ে ড্যানিয়েলের বন্ড চরিত্রে যাত্রা শুরু হয়। ২০১২ সালে মুক্তি পেয়েছিল জেমস বন্ড সিরিজের সর্বশেষ চলচ্ছিত্র ‘স্কাইফল’। ৩০০ কোটি ডলার ব্যয়ে নির্মিত এই চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে ইতিমধ্যেই ঝড় তুলেছে। মুক্তির প্রথম দ’দিনেই আয় করেছে ২ কোটি ৪৫ লাখ মার্কিন ডলার। বন্ড সিরিজে নায়িকা চরিত্রে বরাবরই চমক থাকে। এবারেও ব্যতিক্রম কিছু নেই। আছেন যৌন আবেদনময়ী ইটালিয়ান তারকা মনিকা বেলুচ্চি এবং ফরাসী অভিনেত্রী লিয়া সেড্যু। খলনায়কের তালিকাও খুব একটা ছোট নয়। আছেন এন্ড্রু স্কট, ডেভ বাতিস্তা এবং ক্রিস্তফ ওয়ালতজ।
অনেকেই আশঙ্কা করছেন এটিই হতে পারে ৪৭ বছর বয়সী ব্রিটিশ অভিনেতা ড্যানিয়েল ক্রেগের অভিনীত শেষ বন্ড ফিল্ম। তবে, বিষয়টি একবারেই হেসে উড়িয়ে দিয়েছেন ক্রেগ। তবে, ‘স্পেকট্রা’ নানা কারণেই বিখ্যাত। কারণ এই সিনেমার প্রিমিয়ারে যে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং ব্রিটেনের রাজপুত্র উইলিয়াম এবং রাজবধূ কেট মিডলটন। বাদ পড়েনি পিন্স হ্যারিও। রয়েল এ্যালবার্ট হলে এই জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে মুক্তি পায় ‘স্পেকট্রা’। লাল গালিচায় হাঁটেন ড্যানিয়েল ক্রেগ যা কিনা এক দশকে এই প্রথম। স্বভাবতই ভীষণ উচ্ছ্বসিত ক্রেগ। নিজের উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারেননি ৪৭ বছর বয়সী এই বন্ড তারকা, ‘যদিও নিজেকে পর্দায় দেখতে একটা দেখতে পছন্দ করি না, তবুও জেমস বন্ডের প্রতিটি মুহূর্তই আমাকে রোমাঞ্চিত করে।’ এবারের পরিচালক স্যাম মেন্ডেজ সম্পর্কে ও ভাল মন্তব্যই করেছেন তিনি। বলেছেন, ‘সে বন্ড পরিচালকদের মধ্যে অন্যতম সেরা।’
‘স্পেকট্রা’ সিনেমার শূটিং হয়েছে লন্ডন, মেক্সিকো, রোম এবং মরক্কোতে। মিশনের শুরু“মেক্সিকোতে। এবারের সিনেমায় ব্যবহার করা হয়েছে জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার কোম্পানির তিনটি ভয়াবহ সুন্দর গাড়ি। এর মধ্যে একটি আবার ল্যান্ড রোভার স্পোর্টস এসভিআর। যার দাম প্রায় ১১ লাখ ১ হাজার ৩৫০ মার্কিন ডলার। অস্ট্রিয়ার বরফে ঘেরা বিস্তীর্ণ অঞ্চলে শূটিং করা হয়েছে এই গাড়িটি দিয়ে। যা বিশেষভাবে বরফে চলার উপযোগী। ১৯৫৩ সালে আয়ান ফ্লেমিং যখন এই এমআই সিক্সটিন চরিত্রটি তৈরি করেন তখন তিনি নিজেও জানতেন না এই চরিত্র এতটা বিখ্যাত হবে। তবে জেমস বন্ড রূপালি পর্দায় আসতে সময় নিয়েছে প্রায় ১৮ বছর। সারা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে।
‘স্পেকট্রা’ ঠিক কতটা ব্যবসাসফল সেটি আগাম বলা সম্ভবপর হচ্ছে না কারণ পূর্ববর্তী বন্ড সিনেমা ‘স্কাইফল’ আয় করেছিল ১০০ কোটি ডলার। যা ভেঙ্গে দিয়েছিল পূর্ববর্তী যে কোন বন্ড সিরিজের সিনেমার আয়ের রেকর্ড। তবে, সারা পৃথিবীজুড়ে জেমস বন্ড সিরিজ তৈরি করেছে দর্শক তৈরির এক নতুন মাত্রা। হলিউডের বাইরের কোন সিনেমার এককভাবে সারা পৃথিবিতে জনপ্রিয়তা ধরে রাখা আদতেই কম চ্যালেঞ্জিং নয়। ‘স্পেকট্রা’ এর শাব্দিক অর্থ অবয়বহীন। তবে পাঠক মোটেও ভাববনে না এটি ভূতের সিনেমা। মূলত একটি প্রায় অদৃশ্য আন্তর্জাতিক চক্রের সন্ধানে নামে জেমস বন্ড। সেজন্যই এই রকমের নামকরণ। এখন দেখার বিষয় সিনেমাটি দর্শকদের কতটা মন ভরাতে পারে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: