ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ১০ নভেম্বর ২০১৫

ঢাকার দিনরাত

গত সপ্তাহে রাজধানীবাসী একটি হরতাল প্রত্যক্ষ করেছে। অবশ্য হরতালের ডাক দেয়া হয় দেশব্যাপীই। আধাবেলা এই হরতালটি ছিল তরুণ প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনসহ লেখক-প্রকাশকদের ওপর চাপাতিবাজদের হামলা-হত্যার প্রতিবাদে। ডাক দিয়েছিল গণজাগরণ মঞ্চ। হরতালের সমর্থনে কোন জোরাজুরি বা উগ্রতা লক্ষ করা যায়নি। অনেকটা স্বতঃস্ফূর্ত ও শান্তিপূর্ণ ছিল হরতাল। ওই হরতালে কয়েকটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন সমর্থন দেয়। হরতালের কারণে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা নির্ধারিত সময় থেকে পিছিয়ে নেয়া হয়। পরীক্ষার্থীদের অসুবিধার জন্য গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র দুঃখ প্রকাশ করেন। এই সৌজন্যটুকু তিনি প্রকাশ করেন হরতালে সাধারণ মানুষের কষ্টের জন্যও। গণজাগরণ মঞ্চ কফিন নিয়েও মিছিল করে যা কিছুটা অভিনবই বটে রাজধানীতে। দীপনের জন্য প্রতিবাদী দীপ দীপনহত্যা এবং টুটুলসহ অন্য তরুণ লেখক-মুক্তচিন্তকদের হত্যাপ্রচেষ্টার প্রতিবাদে গত সপ্তাহে ঢাকায় প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন সমাবেশ, মিছিল, মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। লেখক-প্রকাশক-বই বিক্রেতারা কেবল নন, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ, জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি, মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের সন্তানদের সংগঠন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, মানবাধিকার সংগঠন, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গীবাদবিরোধী মঞ্চ, আইনজীবী সমাজ প্রতিবাদী সমাবেশ করেছে। এ প্রসঙ্গে জনকণ্ঠ সম্পাদকীয় রচনা করে। তাতে বলা হয়Ñ ‘দীপন হত্যাকা-ের পর আজ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন থেকে প্রতিবাদ উচ্চারিত হচ্ছে। এটাও স্বাভাবিক যে দলমতের উর্ধে উঠে প্রগতিশীল সংগঠনসমূহ সকল প্রগতিশীল তরুণ লেখক হত্যার বিচার দাবি করবে। তবে ভিন্ন ভিন্ন মঞ্চ থেকে না করে একটি অভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে সম্মিলিতভাবে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুললে তা আরও শক্তিশালী ও লক্ষ্যাভিমুখী হবে। এজন্য মৌলবাদ জঙ্গীবাদবিরোধী সংগঠনগুলোর ভেতর সমন্বয় প্রয়োজন। লেখক-প্রকাশক-সংস্কৃতিকর্মী ও পেশাজীবীদের ভেতর ঐক্য জরুরী।’ শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের সামনে কবি-লেখক-শিল্পী সমাবেশে তিন তরুণ লেখকের বক্তব্যের সারমর্ম এখানে তুলে ধরছি। কবি ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘দেশের বিবেক হিসেবে পরিচিত খ্যাতিমান বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই আত্ম বিক্রয় করে বসে আছেন।’ কবি অনিকেত শামীমের আহ্বান- ‘সময়ের ডাকে লেখক-শিল্পীদের নিজেদের ভেদাভেদ ভুলে এক কাতারে আসা জরুরি।’ কথাসাহিত্যিক রাখাল রাহার বক্তব্য- ‘আমরা আমাদের গ্রন্থ পুড়িয়ে সকল মানুষের শুভবুদ্ধির আলো জ্বালাতে চাই। আমাদের এই প্রতিবাদ চলবে জমায়েত, মতবিনিময় এবং প্রকাশনার মাধ্যমে।’ আলোচিত প্ল্যাকার্ড রাজধানীতে মাঝেমধ্যে এমন কিছু বাস্তবতার সম্মুখীন হই আমরা যে হতবাক হয়ে পড়তে হয়। বেতন নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে বিরাজ করছে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ। এমপিও এবং নন এমপিও- এ রকম দুটি শ্রেণীতে বিভক্ত বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের মধ্যে বেতন প্রাপ্তিতে সমতা নেই- এটাও সত্য। তবু দাবি দাওয়ার ধরন কখনও কখনও আমাদের সামনে অভিনব পরিবেশ তৈরি করে দেয়। শিক্ষকদের হাতের একটি প্ল্যাকার্ড পথচারীদের নজর কাড়ে। ফটোসাংবাদিকরা তার ছবি তুলে রেখেছেন। ‘ভিক্ষুক নয়! আমরা শিক্ষক ১৬ বছর যাবত অনাহারে। জাতি এ লজ্জা লুকোবে কোথায়?’ শুক্রবার এমপিওভুক্তির (মান্থলি পে অর্ডার) দাবিতে বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা প্রেসক্লাবের সামনে সড়কে বসে পড়েন। এর আগে তারা অনশন কর্মসূচীও পালন করেছেন। বেপরোয়া মোটরসাইকেল ঢাকায় মোটরসাইকেলঅলাদের দৌরাত্ম্যের কথা এর আগেও একবার লিখেছিলাম, তা প্রায় বছর হয়ে গেল। লিখেছিলামÑ ‘গু-ার মতো হোন্ডা চলে।’ নিত্য তাদের কারণে পথচারীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। মারাত্মক সব দুর্ঘটনাও ঘটে। মোটরসাইকেলঅলারা প্রধান সড়ক থেকে সাঁই করে ফুটপাথের ওপর উঠে পড়ে, আবার এঁকেবেঁকে সুড়ুৎ করে রাস্তার ওপরে গিয়ে পড়ে। তীব্র হর্নের আওয়াজে কান ফেটে যাওয়ার দশা হয়। সেদিন রাতে প্রায় ফাঁকা হয়ে আসা রাস্তায় চোখের সামনে বেপরোয়া ও নিয়ম ভেঙ্গে চলা মোটরসাইকেল পথচারীকে ধাক্কা দিল। দেখে আঁতকে উঠলাম। সেখানে পথচারী পারাপারের জেব্রাক্রসিং নেই। পথচারী বেচারা তার বামদিকের রাস্তা থেকে ডান পাশের রাস্তা পেরিয়ে ফুটপাথে উঠবেন। মাঝে বিজ্ঞাপন সংবলিত উঁচু সড়ক বিভাজক। তিনি বাম পাশ কাটিয়ে বিভাজকের পাশে এসে দাঁড়িয়ে পর্যবেক্ষণ করলেন তার ডান পাশ অর্থাৎ ওই রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলাচলকারীদের বাম পাশটি। নিরাপদ বুঝে যেই না সড়কে পা রেখেছেন, অমনি রং সাইড থেকে দ্রুতবেগে আসা মোটরসাইকেলের ধাক্কা খেলেন। উঁচু বোর্ড লাগানো সড়ক বিভাজকের কারণে পথচারীর পক্ষে ঠাহর করা সম্ভব হয়নি যে ঠিক উল্টো দিক থেকে সড়ক বিভাজক ঘেঁষে এমন একটা যান্ত্রিক যান চলে আসতে পারে। মোটরসাইকেলঅলা একটু পড়িপড়ি ভাব করে সামলে নিয়ে দ্রুতবেগে চলে গেল। ফিরেও তাকাল না। এই দুর্ঘটনা প্রত্যক্ষ করে একটা শিক্ষা পেলাম। প্রতিটি রাস্তার ডানে-বাঁয়ে বারবার তাকিয়ে শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার পরই রাস্তা পার হতে হবে। নিয়মমাফিক নির্দিষ্ট দিকে নজর রাখলে চলবে না। ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে যান চলাচলকারীদের স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। সিএনজি সমাচার শুনতে অবাকই লাগে! ঢাকার বেশিরভাগ সিএনজি অটোরিক্সা এখন মিটারে চলছে। শেষ পর্যন্ত সরকার তাদের এ ব্যাপারে বাধ্য করতে পেরেছে। এতে তারাও খুশি। বাড়তি ভাড়ার কারণে মিটারে যাওয়া তাদের জন্য লাভজনকই হয়েছে। যাত্রীরাও স্বস্তি পাচ্ছেন এই ভেবে যে, দর কষাকষির ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না। তবে শুভঙ্করের ফাঁকি বলে একটা কথা আছে অভিধানে। এক্ষেত্রে চলছে তেমনটাই। মিটারে বাড়তি ভাড়া গুনেছেন এমন ক’জন রীতিমতো সন্দেহ পোষণ করলেন মিটার ঠিক আছে কিনা সে ব্যাপারে। অর্থাৎ মিটার টেম্পারিং করে অতিরিক্ত ভাড়া বৈধ হিসেবে আদায় করা হচ্ছে কিনা। বিদ্যুতের মিটার টেম্পারিংয়ের বিষয়টি যাদের জানা, তারা ভাবতে পারেন সিএনজি অটোরিক্সাতেও এমন কারসাজি সম্ভব। কিন্তু এ বিষয়টি কি কর্তৃপক্ষ মনিটরিং করছে? ঢাকায় অবশ্য গত সপ্তাহে নিয়মিতভাবেই ভ্রাম্যমাণ আদালত বসে সিএনজি অটোরিক্সা মিটারে চলছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করেছে। কিন্তু কথা হচ্ছে যাত্রী যেখানেই যেতে চাইবে অটোরিক্সার চালক সেখানে যেতে আইনত বাধ্য- এই নিয়মটি এখনও কার্যকর হয়নি। এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশই পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে যাত্রীর ইচ্ছায় নয়, সিএনজি অটোরিক্সা চলে চালকের ইচ্ছায়। আপনি যাবেন দক্ষিণে, তো উনি সোজা না করে দেবেন। উত্তরে যেতে তার ভালো লাগে, কিংবা সুবিধা। তাই তিনি উত্তরের দিকে যাত্রাকারীকে গাড়িতে তুলবেন। এটা তো চলতে পারে না। আপনি যে অভিযোগ করবেন চালকেরা সে ব্যাপারে জানে বলেই আগেভাগে বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছে। খেয়াল করলে দেখবেন বেশিরভাগ অটোরিক্সার গায়ে সাদা রঙে লেখা পুলিশ নিয়ন্ত্রণ কক্ষের নম্বরগুলো ঘষে তুলে ফেলা হয়েছে। নয়ত কায়দা করে তার ওপর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক স্টিকার লাগানো হয়েছে। যাত্রীরা যাতে অভিযোগ জানাতে না পারেন, সে জন্যই এই কায়দা। রাজধানীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশাগুলোর নতুন ভাড়া কার্যকর হয়েছে ১ নবেম্বর থেকে। সড়ক পরিবহন বিভাগ থেকে বলা হয়েছিল, চালকেরা যাত্রীর পছন্দমতো গন্তব্যে যেতে রাজি না হলে এবং মিটারে না চললে অটোরিক্সার গায়ে থাকা নম্বরে ফোন করলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। গাছ দেখা গাছ চেনা পরিবেশবিদ, বৃক্ষপ্রেমী দ্বিজেন শর্মা বার্ধক্যকে উপেক্ষা করে সমাজের জন্য কাজ করে চলেছেন। রাজধানীবাসীদের নিয়ে মাঝেমধ্যে উদ্যানে ‘গাছ দেখা গাছ চেনা’ আয়োজনে যুক্ত হন। গত শুক্রবার রমনায় এমনই একটি আয়োজনের ভেতর দিয়ে বহু মানুষ নিরেট কঠিন ঢাকার বুকে জন্ম নেয়া সবুজ উদ্ভিদের সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন। রমনায় গাছ দেখা গাছ চেনা অনুষ্ঠানে ছাতিম (সপ্তপর্ণ), চালতা, ফলসা, গাব, নাগেশ্বর, শিউলি, কলকে (করবী), সুষমা (ব্রুনফেলশিয়া), তেঁতুল, অশোকসহ কিছু গাছ দেখানো হয়েছে যা হয়ত অনেকের কাছেই পরিচিত। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সাহানা চৌধুরী তার অভিজ্ঞতা এভাবে শেয়ার করেছেন : উদ্ভিদবিশারদদের চিনিয়ে দেয়ার পাশাপাশি আমরা নিজেরাও কিছু গাছ নিজস্ব আগ্রহে চিনেছি, একে অন্যের সঙ্গে শেয়ার করেছি। অঞ্জন, গুস্তাভিয়া (দাদরা), রক্তকাঞ্চন, সোনাঝুরি (বাঁদর লাঠি), এরিকাপাম, রুদ্রপলাশ, গ্লিরিসিডিয়া (ফাল্গুনি মঞ্জরি), ধাইরা, সোনাপাতি (চন্দ্রপ্রভা, ফাগুনবউ), দাদমর্দন, গগণশিরীষ, কর্পূরসহ অসংখ্য গাছ আমরা দেখেছি, চিনতে চেষ্টা করেছি। রমনা পার্কের বাগান বৈচিত্র্যময় উদ্ভিদের এক বিরাট সংগ্রহশালা বলা যায়। তাই স্বল্প পরিসরে এত বিস্তৃত বাগানের সমস্ত উদ্ভিদের পরিচয় তুলে ধরা সত্যিই কঠিন। তাছাড়া গাছ দেখা ও গাছ চেনা অনুষ্ঠানটি সর্বসাধারণের অংশগ্রহণে হয় বলেই এখানে পরিচিত বৃক্ষের নানা দিক তুলে ধরে মানুষকে গাছ-পালার প্রতি আগ্রহী করাই অনুষ্ঠানটির মূল উদ্দেশ্য বলে মনে হয়েছে। বৃক্ষের প্রতি পরম মমতায় এত মানুষের সমাগম নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য আশাব্যঞ্জক। ত্রৈলী দত্তের সরোদ বাদন এবং গীত শতদল সপ্তাহে একটি পুস্তক থেকে অন্তত দু’পাতা পড়ে দেখেন, দু’খানা গান শোনেন অথবা একটা পুরো মুভি দেখেন কিংবা কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যান- এমন শিক্ষিত ব্যক্তির সংখ্যা কি খুব বেশি হবে ঢাকায়? যানজটে আটকে থাকা, জীবিকা ও সংসারের জন্য সময় দেয়া- সব মিলিয়ে ঢাকার মানুষের ব্যস্ততা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে বেশিরভাগের পক্ষে গান শোনা, বই পড়া, সিনেমা দেখা রীতিমতো বিলাসিতার পর্যায়ে চলে গেছে। এসবে সময় দেয়ার মতো সময় কোথায়? মনও কি আছে? অথচ মন সুস্থ সজীব সবল রাখার জন্য এসবের প্রয়োজন অস্বীকার করা যাবে না। দিনানুদৈনিক নানা দাসত্ব থেকে মুক্তির জন্য এবং জীবনকে অর্থময় করে তুলবার জন্য এসব যে অত্যন্ত আবশ্যক সে কথাটিও আমাদের মনে থাকে না। যা হোক গত সপ্তাহে ছুটির দিন শুক্রবার সন্ধ্যায় দুটি সংগীত অনুষ্ঠানে গিয়ে মন ভরে গেল। ভারতীয় তরুণ সরোদশিল্পী ত্রৈলী দত্তের সরোদ বাদন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল জাতীয় জাদুঘর। অপরটি গীত শতদল-এর আয়োজন, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ছোট্ট মিলনায়তনে। ত্রৈলী দত্তের সরোদবাদন শুনতে বহু সংগীতপ্রেমী এসেছিলেন। ত্রৈলী রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে সঙ্গীতে পিএইচডি করছেন। গীত শতদল সংগঠনটির প্রত্যেকেই নারী, এমনকি তবলাবাদকও নারী। সংগঠনের প্রত্যেকেই নিয়মিত চর্চা করেন তা গান শুনেই বোঝা যায়। প্রিয় মেয়র, আপনাকেই বলছি আমরা এই কলামে ঢাকার দুই মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাৎক্ষণিকভাবে সমস্যার সমাধান ও অনিয়মের সুরাহা চাইছি। এটা নিছক আমাদের অনুরোধ নয়, সমাজেরই দাবি। আজ আমরা তুলে ধরব ঢাকার রেলপথ ঘেঁষে বসা অন্তত একটি বাজারের কথা। ঢাকা শহরের ভেতর দিয়ে চলা রেলগাড়িগুলোর চলাচলে প্রতিবন্ধকতা যাতে সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষ সজাগ থাকে হয়ত। দু-দশটা রেল ক্রসিংয়ের অরক্ষিত থাকার বিষয়টি না হয় আপাতত উহ্যই রাখলাম। রেললাইনের আশপাশে থাকা মানুষগুলোর দায়িত্ব নিজেকে বাঁচানোর। এমন রোগীও একবার দেখেছিলাম পঙ্গু হাসপাতালে যিনি রেললাইনের পাশ দিয়ে যেতে যেতে এমনই অন্যমনস্ক কিংবা বেখেয়াল হয়ে পড়েছিলেন যে, রেলগাড়ির বডির একটি অংশ তার দেহে আঘাত করে। যাহোক, আমরা দেখি ঢাকায় রেললাইন ঘেঁষে বাজার বসে থাকে। কয়েক মাস আগেই তেজগাঁও এলাকায় এমন একটি বাজারে বিয়োগান্তক ঘটনা ঘটেছিল চলন্ত রেলগাড়ির আঘাতে। রেলগাড়ি আসতে দেখলে বাজারের দোকানিরা তাদের ভাসমান বাজার তুলে নিয়ে নিরাপদ জায়গায় একটু সরে যান। সব সময় যে সেটা সম্ভব হয় না তা বলাই বাহুল্য। জুরাইন রেললাইন ঘেঁষে নয়, বলা চলে রেললাইনের ওপরই বাজার বসে গেছে। যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। মেয়র চাইলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। ৯ নবেম্বর ২০১৫ [email protected]
×